ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বনবিভাগের স্টেশন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সিমেন্ট চুরির অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪২ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২৩
বনবিভাগের স্টেশন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সিমেন্ট চুরির অভিযোগ

সাতক্ষীরা: পশ্চিম বনবিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের কৈখালী স্টেশন কর্মকর্তা সাদ আল জামিরের বিরুদ্ধে টেংরাখালি বন টহল ফাঁড়ির নির্মাণাধীন ভবনের সিমেন্ট চুরি করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে সিমেন্ট চুরি করে বিক্রয়ের কাজের ব্যবহৃত দুইটি ট্রলারসহ ১০০ ব্যাগ সিমেন্ট আটক করেছে স্থানীয় জনতা।

বিক্রির পর সোমবার (১০ জুলাই) সন্ধ্যায় শ্যামনগর উপজেলার হরিনগর বাজারের মেসার্স বিসমিল্লাহ ট্রেডার্সে সিমেন্টগুলো হস্তান্তরের সময় টের পেয়ে থানায় খবর দেন স্থানীয় লোকজন।

জানা গেছে, টেংরাখালি বন টহল ফাঁড়ি থেকে দুটি ট্রলারে করে ১০০ ব্যাগ সিমেন্ট নিয়ে বনবিভাগের সিপিজির সদস্য ইউনুচ আলী হরিনগর বাজারের নৌ ঘাটে রাখেন। সেখান থেকে হরিনগর বাজারের মো. সাইফুল্লাহ টুটুলের মেসার্স বিসমিল্লাহ ট্রেডার্স নামের দোকানে শ্রমিক দিয়ে সিমেন্টের বস্তাগুলো নামানো হয়। এসময় স্থানীয়রা সিমেন্টগুলো জব্দ করে শ্যামনগর থানা পুলিশকে খবর দেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের অভিযোগ, কৈখালী স্টেশনের আওতাধীন টেংরাখালি বন টহল ফাঁড়ির নতুন ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। এ কাজ দেখভালের দায়িত্ব পান কৈখালী স্টেশন কর্মকর্তা সাদ আল জামির। তিনি চুরি করে তার স্টেশনের একটি ট্রলার ও ভাড়া করা একটি ট্রলারে করে ১০০ ব্যাগ সিমেন্ট হরিনগর বাজারের মেসার্স বিসমিল্লাহ ট্রেডার্সে বিক্রির চুক্তি করেন।

এদিকে খবর পেয়ে পুলিশ আসার আগেই বনবিভাগের ট্রলালের মাঝি ও সিপিজির সদস্য ইউনুচ আলী ট্রলার রেখে কৌশলে পালিয়ে যান।

এ বিষয়ে সিপিজির সদস্য ইউনুচ আলী বলেন, কৈখালী স্টেশন কর্মকর্তা সাদ আল জামিরের নির্দেশে টেংরাখালি ফাঁড়ি থেকে ১০০ ব্যাগ সিমেন্ট হরিনগর বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে গিয়েছিলাম। এছাড়া আমি আর কিছু জানি না।

সিমেন্ট বহনকারী শ্রমিকরা জানান, সিপিজির সদস্য আমাদের ঠিক করেন, আমাদের বলা হয়েছিল টেংরাখালি ফাঁড়ি থেকে ১০০ ব্যাগ সিমেন্ট হরিনগর বাজারে নামিয়ে দিতে।

মেসার্স বিসমিল্লাহ ট্রেডার্সের মালিক মো. সাইফুল্লাহ টুটুল বলেন, ভেটখালি বাজারের ব্যবসায়ী ইয়াছিন আমাকে এ সিমেন্ট ঠিক করে দেন। আমি প্রতি ব্যাগ সিমেন্ট ৫৩০ দরে কিনে নিচ্ছি। কারা নিয়ে আসছে, আমি জানি না। তবে ইয়াছিন আমাকে বলেছিলেন, ১০০ ব্যাগ সিমেন্ট বোটে করে নিয়ে তোমার দোকানে তুলে দিচ্ছে। এছাড়া আমি আর কিছু জানি না।

কৈখালী স্টেশন কর্মকর্তা সাদ আল জামির বলেন, এসিএফ স্যার কাজটি আমাকে দেখার দায়িত্ব দিয়েছেন। ফাইভ রিং সিমেন্টের মান ভালো না হওয়ায় পরিবর্তন করতে পাঠিয়েছিলাম।

কিন্তু সিমেন্ট বিক্রি করা হচ্ছে কেন জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

সাতক্ষীরা রেঞ্জর সহকারী বন সংরক্ষক কে এম ইকবল হোসেন চৌধুরী বলেন, সিমেন্ট পরিবর্তন করা বা বিক্রি করার বিষয়ে আমি জানি না।

বনবিভাগের কোনো সদস্য এ ধরনের কাজ করতে পারেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা করবে ঠিকাদার। আমাদের কোনো স্টাফ করতে পারেন না। যদি এ ধরনের কাজ কেউ করে থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া কৈখালী স্টেশন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগও রয়েছে।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, খবর পেয়ে এসআই সেলিম রেজাকে পাঠিয়ে মাল জব্দ করা হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩১ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।