ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

হাত হারানো নাইমকে ৩০ লাখ টাকা ডিপোজিট করে দেওয়ার রায় বহাল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২৪
হাত হারানো নাইমকে ৩০ লাখ টাকা  ডিপোজিট করে দেওয়ার রায় বহাল

ঢাকা: কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতে গিয়ে ডান হাত হারানো শিশু নাইম হাসানকে ৩০ লাখ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট রিসিপ্ট হিসাব (এফডিআর) করে দিতে হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে মালিকপক্ষের আবেদন মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) খারিজ করে দেন আপিল বিভাগের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ।

আদালতে শিশুটির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ওমর ফারুক।   

গত ৩১ জানুয়ারি হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে ১৫ লাখ টাকা এপ্রিল ও বাকি অর্থ ডিসেম্বরের মধ্যে ১০ বছর মেয়াদি এফডিআর করে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। আর শিশুটির এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়া পর্যন্ত প্রতিমাসে সাত হাজার টাকা করে দিতে নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত। ওয়ার্কশপের মালিককে এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছিল।

আইনজীবী ওমর ফারুক জানান, ওয়ার্কশপের মালিক ইয়াকুব হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ১০৭ দিন পরে আপিল বিভাগে আবেদন করেন। এভাবে মামলাটা পড়ে থাকে। আমি বিনা খরচায় এ মামলার দায়িত্ব নিয়ে মামলাটা শুনানির জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করি। আমরা বলেছি, মালিকের এ টাকা দেওয়ার সামর্থ্য আছে। কিন্তু তিনি নানা কৌশলে এ পাওনা থেকে বঞ্চিত করেছেন। আজকে শুনানি শেষে ইয়াকুবের আবেদন খারিজ হয়েছে। এখন আশা করি মালিক ইয়াকুব আর ছলচাতুরির আশ্রয় নেবেন না। তিনি মানবিক হবেন। নির্দেশনা মোতাবেক ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করবেন।

২০২০ সালের ১ নভেম্বর ‘ভৈরবে শিশুশ্রমের করুণ পরিণতি’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রকাশিত প্রতিবেদনটি যুক্ত করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে শিশুটির বাবা হাইকোর্টে রিট করেন।

রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ২৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। রুলে শিশুটিকে দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

চার সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়। একই সঙ্গে ২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বরের ওই ঘটনা নিজ কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা দিয়ে অনুসন্ধান করতে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই রুলের ওপর ৫ ডিসেম্বর শুনানি শেষ হয়। এরপর ৩১ জানুয়ারি রায় দেন।

২০২০ সালের ১ নভেম্বর সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, নাইম হাসানের বয়স ১০ বছর। পড়ছে চতুর্থ শ্রেণিতে। বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার আড়াইসিধা গ্রামে। তার বাবা আনোয়ার হোসেনের পেশা জুতা ব্যবসা। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর সময়ে আনোয়ার হোসেন কর্মহীন হয়ে পড়েন। এ সময় সংসারের চাপ সামলাতে নাইমকে তার মা–বাবা কিশোরগঞ্জের ভৈরবের একটি ওয়ার্কশপে কাজে দেন। এই ওয়ার্কশপের কাজ করতে গিয়েই মাসখানেক আগে তার ডান হাতটি মেশিনে ঢুকে যায়। শেষে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কনুই থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয় ডান হাতটি।

বাংলাদেশ সময়: ১২০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২৪
ইএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।