ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

শিশু সন্তানসহ সেফহোম থেকে মুক্তি মিললো কিশোরীর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২১
শিশু সন্তানসহ সেফহোম থেকে মুক্তি মিললো কিশোরীর

রাজশাহী: রাজশাহীর সেফহোমে থাকা এক মাস বয়সী সন্তানসহ মুক্তি পেয়েছেন ভুক্তভোগী এক কিশোরী।

বুধবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে ভুক্তভোগী ওই কিশোরী ও তার সন্তানকে মুক্তি দেওয়া হয়।

উচ্চ আদালতের নির্দেশে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা মামলায় শিশুটির বাবা মো. মিন্টু মিয়াকে এক বছরের জামিনও দিয়েছেন আদালত। এদিকে ভুক্তভোগী কিশোরীকে গ্রহণ করেন মিন্টুর বাবা সাইদুর রহমান।  

আদালত বলেছেন, ভুক্তভোগী কিশোরী তার ইচ্ছা অনুসারে চাইলে বাবা-মা বা স্বামীর কাছে যেতে পারবেন। ভুক্তভোগীর ইচ্ছায় বুধবার শ্বশুরের জিম্মায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই আদেশ দেন। নিম্ন আদালতে জামিন না পেয়ে হাইকোর্টে আপিল করে জামিন চান মিন্টু। আপিল শুনানি শেষে গত ৭ জানুয়ারি ওই আদেশ দেওয়া হয়।

আদালতে মিন্টু মিয়ার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. শওকত উল্লাহ খান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।

অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া ওই কিশোরীকে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মিন্টুসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের জুন বগুড়ার শিবগঞ্জ থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা। পরে কিশোরীকে উদ্ধারের পর ওই বছরের ১২ ডিসেম্বর সে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেয়, যেখানে বলা হয়, ‘মিন্টু জোর করে অপহরণ তাকে বিয়ে ও শারীরিক সম্পর্ক করেন। একই দিন কিশোরীর মেডিক্যাল পরীক্ষা হয়। তবে কিশোরীর ভাষ্য, তাদের প্রেমের সম্পর্ক ছিল, তারা পালিয়ে বিয়ে করার পর তাদের শারীরিক সম্পর্ক হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের তথ্যমতে, ওই কিশোরীকে উদ্ধারের পর থেকে সে তার বাবার কাছেই ছিল। তবে সন্তান হওয়ার পর তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। মিন্টু তার স্ত্রীকে নিজ হেফাজতে নিতে আদালতে আবেদন করেন। ওই আবেদন নামঞ্জুর করে শিশুসহ ভুক্তভোগীকে রাজশাহীর সেফহোমে পাঠানোর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। ওই মামলায় ২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। মামলায় বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে গত বছরের নভেম্বরে আত্মসমর্পণ করে মিন্টু জামিন চান। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বিচারিক আদালতে জামিন না পেয়ে হাইকোর্টে আপিল করে মিন্টু জামিন চান।

সেফহোমের তত্ত্বাবধায়ক লাইজু রাজ্জাক জানান, হাইকোর্টের শুনানিতে গাজীপুরের মাওনায় অবস্থিত কাজী অফিসে এক লাখ টাকা দেনমোহরে মিন্টু ও ওই কিশোরী বিয়ে হয় বলে শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী জানান। তাদের সন্তান হয়েছে, যার বয়স এক মাস বলে উল্লেখ করা হয়। হাইকোর্ট মিন্টুকে এক বছরের জামিন  দেন। রাজশাহীর সেফহোমে থাকা এক মাস বয়সী শিশু ও তার মাকে মুক্তি দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সেফহোমে পাঠানো সংক্রান্ত ট্রাইব্যুনালের আদেশ স্থগিত করে হাইকোর্ট স্বপ্রণোদিত হয়ে ওই আদেশ দেন। হাইকোর্টের আদেশের কপি ১০ জানুয়ারি পাওয়ার পর প্রক্রিয়া শেষে বুধবার ওই কিশোরী ও তার শিশুকে মুক্তি দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০১২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২১
এসএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।