ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রাজধানীতে শেষ রাতে চলাচলকারীদের টার্গেট করে ডাকাতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪০ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০২৩
রাজধানীতে শেষ রাতে চলাচলকারীদের টার্গেট করে ডাকাতি

ঢাকা: রাজধানীতে শেষ রাতে চলাচলকারীদের টার্গেট করে করতো ডাকাতি। এরকম ডাকাত দলের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

চুরি করা একটি পিকআপভ্যান নিয়ে শহরের রাস্তায় ঘুরে ঘুরে টার্গেট ব্যক্তিদের স্বর্ণালংকার, মোবাইল, টাকা ও ব্যাগ ছিনিয়ে স্বল্প সময়ের মধ্যেই পালিয়ে যেত তারা।

সোমবার (১৫ মে) রাজধানীর মহাখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পল্টন মডেল থানা পুলিশ।  

গ্রেপ্তাররা হলেন- সোহেল (৩০), আক্তার ওরফে সোহরাব (৩২), আবির হোসেন ওরফে রাসেল (২৫), মো. রনির (২৮)।  

এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র, পিকআপ ও লুন্ঠিত টাকা এবং ৪টি স্মার্টফোন, ৩টি বাটনফোন জব্দ করা হয়।  

গত ১২ মে ভোরে এই ডাকাত চক্রের খপ্পরে পড়েন পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) একজন নারী কনস্টেবল। একই রাতে ধানমন্ডি এলাকায় একইভাবে আরেকটি ডাকাতি করে করে তারা। এছাড়া, গত ১৩ মে তেজগাঁও ও বনানী থানা এলাকায় একইভাবে আরও দুইটি ডাকাতির ঘটনা ঘটে।

চাঞ্চল্যকর একটি ডাকাতির মামলা তদন্ত করতে গিয়ে প্রায় শতাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এই দুর্ধর্ষ ডাকাত চক্রটিকে শনাক্ত করে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৬ মে) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম খান।  

তিনি বলেন, বেশকিছু দিন ধরে এই ডাকাত চক্রটটি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পিকআপ নিয়ে ঘুরে ঘুরে ডকাতি করে আসছিল। ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত পিকআপ ভ্যানটিও তারা ছিনতাই করে। তারা ডাকাতির পর দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করতো এবং এসব ঘটনায় অনেকেই থানায় অভিযোগ না করার কারণে তারা নির্বিঘ্নে ডাকাতি করে আসছিল।

তবে ডাকাতদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ডাকাতি, দস্যুতা, চুরি ও মাদকের মামলা রয়েছে। জামিনে বেরিয়ে এসে তারা আবারো একই কাজে লিপ্ত হতো।

পুলিশ সদস্য ডাকাতের কবলে পড়ার ঘটনা বর্ণনা দিয়ে ডিসি বলেন, গত ১২ মে ভোরে এসবির নারী কনস্টেবল নার্গিস আক্তার (৩৩) রিকশাযোগে ভিভিআইপি ডিউটির উদ্দেশে অফিস যাওয়ার পথে রাজারবাগ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সামনের মোড়ে পৌঁছামাত্র পেছন থেকে আসা একটি হলুদ ও নীল রংয়ের পিকআপ তার রিকশাকে চাপ দেয়।  

পিকআপ গাড়ির পেছন থেকে দুজন অজ্ঞাতনামা লোক নেমে একজন তার হাত ধরে এবং অপরজন গলায় চাকু ধরে। কনস্টেবলকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তার গলায় থাকা ১০ আনার স্বর্ণের একটি চেইন ও হাতে থাকা ভ্যানেটি ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। ব্যাগের ভেতরে নগদ ৫ হাজার টাকা, ৪৫ হাজার টাকার একটি শাওমী নোট-৮ মোবাইল ফোন, একটি বাটন স্যামসাং মোবাইল ফোন ও এসবির আইডি কার্ড জোর করে ছিনিয়ে নিয়ে পিকআপটি শাহজাহানপুরের দিকে চলে যায়। পরে ভুক্তভোগী কনস্টেবল পল্টন মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

এরই প্রেক্ষিতে মতিঝিল জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. রওশানুল হক সৈকতের নেতৃত্বে পল্টন মডেল থানার একটি বিশেষ টিম ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মহাখালী থেকে ঘটনায় সঙ্গে জড়িত থাকা  ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি বলেন, তারা পিকআপ গাড়িটি গত ৫-৬ দিন আগে ছিনতাই করে নিজেদের দখলে নিয়েছে। ছিনতাই করা পিকআপ নিয়ে তারা রাতের বেলায় চলাচলরত পথচারী/রিকশার যাত্রীদের সুবিধাজনক স্থানে গতিরোধ করে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ডাকাতি করে আসছিল। গত ১২ মে মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় একটি এবং গত ১৩ মে তেজগাঁও ও বনানী থানা এলাকায় একইভাবে দুইটি ডাকাতি করেছে।

গ্রেপ্তার সোহেলের বিরুদ্ধে ২টি, আক্তার ওরফে সোহরাবের বিরুদ্ধে ৬টি, আমির হোসেন ওরফে রাসেলের বিরুদ্ধে ৫টি, মো. রনির বিরুদ্ধে ৮টি মামলা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৮ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০২৩
পিএম/ এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।