ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নারী দর্শনার্থীকে কুপ্রস্তাবের অভিযোগ কারাধ্যক্ষের নামে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১১ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২৩
নারী দর্শনার্থীকে কুপ্রস্তাবের অভিযোগ কারাধ্যক্ষের নামে ঝালকাঠি জেলা কারাগার ও কারাধ্যক্ষ মো. আক্তার হোসেন শেখ

ঝালকাঠি: ঝালকাঠি জেলা কারাগারের কারাধ্যক্ষ (জেলার) মো. আক্তার হোসেন শেখের বিরুদ্ধে নারী দর্শনার্থীকে কুপ্রস্তাব ও অশালীন আচরণের অভিযোগে কারা মহাপরিদর্শকের কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।  

তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনেন ওই কারাগারে হাজতবাসে থাকা মাদক মামলার আসামি মামুনুর রশিদের স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার (২৪)।

 

কারা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বরিশালের ডিআইজি প্রিজন ও ঝালকাঠির জেলা প্রশাসকসহ বৃহস্পতিবার বিভিন্ন দপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।

জানা গেছে, সুমাইয়ার স্বামী মামুনুর রশীদ গত ২৯ জুলাই থেকে ঝালকাঠি জেলা কারাগারে হাজতবাসে আছেন। সুমাইয়া তার স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে বার বার জেল গেটে গেলেও ব্যর্থ হন। পরে জেলের এক কর্মচারীর পরামর্শে জেলার আক্তার হোসেন শেখের সরকারি নাম্বারে গত ৩০ জুলাই ফোন করেন এবং স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে ব্যবস্থা করে দিতে বলেন।  

সুমাইয়ার অভিযোগ, পরবর্তীতে আসামি মামুনের সঙ্গে ফোনে কথা বলার ব্যবস্থা করে দিতে সুমাইয়ার ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বার চেয়ে নেন জেলার। এই সুযোগে সুমাইয়াকে নিয়মিত ফোন করে কথা বলতে থাকেন জেলার। এরপর স্বামী মামুনের সঙ্গে দেখা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে সুমাইয়ার হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে ভিডিও কল দিয়ে অশালীন কথাবার্তা বলেন এবং অনৈতিক প্রস্তাব দেন। একপর্যায়ে সুমাইয়ার নলছিটির বাড়িতে গিয়ে একসাথে রাত কাটানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন কারাধ্যক্ষ।  

সুমাইয়া এসকল অনৈতিক কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে আর তার স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি এবং তার স্বামী মামুনকে জেলের ভেতরে শাস্তি দেবে বলে ভয়ভীতি দেখান কারাধ্যক্ষ।  

সুমাইয়া বলেন, আমি তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আমার স্বামীর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেননি কারাধ্যক্ষ আক্তার হোসেন। আমি আমার দুটি বাচ্চা নিয়ে জেল গেটে স্বামীর সঙ্গে দেখা করার জন্য দিনের পর দিন দাঁড়িয়ে থেকেছি। ওনার কুপ্রস্তাবের সকল রেকর্ড আমার কাছে আছে। আমি বুধবার আবার জেল গেটে স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে কারারক্ষী দুই হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। তাকে টাকা দিতে না পারায় আমাকে স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। আমার বাচ্চারা ওদের বাবাকে দেখতে না পেয়ে দিনরাত শুধু কান্নাকাটি করছে। আমার অসহায়ত্ব ও বিপদের সুযোগ নিয়ে জেলার আক্তার হোসেন আমার ইজ্জত নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে ঝালকাঠি জেলা কারাগারের জেলার মো. আক্তার হোসেন শেখ বলেন, অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট। কারাগারের নিয়মানুযায়ী ১৫দিন পর প্রত্যেকে একবার করে সাক্ষাৎ পাবেন। কিন্তু স্বামীর সঙ্গে প্রতিদিন সাক্ষাৎ করিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন সুমাইয়া। তিনি বাড়তি সুযোগ না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ এনেছেন।  

ঝালকাঠির কারা তত্ত্বাবধায়ক (জেল সুপার) ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এনডিসি মং এছেন বলেন, এক দর্শনার্থীকে তার স্বামীর সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ায় জেলারের বিরুদ্ধে কারা অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসক বরাবর এক নারী অভিযোগ পাঠিয়েছেন বলে শুনেছি। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২৩
এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।