ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্বল্প সময়ে অধিক আয় মৌসুমি কসাইদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৯ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২৩
স্বল্প সময়ে অধিক আয় মৌসুমি কসাইদের

ঢাকা: প্রতি বছর কোরবানির ঈদ এলেই চাহিদা বাড়ে কসাইদের। কোরবানির পশু জবাই থেকে শুরু করে চামড়া ছাড়ানো, এমনকি মাংস কাটাকাটির পুরোটাই সিদ্ধ হস্তে করেন এই পেশার সঙ্গে জড়িতরা।

স্বল্প সময়ে আয়ও হয় বেশি। তাইতো পবিত্র ঈদুল আজহার সময় পেশাদার কসাইয়ের পাশাপাশি মৌসুমি কসাইয়ের কাজ করেন অনেকে।

বিভিন্ন কসাইদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একটি পশু জবাই থেকে শুরু করে চামড়া ছাড়ানো ও মাংস কাটাকাটি করতে অন্তত ৩ থেকে ৫ জন কসাইয়ের একটি দলের প্রয়োজন হয়। কিন্তু কোরবানির ঈদের সময় ব্যাপক পরিমাণ পশু কোরবানি হওয়ায় শুধু পেশাদার কসাই দিয়ে এই চাহিদা মেটানো সম্ভব হয় না। তাই এই সময় বিভিন্ন পেশার পাশাপাশি মৌসুমি কসাইয়ের কাজ করেন।

আরও জানা যায়, একটি পশু প্রক্রিয়াজাত করতে কসাইয়ের দল ওই পশুর দামে ১০ শতাংশ টাকা নেন। পাশাপাশি গড়ে প্রত্যেকে এক থেকে দুই কেজি করে মাংস পান। অনেকে আবার কোরবানির পশুর উচ্ছিষ্ট অংশ (মাথা, লেজ, পায়ের হাড়, জিহ্বা, ভুঁড়ি) কসাইদের দিয়ে দেন। ফলে কোরবানির ঈদে স্বল্প সময়ে অন্যান্য পেশার তুলনায় অধিক লাভ হয় মৌসুমি কসাইদের।

শুক্রবার (৩০ জুন) ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিনেও রাজধানীর অনেক বাড়িতে পশু কোরবানি দিতে দেখা যায়। মগবাজার এলাকার নয়াটোলার একটি বাড়িতে কোরবানির গরু প্রক্রিয়াজাত করছিলেন মৌসুমি কসাইদের একটি দল। সেখানে কথা হয় কেরানিগঞ্জের বাসিন্দা মো. জাহাঙ্গীরের (৪০) সঙ্গে। তিনি পেশায় একজন অটোরিকশা চালক। শুধু কোরবানির ঈদের সময় মৌসুমি কসাইয়ের কাজ করেন তিনি।

জাহাঙ্গীর বাংলানিউজকে বলেন, প্রতি বছর কোরবানির ঈদ এলে কসাইয়ের কাজ করি। এই কাজ করতে ভালো যেমন লাগে তেমনি ভালো আয়ও হয়। তাই প্রতি বছর এই সময় আমরা দল বেধে এই কাজ করি। এছাড়া আমাদের সামর্থ্য না থাকায় কোরবানি দিতে পারি না। কিন্তু কসাইয়ের কাজ করলে কোরবানির মাংস পাওয়া যায়। এতে পরিবারের লোকজন অন্তত কোরবানির মাংস খেতে পারে।

কেরানীগঞ্জের জিনজিরায় স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে, মা ও ভাইকে নিয়ে থাকেন জাহাঙ্গীর। এক সময় সরিষার তেল ও মশার কয়েলের ব্যবসা করতেন তিনি। কিন্তু করোনা সময় লোকসানে সেই ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হয়। এরপর থেকে জিনজিরাতেই অটোরিকশা চালানোর কাজ করেন তিনি।

জাহাঙ্গীর আরও বলেন, আমরা ১৬ জনের একটি দল গতকাল ঈদের দিন এবং আজকে কসাইয়ের কাজ করছি। এই দুই দিনে মোট ১৩টি গরু কাটাকাটি করছি। একেকজনের গড়ে ৬-৭ হাজার টাকা করে আয় হয়েছে। সঙ্গে কোরবানির মাংস পেয়েছি ৩-৪ কেজি করে।

একই দলে মৌসুমি কসাইয়ের কাজ করছিলেন মো. ফারুক (৩৪)। পেশায় তিনি একজন লেগুনা চালক। তিনি বলেন, ঈদের সময় ঢাকায় মানুষজন থাকে না। লেগুনা চালিয়ে তেমন আয়ও হয় না। তাই কসাইয়ের কাজ করি। এতে কাজও করা হয়, আয়ও ভালো হয়। এছাড়া কোরবানির মাংসও পাওয়া যায়।

মো. মনির নামের আরেক কসাই বলেন, আমরা তো কোরবানি দিতে পারি না। আবার মানুষের কাছে মাংসও চাইতে পারি না। কসাইয়ের কাজ করলে এমনিতেই মাংস পাওয়া যায়। আর বাড়তি আয় তো রয়েছেই। ঈদের থেকে আজ পর্যন্ত আড়াই হাজার টাকা আয় হয়েছে। মাংস পেয়েছি চার কেজির মতো।

বাংলাদেশ সময়:১৫২৮ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২৩
এসসি/এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।