ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নেত্রকোনায় ঝর্না হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট     | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২৩
নেত্রকোনায় ঝর্না হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

নেত্রকোনা: নেত্রকোনায় ঝর্নার হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী।  

বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে জেলা সদর উপজেলার বাংলা বাজারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এতে সর্বস্তরের মানুষসহ নিহতের সন্তান ও স্বামী অংশ নিয়ে ন্যায় বিচারের দাবি তুলে ধরেন।

জানা গেছে, জেলা পূর্বধলা উপজেলার ধলামূলগাঁও ইউনিয়নের আগমারকেণ্ডা গ্রামের খোয়াজ খাঁর সঙ্গে তার চাচাত ভাই আলম খানের নানা বিষয় নিয়ে বিরোধ চলছিল। গত ২৬ মার্চ খোয়াজ খাঁ পারিবারিক বিষয় নিয়ে তার মেয়ে তামান্নাকে মারধর করার সময় ফিরাতে গিয়ে স্ত্রী ঝর্না আক্তার মারধরের শিকার হন। পরে ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে ২৭ মার্চ রাতে দু’পক্ষে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে খোয়াজ খাঁর লোকজন ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঝর্না, ছেলে তামিম, ভাই পাপন, ভাইয়ের ছেলে মাহাবুব ও সাকিবকে পিটিয়ে এবং কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে প্রতিপক্ষের লোকজন রাত ১১টার দিকে ফের আহতদের ওপর হামলা চালিয়ে ঝর্নাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন। প্রথমে তাকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঝর্না মারা যান।  

এ ঘটনায় নিহতের ভাই নেত্রকোনা সদর উপজেলার সিংহের বাংলা গ্রামের রুহুল আমিন বাদী হয়ে পূর্বধলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মৃত্যুর পর ঝর্নার মরদেহ বাবার বাড়িতে দাফন করা হয়। এরপর ফিরোজ খাঁকে টাঙ্গাইল থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) সদস্যরা।  

মামলার অন্যতম আসামি এএসআই ফিরোজ খাঁ পুলিশের এন্টি টেরোরিজম ইউনিট ময়মনসিংহে কর্মরত ছিলেন। কর্মস্থল থেকে ছুটি ছাড়াই বাড়ি এসে তিনি বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। তিনি বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছেন।  

মানববন্ধনে বক্তারা মামলার চার্জশিট থেকে অন্যতম আসামি পুলিশ সদস্য ফিরোজ খাঁকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করছে -এমন অভিযোগ করে বলেছেন, পুলিশের আন্তরিকতার অভাব, দ্রুত তদন্তকাজ শেষ না করাসহ নানা কারণে এই মামলায় ন্যায় বিচার না পাওয়ায় আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। মামলায় জামিনপ্রাপ্ত আসামিরা বাদীপক্ষকে ধারাবাহিকভাবে হুমকি দিলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লিখিত নির্দেশনার পরও ঝর্নার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়নি। এমনকি জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো খবরও নেওয়া হয়নি।  

মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে মায়ের হত্যাকারীদের নাম উল্লেখ করে তাদের ফাঁসির দাবি জানিয়ে ঝর্নার অবুঝ শিশুরা। এলাকাবাসী বলছে, মামলায় ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ প্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।

নিহতের পরিবারের দাবি, বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে মামলার চার্জশিট দিতে হবে। তাহলেই কেবল সব অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব। ন্যায় বিচারের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ কাজ করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

এ সময় মানববন্ধনে উপস্থিত এলাকাবাসীর মধ্যে বক্তব্য দেন, নিহতের স্বামী আলম খাঁ, নিহতের ভাই নুরুল আমিন, বাংলা ইউপি সদস্য হাফিজা আক্তার, উজ্জ্বল নাগ, হাজী মো. আব্দুল জলিল, রানা সরকারসহ অন্যান্যরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।