ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

আদেশের আগেই শিশুকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় বাবা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২১
আদেশের আগেই শিশুকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় বাবা

ঢাকা: দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও আদালতে হাজির করার আদেশের আগেই তিন বছরের শিশু সন্তানকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া চলে গেছেন বাবা সানিউর টি আই এম নবী।

রোববার (২১ নভেম্বর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে রাষ্ট্রপক্ষের মাধ্যমে এমন তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।

আদালতে শিশুটির মা ভারতীয় নারী সাদিকা শেখের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ ও আইনজীবী কাজী মারুফুল আলম।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। পরে বিপুল বাগমার জানান, ১৬ নভেম্বর বিকেলে ওই শিশুর দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। আর পুলিশ জানিয়েছে, ওইদিন সকালে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে শিশুকে নিয়ে বাবা অস্ট্রেলিয়া চলে যান।   

এর আগে এক আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২৬ আগস্ট হাইকোর্ট ওই শিশুকে আপাতত মায়ের জিম্মায় দেন। আর বাবা সপ্তাহে তিন দিন শিশুর সঙ্গে সময় কাটাতে পারবে বলে আদেশ দেন।

কাজী মারুফুল আলম বলেন, ওই আদেশের পর শিশুর কথা চিন্তা করে গুলশান ক্লাবে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। এর মধ্যে শিশুটির মায়ের বিরুদ্ধে জিডি করেন বাবা। জিডি মূলে নন এফআইআর মামলাও হয়। আর কৌশলে শিশুটিকে নিয়ে যায় বাবা। বিষয়টি আদালতে জানালে গত ১৫ নভেম্বর হাইকোর্ট শিশুটিকে পরদিন সকাল ১০টার মধ্যে আইনজীবীর চেম্বারে হাজির করতে বলেন। কিন্তু শিশুটিকে হাজির করেনি তারা। এ কারণে আমাদের আবেদনে শিশুটিকে বিদেশ নেওয়ার নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। আর পরের দিন ১৭ নভম্বের আদালত ওই শিশুকে বাবাসহ ২১ নভেম্বর বিকেল তিনটার মধ্যে আদালতে হাজির করাতে পুলিশের ঢাকা মহানগর কমিশনার ও গুলশান থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।

কিন্তু রোববার পুলিশ জানায়, শিশুটিকে নিয়ে বাবা দেশত্যাগ করেছেন। পরে আদালত আদেশের জন্য আগামী মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) দিন রেখেছেন।

গত ২৬ আগস্ট আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ জানিয়েছিলেন, ২০১৭ সালে হায়দরাবাদের সাদিকা শেখ নামে এক নারীকে বিয়ে করেন বারিধারার সানিউর টি আই এম নবী। বিয়ের পর তারা মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে বসবাস শুরু করেন। কয়েক মাস পর তারা ঢাকায় ফিরে আসেন।

এরইমধ্যে ওই দম্পতির এক ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু করোনাকালে তাদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন দেখা দেয়। এমনকি ভারতের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সাদিকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। বিষয়টি ভারতে মেয়েটির আত্মীয়-স্বজনরা জানতে পারেন। এরপর ওই দেশ থেকে তাদের পরিবারের পক্ষে প্রথমে ভারতীয় হাইকমিশনে যোগাযোগ করা হয়। তারপরও বিষয়টি সমাধান হয়নি। পরে সাদিকার বোন মানবাধিকার সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) কাছে আইনি সহায়তা চান। এর মধ্যে সাদিকাকে ডিভোর্স দেন নবী।

পরে একটি মানবাধিকার সংগঠন হাইকোর্টে রিট করে। হাইকোর্ট প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২৬ আগস্ট মাসহ শিশুটিকে হাজির করতে নির্দেশ দেন। হাজিরের পর ওইদিন শিশুটিকে মায়ের জিম্মায় দিয়ে বাবাকে সপ্তাহে তিন দিন দেখা করার সুযোগ দেন।   

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২১
ইএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।