ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নীতিমালা ও আইন প্রণয়নের দাবি হকারদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৩
নীতিমালা ও আইন প্রণয়নের দাবি হকারদের

ঢাকা: অবিলম্বে একটি জাতীয় নীতিমালা ও আইন প্রণয়নসহ ৬ দফা দাবি জানিয়েছে হকার ও ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা।

রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব দাবি জানান।

 

হকারদের জন্য জাতীয় নীতিমালা ও আইন প্রণয়নের দাবিতে যৌথভাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে লেবার অ্যাট ইনফরমাল ইকোনমি এবং বাংলাদেশ হকার সংগ্রাম পরিষদ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে লেবার অ্যাট ইনফরমাল ইকোনমির ভাইস চেয়ারম্যান মো. কামাল সিদ্দিকী বলেন, 'হকার' বাংলাদেশের শহুরে জীবনে শ্রমজীবী ও পেশাজীবীদের মধ্যে একটি সুপরিচিত নাম। কর্মহীনতা ও বেকারত্ব থেকেই হকারদের সৃষ্টি। বেকাররা আত্ম-কর্মসংস্থানের উপায় হিসেবে স্বেচ্ছায় এই পেশা বেছে নেয়। ফলে সরকারের ওপর বেকারদের জন্য ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির চাপ হ্রাস পায়। অন্যদিকে দেশের নিম্ন আয়ের মানুষ স্বল্পমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে তাদের দৈনন্দিন চাহিদা মেটানোর সুযোগ পায়। এ ছাড়া হাজার হাজার লোকাল গার্মেন্টস, কুটির, মৃৎশিল্প ও ক্ষুদ্র শিল্পের মালিক-শ্রমিক, সবজি, ফুল, ফল চাষিসহ লাখ লাখ মানুষ এই পেশার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। সুতরাং দেশের নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন জীবিকায় হকারদের ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না। নগর অর্থনীতিতে হকারদের অবদান অস্বীকার করা যায় না। তারপরও হকার পেশার জনগোষ্ঠী বিভিন্নভাবে নিপীড়িত ও সুবিধা বঞ্চিত।

তিনি আরও বলেন, হকার পেশাভিত্তিক অর্থনীতি দেশের অবহেলিত ও বেকার শ্রেণির মানুষের বেঁচে থাকার পথ করে দিয়েছে। আজ শুধু পুরুষ নয়, হাজার হাজার নারীও সমাজের বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে জীবিকা নির্বাহের জন্য এই পেশায় যুক্ত হয়েছে। নগরীর ব্যস্ততম এলাকায় তারাও তাদের পণ্যের পশরা নিয়ে বাজার ব্যবস্থা গড়ে তুলেছেন এবং মৌসুমী মেলায় তাদের সংখ্যা প্রায় পুরুষ হকারদের সমান।  

মো. কামাল সিদ্দিকী বলেন, এই বিপুল সংখ্যক মানুষকে বিনা নোটিশে এবং তাদের জীবিকার বিকল্প ও স্বল্প আয়ের লোকেদের সস্তা কেনাকাটার প্রতি আগ্রহ বিবেচনা না করেই ফুটপাত এবং কর্মক্ষেত্র থেকে যখন তখন অমানবিকভাবে উচ্ছেদ করা হয়। তাদের কর্ম ও জীবনের নিরাপত্তা নেই, সামাজিক মর্যাদা নেই, স্বার্থ রক্ষার কোনো আইন নেই।

লেবার অ্যাট ইনফরমাল ইকোনমির ভাইস চেয়ারম্যান আরও বলেন, হকারদের যথাযথ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে তাদের এ পেশা থেকে উচ্ছেদের কোনো উপায় নেই। কর্তৃপক্ষকে ভাবতে হবে, এই অগণিত সংখ্যক মানুষ হঠাৎ করে ফুটপাতে এসে হকার পেশায় অংশ নেয়নি। দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের সংকোচন এবং বেকারত্ব বৃদ্ধির ফলে তাদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই যে কোনো সিদ্ধান্তে তাদের জীবিকার জায়গা থেকে হঠাৎ করে উচ্ছেদ করে দেশে বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। তাই হকারদের যথাযথ পুনর্বাসনের মাধ্যমে উচ্ছেদ করতে হবে এবং তাদের স্বার্থবিরোধী সব আইন বাতিল করে তাদের স্বার্থ রক্ষায় জাতীয় নীতি ও আইন প্রণয়নসহ ৬ দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে।

তাদের দাবিগুলো হলো- 

  • হকার ও ফুটপাত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের জন্য জাতীয় নীতিমালা ও আইন প্রণয়ন করতে হবে; 

  • পূনর্বাসন ছাড়া হকারদের উচ্ছেদ করা যাবে না; 

  • হকার ও ফুটপাত ব্যবসায়ীদের পূনর্বাসনের জন্য সরকারকে হকারদের নিবন্ধন করতে হবে; 

  • হকার ও ফুটপাত ব্যবসায়ীদের পেশাকে 'অর্থনৈতিক কাজ' হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে; 

  • হকার ও ফুটপাত ব্যবসায়ীদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি নিশ্চিত করতে হবে; 

  • হকার ও ফুটপাত ব্যবসায়ীদেরও সার্বজনীন পেনশন সুবিধার আওতায় আনতে হবে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হকার সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি আবুল হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক হারুন-উর-রশিদ, সাবেক সদস্য সচিব সেকেন্দার হায়াৎ, লেবার অ্যাট ইনফরমাল ইকোনমির ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর ফরিদা খানম, সমন্বয়কারী ইসরাত জাহান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৩
এসসি/এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।