রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রত্যক্ষ সমর্থন পেয়েছিলেন এক কালের কৌতুক অভিনেতা ও ইউক্রেনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। কিন্তু মার্কিন নির্বাচনে দ্বিতীয়বার জয় পেয়ে প্রেসিডেন্ট হওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনকে আর তেমনটা সমর্থন করছেন না।
কাতারের সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সম্প্রতি ইউক্রেনের বিরল খনিজ সম্পদের অংশিদারিত্ব দাবি করে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকেই দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির তীব্র সমালোচনা শুরু করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ফক্স নিউজ রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গ এলে জেলেনস্কির সমালোচনা শুরু করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর সম্পূর্ণ দায় তিনি ইউক্রেন ও জেলেনস্কির ওপর চাপিয়েছেন। ব্রায়ান কিলমেড ট্রাম্পের সঙ্গে আলাপের সময় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পেছনে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘দায় ও দোষ’ আছে বলে উল্লেখ করেন। এতেই চটে যান ট্রাম্প। তার চেহারায় বিরক্তি ফুটে ওঠে। তিনি বলেন, আমি বিরক্ত হয়ে গেছি এসব শুনতে শুনতে। আলোচনা করার জন্য জেলেনস্কির হাতে আর সুযোগ নেই।
তিনি (জেলেনস্কি) তিন বছর ধরে বৈঠক করছেন। কিন্তু কিছুই করতে পারেননি। এ সময় সৌদি আরবে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র বৈঠকে জেলেনস্কিকে না রাখার বিষয়ে প্রশ্ন করেন সঞ্চালক ব্রায়ান। উত্তরে ট্রাম্প বলেন, আমি তাকে আলোচনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ মনে করি না।
এ সময় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনেরও সমালোচনা করেন ট্রাম্প। বাইডেন ট্রান্সআটলান্টিক জোটকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করেছিলেন। ইউক্রেনের জন্য চিরস্থায়ী সমর্থনের অঙ্গীকারও করেছিলেন তিনি।
বিরল খনিজ সম্পদের অংশিদারিত্ব দাবি করে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ব্যাপারে এএফপির খবরে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের কাছে এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের যুক্তি তুলে ধরেছিল। কিন্তু জেলেনস্কি তা ফিরিয়ে দিয়েছেন। মোটা দাগে, তিনি খনিজ সম্পদের অংশিদারিত্ব বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। অথচ, জেলেনস্কি ও ইউক্রেনকে সহায়তাই করতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প। তার প্রশাসন বলেছে, ওই চুক্তি করলে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের চলমান যুদ্ধে মার্কিন সহায়তার ক্ষেত্রে এর প্রতিফলন থাকবে।
শুক্রবার বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেন হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজও। তিনি বলেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে আবার আলোচনায় বসতে হবে এবং ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে একটি চুক্তি করতে হবে।
ট্রাম্প প্রশাসন এ চুক্তিতে আসার জন্য কিয়েভের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে, এমন প্রশ্নের জবাবে ওয়াল্টজ বলেন, আমি বিশ্বাস করি ইউক্রেন দ্রুতই তাদের খনিজ সম্পদে ওয়াশিংটনের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে চুক্তি সই করবে। কেননা, যুদ্ধের জন্য তাদের ওয়াশিংটন থেকে আরও সহায়তা প্রয়োজন। তারা যেন সেটি পায়।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৫
সুরমা/এমজে