ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সিকিমে বাঁধে ভাঙন

তিস্তা নদী তীরবর্তী এলাকায় মাইকিং, সতর্কতা জারি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০২৩
তিস্তা নদী তীরবর্তী এলাকায় মাইকিং, সতর্কতা জারি তিস্তা পাড়ে মাইকিং

লালমনিরহাট: তিস্তা নদীর উৎপত্তিস্থল ভারতের সিকিমে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় উজানের ঢেউয়ে তিস্তার বাংলাদেশ অংশে ভয়াবহ বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থা লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনগণকে সতর্ক করতে মাইকিং করা হচ্ছে।

 

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেজে এ সংক্রান্ত সতর্কবার্তা জারি করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যা।  

তবে বিকেল বা সন্ধ্যা নাগাদ লালমনিরহাট অংশে ভয়াবহ পানির চাপ হানা দিতে পারে বলে বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দাবি।  

জানা গেছে, ভারতের সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পর নীলফামারী জেলার কালীগঞ্জ সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে ঐতিহাসিক তিস্তা নদী। যা লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী বন্দর হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের সঙ্গে মিশেছে। নদীটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৩১৫ কিলোমিটার হলেও বাংলাদেশ অংশে রয়েছে প্রায় ১২৫ কিলোমিটার।

গজলডোবায় বাঁধ নির্মাণ করে উজানের প্রতিবেশী দেশ ভারত সরকার একতরফা তিস্তার পানি নিয়ন্ত্রণ করায় বর্ষা শেষেই বাংলাদেশ অংশে তিস্তা মরুভূমিতে পরিণত হয়। বর্ষাকালে বন্যা আর নদী ভাঙনের মুখে পড়ে তিস্তাপাড়ের মানুষ। ভাঙন ও প্রবল স্রোতে ভেসে যায় ফসলি জমি বসতভিটাসহ স্থাপনা। দিশেহারা হয়ে পড়ে নদীপাড়ের মানুষ।

তিস্তা নদীর উজানে ভারতের সিকিমে একটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় তিস্তা নদীতে উজানের ঢেউ বেড়েছে। ফলে সিমিকের ভিটিতে থাকা অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার শঙ্কা করা হচ্ছে। এ ভয়াবহ বন্যার চাপ বাংলাদেশ অংশেও পড়তে পারে। তাই বাংলাদেশ অংশের তিস্তা নদীর তীরবর্তী জনপদকে সরকারিভাবে সতর্কবার্তা দিয়ে নিরাপদে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।  

তিস্তা নদী লালমনিরহাট জেলার দক্ষিণ পাশ দিয়ে পুরো জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা পাড়ে বন্যা দেখা দিলে তারা ৫টি উপজেলায়ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তবে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাতীবান্ধা উপজেলা। তিস্তা পাড়ে বন্যা হলে প্রথমে পাটগ্রাম উপজেলা প্লাবিত হয়। শেষ হয় সদর উপজেলা হয়ে। মূলত ৫টি উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় তিস্তা নদীর বন্যায়।  

আসন্ন ভয়াবহ বন্যা থেকে নিরাপদ স্থানে সতর্ক থাকতে জনগণকে সতর্ক করছে জেলা প্রশাসন। ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সব প্রচার মাধ্যমে তা প্রচার করার আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যা।  

তিস্তা ব্যারেজে বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, দুপুরের পরেই তিস্তা পাড়ে বন্যা দেখা দিতে পারে। তবে কি পরিমাণ পানির চাপ বাড়তে পারে তা বলা যাচ্ছে না। তবে নদীপাড়ের মানুষদের সতর্ক অবস্থানে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা বাংলানিউজকে বলেন, দুপুরের পরে ব্যারেজ এলাকায় তিস্তা নদীর পানি ব্যাপক হারে বাড়তে পারে। বন্যার আশঙ্কায় নদীপাড়ের মানুষদের নিরাপদে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। উজানে ভারতের সিকিমে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় এ সতর্ক বার্তা বলেও জানান তিনি।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যা বাংলানিউজকে বলেন, আসন্ন ভয়াবহ বন্যার ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নদীপাড়ে মাইকিং করা হচ্ছে, বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রগুলো খুলে রাখা হয়েছে। এ বন্যা মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।