ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

চাঁদপুরের গ্রামে লোডশেডিং হচ্ছে ১২-১৬ ঘণ্টা

মোহাম্মদ মাসুদ আলম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০০ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০২৩
চাঁদপুরের গ্রামে লোডশেডিং হচ্ছে ১২-১৬ ঘণ্টা

চাঁদপুর: চাঁদপুর জেলা সদরে বিদ্যুতের লোডশেডিং গত প্রায় দেড় মাস ধরেই চলছে। তবে সপ্তাহখানেক হলো তা অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে।

  

গ্রাম আর শহর এলাকার অবস্থা প্রায় একই।  স্বাভাবিক সময়ে শহরে লোডশেডিং তেমন ছিল না। কিন্তু গ্রামে একাধিকবার লোডশেডিং দেওয়া হতো।  

এখন শহরে গড়ে ১০-১২ ঘণ্টা এবং গ্রামে ১২-১৬ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। ফলে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।  

এদিকে বর্তমানে সারা দেশে তীব্র তাপদাহ থাকায় প্রচণ্ড গরম পড়েছে। এ অবস্থায় লোডশেডিংয়ে বৈদ্যুতিক পাখা বন্ধ থাকায় মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।  রাতেও একাধিকবার লোডশেডিং হয়। ফলে গরম আর ঘুম কম হওয়ায় মানুষ স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।  

মঙ্গলবার চাঁদপুর শহরের চেয়ারম্যানঘাট এলাকার বাসিন্দা শাহাদাত হোসেন জানান, গতকাল রাত থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত ছয়-সাত বার লোডশেডিং হয়েছে। গরমে ঘেমে ঠাণ্ডা লেগে গেছে। কথা বলতেও সমস্যা হচ্ছে। দিনে গড়ে ১০-১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। এক ঘণ্টা পর পর লোডশেডিং দেওয়া হয়।

একই এলাকার বাসিন্দা মনিরুজ্জামান বলেন, গরমে আমার এক বছর বয়সী মেয়ে ফাইজা খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। রাতে বিদ্যুৎ চলে গেলে চিৎকার করতে থাকে। বিদ্যুৎ এলে ঘুমায়, আবার বিদ্যুৎ চলে গেলে জেগে ওঠে।

শহরের পুরান বাজারের বাসিন্দা মিজানু রহমান বলেন, গড়ে দিন ও রাতে ১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে, ১২ ঘণ্টা থাকে না।

মঙ্গলবার চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রহুল আমিন হাওলাদার জানান, গতকাল রাতে সন্ধ্যার পর থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না। ভোর ৪টার পরে বিদ্যুৎ আসে। সারারাত ঘুমাতে পারিনি। সকালে ঘুমিয়েছি। এ এলাকায় গড়ে ১৪-১৬ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়। ঘরের ইলেকট্রনিক্স সব জিনিসই এখন ব্যবহার বন্ধ। ফ্রিজের খাবারও নষ্ট হয়ে যায়।

মতলব উত্তর উপজেলার সুজাতপুর এলাকার বাসিন্দা আরাফাত জানান, তাদের এলাকায় দিন ও রাতে গড়ে এখন ছয়-সাত ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। বাকি সময় লোডশেডিং থাকে।

কচুয়া উপজেলা সদরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মহসিন হোসাইন জানান, উপজেলা সদরে দিন ও রাতে গড়ে ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। তবে গ্রামাঞ্চলে আরও কম থাকে।

হাইমচর উপজেলার মহজমপুর গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো. মহসিন মিয়া জানান, গত এক সপ্তাহ আগে দিন ও রাতে গড়ে ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাওয়া গেছে। কিন্তু দুদিন ধরে ছয় থেকে সাত ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ থাকে না।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা সদরের বাসিন্দা প্রবীর চক্রবর্তী জানান, পৌর এলাকায় বিদ্যুৎ গড়ে ১২ ঘণ্টা থাকে। তবে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং প্রায় ১৫-১৭ ঘণ্টা হয়।

চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক শাহ মুহাম্মদ শোয়েব জানান, মঙ্গলবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত চাঁদপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮.১ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া আপেক্ষিক আর্দ্রতা ০৭৬%।  

চলমান এমন মৃদু, মাঝারি এবং তীব্র তাপ প্রবাহ আরও পাঁচ-ছয়দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানানো হয়।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের জেলা সদরে অর্থাৎ আমাদের এরিয়া পর্যন্ত দিন ও রাতে বিদ্যুতের চাহিদা ২৫-২৬ মেগাওয়াট। এখন গড়ে পাচ্ছি ১৪-১৬ মেগাওয়াট। তবে প্রতি ঘণ্টায় বিদ্যুৎ প্রাপ্তির হার পরিবর্তন হয়। মূলত জাতীয় গ্রিড থেকে যেভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশনা আসে, সেভাবেই আমাদের লোডশেডিং দিতে হয়। নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৮ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।