ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘হাজার কোটি টাকার মালিকরা নাকি না খেয়ে থাকে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০২৩
‘হাজার কোটি টাকার মালিকরা নাকি না খেয়ে থাকে’

নারায়ণগঞ্জ: নৌযান পরিচালনা বন্ধ রাখবেন বলে মালিকদের হুমকির বিষয়ে নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সবুজ শিকদার বলেছেন, আমরা অবাক হয়েছি মালিকপক্ষের বক্তব্য শুনে। যে লোক বক্তব্য দিয়েছেন তিনি গত এক মাস আগেও কয়েক কোটি টাকা দিয়ে একটি জাহাজ কিনেছেন।

নির্লজ্জভাবে তিনি বলেছেন জাহাজ মালিকরা নাকি না খেয়ে থাকে। (এ কথা শুনে) আমার লজ্জা হয়। এত হাজার কোটি টাকার মালিক যদি না খেয়ে থাকেন তাহলে শ্রমিকরা ৯ হাজার টাকা মজুরি দিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে কি করে চলে? এ বক্তব্য তারা শ্রমিক বিদ্বেষ থেকেই বলেছেন।

মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকেলে শীতলক্ষ্যা নদী তীরে নারায়ণগঞ্জ শহরের ৫নং খেয়াঘাট এলাকায় নৌ শ্রমিকদের জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন সবুজ শিকদার।  

এতে ৬০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি করে নতুন মজুরি স্কেল ঘোষণা প্রত্যাহারে মালিক সমিতির নেতাদের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানানো হয়।

মানববন্ধনে সবুজ শিকদার, বৈশ্বিক মহামারির সময়ও সামান্য বেতন নিয়ে নৌপথের শ্রমিকরা শান্ত ছিল। কিন্তু শ্রমিকদের রক্ত চুষে সম্পদের পাহাড় বানিয়েছেন যেসব মালিকরা তারা সংবাদ সম্মেলন করে সরকার কর্তৃক মজুরি কাঠামো বৃদ্ধির ৫ দিন পরে তা প্রত্যাহারের দাবি জানায়। আমরা কিছু বলিনি। গত সোমবার আবার তারা সারাদেশ থেকে জাহাজের মালিকদের ডেকে এনে ঘোষণা দিয়েছে ১৮ মার্চের মধ্যে ঘোষিত শ্রমিকদের মজুরি ৬০ শতাংশ প্রত্যাহার না করলে তারা নাকি নৌযান পরিচালনা বন্ধ রাখবে।

এরপর এক জাহাজ মালিককে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমরা কিন্তু আপনাকে চিনি। আপনি কয়টা জাহাজ নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলেন আর এখন কত হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। নির্লজ্জভাবে আপনি বলেছেন জাহাজ মালিকরা নাকি না খেয়ে থাকে।  

জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের এ নেতা বলেন,  যেখানে শ্রমিকেরা ল্যান্ডিং পাস পায় না, বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করে। বালুবাহী বাল্কহেডের শ্রমিকদের ওপর পদ্মা নদীতে অতর্কিতে হামলা চালায়। সুরমা নদীতে ইজারার নামে শ্রমিকদের ওপর চাঁদাবাজি চলে। চট্টগ্রাম বন্দরে লাইটারেজ জাহাজের শ্রমিকরা তীরে নামলে ইজারাদারের লোকজন মাস্টার ড্রাইভারদের মারধর করে রক্তাক্ত। কিন্তু শ্রমিকদের এসব বিষয়ে আপনাদের কথা নেই। আপনাদের কথা হলো আপনারা শ্রমিকদের মজুরি দেবেন না।  

মালিক সমিতির মধ্যেও ভালো মানুষ আছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, গুটিকয়েক জাহাজের মালিক যারা একসময় তেল বিক্রি করে খেতো আজকে তারা ডব্লিুউটিসি সিরিয়ালের নামে চাঁদাবাজি করে হাজার কোটি টাকা নিজেদের পকেটে ভরছে।  এই কুচক্রী মালিক নেতারা সরকারকে বিপদে ফেলতে চায়। শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করতে চায়। আপনারা ১৮ তারিখে কি বন্ধ রাখবেন! নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার ইতিহাস শ্রমিকদের আছে। যদি মালিকদের চক্রান্তে নৌ চলাচল বন্ধ হয় পণ্য পরিবহন যাত্রী পরিবহন বন্ধ হয় তাহলে সব দায়দায়িত্ব ওইসব কুচক্রী মহলের ওপর পড়বে।  

মানববন্ধন থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে মাস্টার ড্রাইভারসহ শ্রমিকদের মারধরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।  

জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নেতা তৈয়ব আকনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন মোস্তাফিজুর রহমান, সরদার আলমগীর মাষ্টার, কবির হোসেন, আক্তার হোসেন প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৪২ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০২৩
এমআরপি/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।