ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সোনাগাজীতে ৩০ শতাংশ টিউবওয়েলে আর্সেনিক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০২৩
সোনাগাজীতে ৩০ শতাংশ টিউবওয়েলে আর্সেনিক

ফেনী: ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার টিউবওয়েলগুলোতে আর্সেনিক নিয়ে একটি জরিপ চালায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর। এতে  উঠে এসেছে আর্সেনিকের ভয়াবহতা।

 

উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের ২২ হাজার ৫১টি টিউবওয়েলের পানিতে আর্সেনিক পরীক্ষা করা হয়। যার মধ্যে ৬ হাজার ৫৮৪টি টিউবওয়েলে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।  

এসব টিউবওয়েলের পানি ব্যবহার না করতে জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পানি সরবারাহে আর্সেনিক ঝুঁকি নিরসন প্রকল্পের আওতায় জেন্ডার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সোসাইটির সহযোগিতায় গত বছরের ১২ডিসেম্বর সোনাগাজীতে শুরু হয় আর্সেনিক টেষ্ট কার্যক্রম। উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।  

এ কার্যক্রমে ৯টি ইউনিয়নে ২৭জন পুরুষ ও ২৭জন নারীসহ মোট ৫৪ জন টেস্টার অংশগ্রহণ করেন। টেস্টারা গত ৪ মাস ধরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিউবওয়েলের পানি পরীক্ষা করেন। প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে আড়াই হাজার টিউবওয়েলের নমুনা পানি সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।  

সোনাগাজী উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে প্রায় ৫০-৫৫ হাজার গভীর-অগভীর টিউবওয়েল রয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত ২২ হাজার ৫১টি টিউবওয়েলের পানি পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬ হাজার ৫৮৪টি টিউবওয়েলে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক মিলেছে।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য সহকারী প্রকৌশলী মো. আবু সায়েম বলেন, সোনাগাজী উপজেলার ৩০ শতাংশ টিউবওয়েলে আর্সেনিক পাওয়া গেছে। আর্সেনিকমুক্ত টিউবওয়েলে সবুজ দাগ ও আর্সেনিকযুক্ত টিউবওয়েলগুলোতে লাল দাগ দেওয়া হয়েছে। আর্সেনিকযুক্ত টিউবওয়েলের পানি খাওয়া ব্যতীত ধোয়া-মোছাসহ অন্য সব কাজে ব্যবহার করা যাবে।  

ডা. মো. আব্দুল্লাহ বলেন, প্রতি লিটারে ১০ মাইক্রোগ্রামের বেশি পরিমাণ আর্সেনিকযুক্ত পানি দীর্ঘদিন পান করলে রোগ হয়। পানি পান করার সঙ্গে সঙ্গে রোগের উপসর্গ দেখা যায় না, দীর্ঘদিন পর শরীরে এ রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। আর্সেনিকে আক্রান্ত হলে চর্মরোগ থেকে শুরু করে মরণব্যাধি ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। নীরব ঘাতক আর্সেনিকোসিস, যা আসে আর্সেনিক থেকে। ভুগর্ভ থেকে গভীর বা অগভীর নলকূপের মাধ্যমে ভূ-পৃষ্ঠে উঠে আসে এই বিষ। প্রতি লিটার পানিতে ৫০ মিলিগ্রামের বেশি পরিমাণ আর্সেনিক থাকলে তা খাওয়ার অনুপযোগী হিসেবে বিবেচিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান বলেন, সোনাগাজী আর্সেনিকপ্রবণ এলাকা। এই উপজেলার প্রায় বাড়িতে ১-২টা গভীর নলকূপ রয়েছে। আর্সেনিকের বিষয়টি মাথায় রেখে সবাইকে গভীর নলকূপ থেকে নিরাপদ পানি পান করার অনুরোধ রইল।  

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন বলেন, সোনাগাজী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে সংগৃহীত আর্সেনিকের তথ্যের বিষয়ে অবহিত হয়েছি। বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ পানির জন্য সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তি পর্যায়ে গভীর নলকূপ স্থাপন বাড়ানো দরকার।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০২৩
এসএইচডি/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।