ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রোহিঙ্গা সহায়তা: জাপান-ইউএনএইচসিআরের ২.৯ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি 

ডিপ্লোম্যাটিক  করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৬ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২৩
রোহিঙ্গা সহায়তা: জাপান-ইউএনএইচসিআরের ২.৯ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি 

ঢাকা: জাপান সরকার ও জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সহায়তা অব্যাহত রাখতে প্রায় ২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি চুক্তি সই করেছে। যা ৩৯১ মিলিয়ন জাপানিজ ইয়েন।



বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) ইউএনএইচসিআরের ঢাকাস্থ কার্যালয়ে এ চুক্তিতে সই করেন ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশের প্রতিনিধি ইয়োহানেস ভন ডার ক্লাও এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি।

জাপানের এ অনুদানে ইউএনএইচসিআর কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় ও বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী যেমন পাটি, কম্বল ও সাবান বিতরণ করে যেতে সক্ষম হবে। এছাড়া শরণার্থীদের ঘর এবং বিভিন্ন অবকাঠামো যেমন ড্রেন, সেতু, হাঁটার পথ, সিঁড়ি, পাহাড়ি ঢাল ধরে রাখার দেয়াল মেরামত ও মজবুত করা হবে।

ইয়োহানেস ভন ডার ক্লাও বলেন, জাপানের কাছ থেকে সহায়তাটি এল এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে যখন রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আবারও তাদের জীবন পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে সাম্প্রতিক কিছু অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ও ঘূর্ণিঝড় মোকায় ক্যাম্পের বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর। এ অনুদান আমাদের সাহায্য করবে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে ও ভবিষ্যত দুর্যোগের ঝুঁকি থেকে শরণার্থীদের রক্ষা করতে। ক্যাম্পে বিশেষ করে নারী ও শিশুরা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

কক্সবাজারের পাশাপাশি ভাষানচরে জাপানের অনুদানে শরণার্থীদের অংশগ্রহণে চলমান কিছু প্রকল্প সহায়তা পাবে, এবং শরণার্থীদের সুরক্ষা বাড়াতে কিছু কাজ করা হবে, যেমন পরিসেবাগুলোতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রবেশগম্যতা।

জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, জাপান সরকারের সহায়তা রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগণ উভয়ের জীবনমান উন্নয়নে সহায়ক হবে।  
তিনি বলেন, আমরা ইউএনএইচসিআরকে ২ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার দিতে পেরে আনন্দিত। আশা করি, এ সহায়তা আশ্রয় নির্মাণ এবং পুনর্বাসন, এবং সাইট রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে অগ্নিপ্রতিরোধসহ শরণার্থীদের সুরক্ষাকে শক্তিশালী করবে।

জাপান মিয়ানমারে শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনে সহায়তাসহ টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যাবে এবং শরণার্থী ও স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য ইউএনএইচসিআরের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে সহযোগিতা করবে।

২০১৭ সালের আগস্টে শরণার্থী সংকট শুরুর সময় থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য মানবিক কার্যক্রমের অটল সমর্থক হিসেবে আছে জাপান। এ নতুন অর্থায়নের মাধ্যমে ইউএনএইচসিআর ও জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থাগুলোর পাশাপাশি বাংলাদেশে কর্মরত এনজিওগুলোকে জাপান এখন পর্যন্ত ২শ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি অনুদান দিয়েছে।

এ চুক্তির ঘোষণা এল ইউএনএইচসিআরের ডেপুটি হাইকমিশনার কেলি ক্লেমেন্টসের বাংলাদেশ সফরের ঠিক পরপরই। যিনি সফরকালে শরণার্থীদের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের প্রয়োজনীয় মানবিক ও জীবিকামূলক চাহিদার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। তহবিলের অভাবে শরণার্থীদের জন্য খাদ্যসহ জীবন রক্ষাকারী সরবরাহ কমে গিয়েছে।

কক্সবাজারে ও ভাষানচরে রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং তাদের আশ্রয়দানকারী স্থানীয় বাংলাদেশিসহ প্রায় ১ দশমিক ৫ মিলিয়ন মানুষকে সহায়তার জন্য মানবিক সংস্থাগুলো এবার ৮৭৬ মিলিয়ন ডলারের তহবিলের আবেদন করেছে।  

চলতি বছরের জুন পর্যন্ত, জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানটি প্রায় ২৮ শতাংশ অর্থায়ন পেয়েছে। একটি বৃহদাকার মানবিক বিপর্যয় এড়াতে স্থিতিশীল ও টেকসই অর্থায়নের প্রয়োজন।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৫ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২৩
টিআর/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।