ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্বতন্ত্র প্রার্থীর মিছিলে বোমা হামলায় আহত চা-দোকানির মৃত্যু 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৪
স্বতন্ত্র প্রার্থীর মিছিলে বোমা হামলায় আহত চা-দোকানির মৃত্যু 

মাদারীপুর: জেলার কালকিনিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিজয় মিছিলে বোমা হামলার ঘটনায় আহত চা দোকানি এমরাত হোসেন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।  

বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

গত সোমবার বোমা হামলায় আহত হন তিনি।  

রাজধানী ঢাকার প্রাইম জেনারেল হাসপাতালের সিইও ডা. গোলাম মোস্তফা জানান, এমরাতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত হয়ে যায়। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করার আগেই অবস্থা খারাপ ছিল। ভোরে ভর্তি করলে দুপুর ২টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

মাদারীপুর জেলার কালকিনির এই ঘটনার বিচার দাবি জানিয়েছেন সদ্য বিজয়ী মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও নিহতের স্বজনরা। অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে এড়াতে এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।

স্থানীয়ার জানায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাদারীপুর-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপকে পরাজিত করে বিজয়ী হন স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম। গত সোমবার সকালে তাহমিনার সমর্থকরা একটি বিজয় মিছিল বের করে। মিছিলটি কালিগঞ্জ থেকে ফাঁসিয়াতলা বাজারে যাবার পথে মিছিলে অতর্কিত হামলা চালায় প্রতিপক্ষ। এ সময় বেশ কয়েকটি বোমা নিক্ষেপ করার অভিযোগ ওঠে। এতে আহত হন অন্তত ১০ জন।  

তাদেরকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় জেলা সদর হাসপাতালে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় দুইজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে। পরে সেখান থেকে বৃহস্পতিবার ভোরে আহত এমারত সরদারকে ভর্তি করা হয় রাজধানীর প্রাইম জেনারেল হাসপাতালে।  

তিনদিন চিকিৎসার পর বৃহস্পতিবার দুপুরে মারা যান এমরাত। নিহত এমারতের ছেলে হাসান সরদার বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে কালকিনি থানায় ২০ জনের নামে একটি মামলা করেছেন। এই ঘটনার বিচার দাবি করেছেন স্বজন ও সদ্য বিজয়ী সংসদ সদস্য তাহমিনা বেগম।

ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপের সমর্থক ও আলীনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাহিদ পারভেজ বলেন, একটি পক্ষ এই বোমা হামলার ঘটনার দোষ আমাদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছে। অথচ আমি বা আমাদের কোনো লোক এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। বিজয় মিছিলে নিজেরাই আনন্দ করার জন্য ককটেল ফোটাতে ফোটাতে এসেছে। পরে নিজেদের ফোটা ককটেলেই এই দুর্ঘটনা ঘটে। আমিও চাই পুলিশ প্রশাসনের সঠিক তদন্ত করে দোষীদের বিচার করুক।

মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য তাহমিনা বেগম বলেন, মিছিলে বোমা হামলা এটি গুরুতর অপরাধ। ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপের লোকজন এর সঙ্গে জড়িত। এই ঘটনার বিচার হওয়া উচিত।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম জানান, বোমা হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, নিহত এমারত সরদার কালকিনির কালিনগর গ্রামের ফরজউদ্দিন সরদারের ছেলে। সংসারে স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে তার।  

মাদারীপুর-৩ আসনে ঈগল প্রতীকে ৯৬ হাজার ৩৩৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম। তিনি কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। অপরদিকে নৌকা প্রতীকে ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ পান ৬১ হাজার ৯৭১ ভোট। পরাজিত এই প্রার্থী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক। যদিও বোমা হামলার ঘটনায় পরস্পরকে দোষারোপ করে আসছেন গোলাপ ও তাহমিনা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৪
এমএস/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।