ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

প্রসূতির মৃত্যু, চিকিৎসকসহ ৪ জনের নামে মামলার নির্দেশ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৪ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০২৩
প্রসূতির মৃত্যু, চিকিৎসকসহ ৪ জনের নামে মামলার নির্দেশ

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় ফাতেমা বেগম নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগে দুই চিকিৎসকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা নিতে সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

ভিকটিম ফাতেমার স্বামী মো. মনর আলী (৪৩) বাদি হয়ে রোববার (৩০ জুলাই) দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি অঞ্চল রামগঞ্জ আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।

 

আদালতের বিচারক মো. আনোয়ার হোসেন বিষয়টি আমলে নিয়ে রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নিয়মিত মামলা রুজু করার নির্দেশনা দিয়েছেন।  

অভিযুক্তরা হলেন- উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. গুনময় পোদ্দার (৪৫) ও উপজেলার উপশম জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. নাজমুল হক (৫০) এবং হাসপাতালের চেয়ারম্যান মায়া বেগম (৪০) ও ম্যানেজার জসিম উদ্দিন (৪০)। ।  

বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. রেহানুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসকদের দায়িত্ব অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। এতে দায়িত্বরত চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়ী। পরে বিষয়টি আমরা আদালতের নজরে আনি।  

মামলার বাদী সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ জুলাই দুপুরে জেলার রামগঞ্জ উপজেলার পানপাড়া এলাকার দক্ষিণ হাজীপুর গ্রামের বাসিন্দা অটোরিকশা চালক মনর আলী তার গর্ভবতী স্ত্রী ফাতেমাকে উপজেলার বাইপাস সড়কের উপশম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান।  

এসময় হাসপাতালের ম্যানেজার জসিম তাকে জানায়, তার স্ত্রীকে অস্ত্রোপচার (সিজার) করাতে হবে। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ফাতেমাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অ্যানেস্থেসিয়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছিলেন, রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. গুনময় পোদ্দার এবং অপারেশন করান ওই হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. নাজমুল হক।  

অপারেশন থিয়েটারের ভেতর থেকে ফাতেমার চিৎকার শুনতে পায় বাহিরে থাকা ফাতেমার স্বামীসহ স্বজনেরা। বিকেল সাড়ে ৬টার দিকে ফাতেমাকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করা হয়। তিনি একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। এসময় তার হাত-পা কাঁপছিল।  

এ সময় ফাতেমা তার স্বামীকে জানায়- তার কলিজা ছিঁড়ে গেছে, পেটে প্রচণ্ড ব্যথা হচ্ছে। তাকে অজ্ঞান না করেই পেটে ছুরি চালানো হয়। এতে তিনি চটপট করলে নার্সরা তার হাত-প চেপে ধরে।  

এদিকে, হাসপাতালের চিকিৎসক নাজমুল অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হয়ে তড়িঘড়ি করে রোগীকে কুমিল্লার একটি হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। কুমিল্লা নেওয়ার পথেই রাত পৌনে ৮টার দিকে মারা যান ফাতেমা।  

ফাতেমার স্বামী মনর আলীর অভিযোগ, অপারেশনের আগে অজ্ঞান না করার কারণেই ফাতেমার মৃত্যু হয়েছে। এতে চিকিৎসকদের অবহেলা ছিল।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ও মামলার দ্বিতীয় আসামি ডা. গুনময় পোদ্দার বলেন, আমি অ্যানেস্থেসিয়া করেছি। এরপর অপারেশন হয়েছে। রোগীকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় মারা গেছে। অপারেশন টেবিলে মারা যায়নি। তিনি দাবি করেন, অ্যানেস্থেসিয়া জনিত কোনো সমস্যা হলে সেটা অপারেশন টেবিলেই হতো।  

রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক বলেন, আদালতের আদেশের কপি থানায় আসেনি। কপি হাতে পেলে নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৩ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।