ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

পাকিস্তানের লন ভারতের পাখি

আমাদের কি?

শারমীনা ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৪
আমাদের কি?

বাংলাদেশ শিল্পে, সাহিত্যে এতিহ্য বা আধুনিকতা কোথাও পিছিয়ে নেই। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি সামনের দিকে তাও আবার বেশ দ্রুত গতিতে।



আমরা গর্ব করি নিজেদের দেশের তাঁত, জামদানি নিয়ে, দেশের নাম করা সব ফ্যাশন হাউস সারা বছর বিভিন্ন উৎসব রাঙিয়ে তোলে এসব কাপড়ে।

কিন্তু তারপরও কোথায় যেন বেদনার সুর। আমাদের তাঁত বুঝি হারিয়ে যাচ্ছে, রাজশাহী সিল্ক সেই রাজকীয় জায়গা কেন ধরে রাখতে পারছে না, কোথায় হেরে যাচ্ছি আমরা? কেন আজ শপিং-সেন্টারগুলো প্রর্দশনী করে শুধু বিদেশি পোশাকের? একটি বছর পেরিয়ে এসে নতুন বছর স্বাগত জানাতে প্রস্তুত হচ্ছি, কিন্তু বারবারই মাথায় আসছে একটি জামার জন্য কেন আত্মহত্যা।

ফ্যাশনে কেমন গেল আমাদের ২০১৪, কী পেলাম এই পুরো বছরে? সেই পাকিস্তানি লন আর ভারতের পাখি ড্রেস।

অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি কেন আমরা দেশি হাউসগুলোর ড্রেস না পরে পাকিস্তনি লনের দিকে ঝুকছি? উত্তরে সবাই প্রায় একই কথা বললেন, এই পোশাকগুলো পরতে আমামদায়ক, স্কুল, কলেজ, অফিস, শপিং-সেন্টার বা কাঁচা বাজার সব জায়গাতেই পরতে পারি। আর দামও সাধ্যের মধ্যে। অন্যদিকে নামী দামী দেশি হাউসে গিয়ে প্রথমে পোশাকের দাম দেখতে হয় এরপর আসে পছন্দের বিষয়টি। যে টাকায় পাকিস্তানি থ্রি-পিস কেনা যায়, তা দিয়ে আড়ং-এর মতো হাউসে একটি ওড়নাও কেনা যায় না। আর এগুলো একবার ধোয়ার পর আর বাইরে পরার মতোও থাকে না।

এতো গেল পাকিস্তানি পোশাকের বন্দনা।

এবার আসি পাখি ড্রেসে, আজকাল কোনো প্রোগ্রামে গেলে দেখা যায় হিন্দি সিরিয়ালের সব চরিত্র। আর যতোগুলো কিশোরী আর তরুণী থাকে এদের প্রায় প্রত্যেকের পোশাক হয় পাখি ড্রেস অথবা ফ্লোর টাচ্।

দেশ বরেণ্য ফ্যাশন ডিজাইনার এমদাদ হকের কাছে জানতে চাই কেন এই অবস্থা? তিনি  বলেন,  আসলে আমরা পোশাকের ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে পাকিস্তানের লনের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে যাচ্ছি। এর অনেকগুলো ‍কারণের মধ্যে রয়েছে, আমাদের পোশাকের মানের চেয়ে দামটা একটু বেশি। তাই আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পেরে উঠছি না আমরা।

বিদেশি টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে আমরা সব ডিজাইন দেখার সুযোগ পাচ্ছি। আর অনলাইন শপ বা কোনো শপিং হাউস থেকে খুব সহজেই পোশাকটি পেয়েও যাচ্ছি।

এমদাদ হক আরও বলেন, তবে আশার কথা হচ্ছে নতুন বছর সামনে রেখে আমাদের দেশের ফ্যাশন হাউসগুলো নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে, দেশীয় কাপড়ের সঙ্গে সঙ্গে বিদেশ থেকেও কাপড় এনে ফ্যাশনেবল পোশাক ক্রেতার  রুচি ও সাধ্য অনুযায়ী তৈরি করা হবে।

সবাই মিলে হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনবো আমরা, এই হোক আসছে নতুন বছর ২০১৫-এর প্রত্যাশা।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।