ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

শুধুই বিরোধ!

লাইফস্টাইল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১১ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৪
শুধুই বিরোধ!

ঝুমার নতুন বিয়ে হয়েছে। শ্বশুড় বাড়ির সবাই তাকে অনেক গুরুত্ব দেয়, ভালোবাসে।

সমস্যা শুধু শাশুড়ি। খুব আক্ষেপ করে সেদিন বলছিলো শাশুড়ি না থাকলে আমার সংসারটা অনেক শান্তির হতো।

বউ-শাশুড়ি সম্পর্ক কি শুধুই খুনসুটি আর একে অন্যের দোষ ধরার জন্য? না, দিন পাল্টেছে, আমরা মনে করি শাশুড়িও হয়ে উঠতে পারেন বউমার আশ্রয়ের জায়গা। সেই সাথে বউও হবে শাশুড়ির মনের কথা শেয়ার করার সঙ্গী। কীভাবে? বউ ও শাশুড়িদের জন্য রইলো কিছু সহজ পদ্ধতি, যা আমাদের এই সম্পর্ককে আরও আন্তরিকভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ এবং অর্থবহ করতে সাহায্য করবে।

শাশুড়ির পছন্দ অপছন্দগুলো স্বামীর কাছ থেকে জেনে নিন। তিনি অপছন্দ করেন এমন বিষয়গুলো কথা বলার সময় সামনে আনবেন না। দীর্ঘদিন শাশুড়ি তার পরিবারের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। বিয়ের সঙ্গে সঙ্গে তার কিছু বিষয় আপনার ভালো না লাগলেও রাতারাতি ওগুলো পরিবর্তন করতে চাওয়াটা ঠিক নয়।

এমন হতে পারে আপনার বাবার বাড়ির রান্নার সঙ্গে শাশুড়ির রান্নার ধরণ মিলছে না। বা তাদের রান্না হয়তো আপনার খেতে কষ্ট হচ্ছে, এমন অবস্থায়ও শাশুড়ির রান্নার প্রশংসা করুন। চেষ্টা করুন তাদের খাবার পছন্দ করে খেতে আর মাঝে মাঝে আপনার পছন্দের আইটেম সবার জন্য তৈরি করুন। শাশুড়ির যে রান্নাগুলো আপনার স্বামী পছন্দ করেন, সে রেসিপিগুলো আগ্রহের সঙ্গে শিখে নিন। শাশুড়ি আর স্বামী একসঙ্গে খুশি হয়ে যাবেন।

বাড়িতে যদি ননদ থাকে স্বাভাবিকভাবেই শাশুড়ি নিজের মেয়েকে গুরুত্ব দেবেন। এটা দেখে হয়তো আপনার ভালো নাও লাগতে পারে। তবে ননদকে প্রতিদ্বন্দ্বী না ভেবে তার সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলুন। শাশুড়ি যখন দেখবেন আপনি তার প্রিয় সন্তানকে আপন করে নিয়েছেন, তিনি আপনাকে আরও পছন্দ করতে শুরু করবেন।

আপনার বাড়িতে কোনো অতিথি যদি কোনো উপহার নিয়ে আসেন আপনার নিশ্চয় ভালো লাগবে। এই আইডিয়াটাই কাজে লাগান। শাশুড়ির জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী মনে রাখুন, আর বিশেষ দিন ছাড়াও মাঝে মাঝে তার জন্য ছোট ছোট উপহার নিয়ে আসুন।

শাশুড়ি আগের দিনের মানুষ বউ একটু সাজুগুজু করে পরিপাটি থাকলে তিনি পছন্দ করেন, এলোমেলো থাকা পছন্দ করেন না। বেশ তো এটা নিয়ে আভিযোগ করার কি আছে? গুছিয়ে থাকলে সবাই আপনার রুচিরই প্রশংসা করবে। আর আয়নাতেও আপনাকেই সুন্দর লাগবে।

শাশুড়ির সঙ্গে সবসময় নরম, ভদ্রভাবে কথা বলুন। তার কোনো আচরণ ভালো না লাগলে বিতর্কে জড়াবেন না।

কোনো প্রয়োজনে আপনি বা শাশুড়ি বাইরে থাকলে নিয়মিত ফোন করে খোঁজ নিন। তিনি ফোন করে আপনার খোঁজ করেননি কেন এই অপেক্ষায় না থেকে আগে ফোন করুন। তিনিও একসময় আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করতে উদ্যোগি হবেন। আর এভাবেই আপনাদের মাঝে একটি সুন্দর সম্পর্ক তৈরি হবে।

কোনো পরিকল্পনা করার সময় শাশুড়ির পরামর্শ চান। এতে করে সন্তানের জীবনে তার মতামতের গুরুত্ব আছে ভেবে তিনি  আনন্দিত হবেন।

সম্মান করে শাশুড়ির ভালোবাসা অর্জন করুন। তার কোনো আচরনে কষ্ট পেলেও ক্ষমা করতে জানতে ভুলবেন না। আর এই সহজ নিয়মগুলোই আপনার জীবন অনেক সহজ করে দেবে।

আর শাশুড়ি মায়েদেরও বুঝতে হবে বউও একটি বাড়ির আদরের মেয়ে। তার পরিবারের সবাইকে ছেড়ে সে আপনার কাছে এসেছে। ভালোবাসা দিয়ে তাকে গ্রহণ করুন।

আজ বউটি নতুন আছে, সে হয়তো আপনার সব কথা মেনে নিচ্ছে, কিন্তু একসময় সে প্রতিবাদ করবে, এটা আপনার পরিবারেরই শান্তি নষ্ট করবে। আর এসব জেনে আপনার ছেলেটিও ধীরে ধীরে দূরে চলে যাবে।

সংসার সুখের হয় পরিবারের সবার প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধের মাধ্যমে। আপনি বউমার চাওয়াগুলোর গুরুত্ব দিন। সেও আপনাকে পছন্দ করবে ভালোবাসবে।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।