ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

গাজরের গুণগল্প

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২৩
গাজরের গুণগল্প সংগৃহীত ছবি।

আলুর পর সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সবজি হলো গাজর। আর হবে নাই বা কেন! কী চমৎকার নজরকাড়া রং আর জিভে লেগে থাকা স্বাদ! হাফ কাপ গাজর কুঁচিতে রয়েছে ২১০ শতাংশ ভিটামিন ‌‘এ’, ১০ শতাংশ ভিটামিন ‘কে’, ৬ শতাংশ ভিটামিন ‘সি’ ও ২ শতাংশ ক্যালসিয়াম।

গাজরের বিটা ক্যারোটিন যকৃতে পৌঁছে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। এছাড়াও গাজরের তেলে রয়েছে পটাশিয়াম, ভিটামিন বি৬, কপার, ফলিক এসিড, থায়ামিন ও ম্যাগনেসিয়াম।

গাজরে রয়েছে প্রচুর শর্করা। এটি হৃদরোগ প্রতিরোধসহ শক্তিশালী হাড় গঠন ও সুস্থ স্নায়ুতন্ত্রের কার্যপ্রণালিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ তো কেবল শুরু, গাজরের আরও সব গুণের কথা তো এখনও বলাই হয়নি! বেশ আর অপেক্ষায় রাখবো না, জেনে নিন ঝটপট।

দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে: আমাদের অক্ষিকোটরে রেটিনার মধ্যে রেডোপসিন নামক এক ধরনের রঞ্জক পদার্থ থাকে, যা থেকে এক ধরনের লাল রশ্মি বিকিরিত হয়। এ রশ্মির কারণেই আমরা রাতের বেলা দেখতে পাই। গাজরের উন্নত বিটা ক্যারোটিন উপাদান যকৃতে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। ভিটামিন এ রোডোপসিনে পৌঁছে দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। এছাড়াও গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন খান, তাদের চোখের ম্যাকুলার (অক্ষিপটের কেন্দ্রের কাছাকাছি ডিম্বাকার আকৃতির রঙিন জায়গা) পতনের আশঙ্কা ৪০ শতাংশ কম বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

ক্যানসার নিরাময়ক: ফুসফুস, কোলন ও স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি এড়াতে গাজর খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। তাদের মতে, গাজরের ফ্যালক্যারিনল ও ফ্যালক্যারিনডিওল উপাদান দুটি ক্যানসারের প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে। এ উপাদান দুটি অ্যান্টি-ফাঙ্গাল।

গবেষকরা দেখেছেন, যারা নিয়মিত গাজর খান, তাদের ক্যানারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমেছে এক-তৃতীয়াংশ।

বয়সের ছাপ দূর করে: গাজরের উচ্চমানের বিটা ক্যারোটিন শরীরে কোষ ক্ষয় রোধ করে ও সজীব কোষ উৎপাদনে সহায়তা করে। ফলে ত্বক থাকে প্রাণবন্ত।

স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বক: গাজরের ভিটামিন ‘এ’ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান ত্বককে রোদের প্রকোপ থেকে বাঁচায়। ভিটামিন এ-এর অভাবে ত্বক, চুল, নখ শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে পড়ে। এছাড়াও ভিটামিন ‘এ’ ত্বকে বলিরেখা, দাগ, শুষ্কতা, ছোপ ছোপ দাগ দূর করে ত্বকের স্বাভাবিক রং ও উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে।

সংক্রামক ব্যাধি: ভেষজ বিশেষজ্ঞদের কাছে গাজর সংক্রামক ব্যাধির ওষুধিস্বরূপ। এছাড়া শরীরের কোথাও কেটে বা ছিঁড়ে গেলেও গাজর থেঁতো করে লাগালে উপকার পাওয়া যায়।

হৃদয় থাকবে সুস্থ: বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চমানের ক্যারোটিন শরীরে প্রবেশ করলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায় অনেকাংশেই। গাজর শুধু বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধই নয়, এটি আলফা ক্যারোটিন ও লিউটিনের ভালো উৎস। প্রতিদিন গাজর বা গাজরের রস খেলে রক্তে জমা ক্ষতিকর চর্বি দূর হয়।

শরীর পরিশোধক: গাজর শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন দূর করে। এছাড়াও এটি শরীরে জমা কোলন ও বর্জ্য দূর করে শরীরকে বিষমুক্ত রাখে।

দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষা: দাঁত ও মুখ পরিষ্কার করতে গাজরের জুড়ি নেই। এটি দাঁতে জমা প্লেক (দাঁতের গোড়ায় ব্যাকটেরিয়া জমা হওয়ার পর আঠালো যে পদার্থ তৈরি হয়) দূর করে। অনেকটা টুথপেস্টের মতোই কাজ করে গাজর। এছাড়াও ক্যাভিটি (দাঁত ক্ষয় হয়ে যাওয়া) প্রতিরোধ করে ও দাঁতকে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকেও রক্ষা করে গাজার।

স্ট্রোকের ঝুঁকি নেই আর: যুক্তরাষ্ট্রের হার্বার্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সপ্তাহে ছয়টির বেশি গাজর খান, আর যারা মাসে একটি বা দুটি গাজর খায় তাদের তুলনায় স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকাংশে কম।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৩
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।