ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত দার্জিলিং-কালিম্পং, যাচ্ছেন মমতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৪
বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত  দার্জিলিং-কালিম্পং, যাচ্ছেন মমতা

কলকাতা:  ধস নেমেছে পাহাড়ে। অবিরাম বৃষ্টি হচ্ছে সমতলে।

যার জেরে নদীতে জলস্ফীতি। এই পরিস্থিতিতে একবারে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ। শনিবার নতুন করে পাহাড় ও সমতলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৭টি গ্রাম। কোথাও ধসের কারণে সড়ক অবরুদ্ধ। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি। আবার কোথাও নদীর পানিতে প্লাবিত গ্রামে পর গ্রাম। পূজার মৌসুমে এই পরিস্থিতি নিয়ে কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে পর্যটন ব্যবসায়ীদের। ব্যবসায় ব্যাপক লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা। পূজার ছুটিতে আদৌ অভীষ্ট গন্তব্যে পৌঁছনো যাবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় পর্যটকরাও।

যানা যায়, শনিবার(২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে দার্জিলিংয়ের লরেটো কনভেন্ট স্কুলের কাছে, সুখিয়াপোখরি, বিজনবাড়ি, কার্শিয়াং ও মিরিকের প্রায় ১২টি জায়গায় ধস নেমেছে। ধসের জেরে বাতাসিয়া ১১০ নম্বর জাতীয় সড়ক, লিংছে-বিজনবাড়ি রাস্তা বিপর্যস্ত। কালিম্পংয়ের অবস্থাও একই। ধসের কারণে গোরুবাথানের রংবো, পোখরেবং, কাহাল, পেডংয়ের সাকিয়ং এবং চিত্রের সড়ক ধস বিধ্বস্ত। সেগুলি দিয়ে যান চলাচল বন্ধ।

গত ২৪ ঘণ্টায় দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে বৃষ্টির পরিমাণ যথাক্রমে ১৬০ দশমিক ৬ এবং ১৩০ মিলিমিটার। লাগাতার ভারী বৃষ্টির জেরেই পাহাড়ে ধসের দাপট বেড়েছে। বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত সিকিম ও কালিম্পংয়ের ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। ধসবিধ্বস্ত হওয়ার কারণে সড়ক একবারে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জাতীয় সড়ক বন্ধ হওয়ার কারণে ৫৫০ কোটি রুপির লোকসান হয়েছে।
 
অপরদিকে শিলিগুড়িসহ সমতলেও বৃষ্টি অব্যাহত। চারদিন ধরে শিলিগুড়িতে সূর্যের দেখা নেই। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টির পরিমাণ ২১৩ দশমিক ৪ মিলিমিটার। জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলার অবস্থাও একই। গত ২৪ ঘণ্টায় জলপাইগুড়িতে ১৬৩ দশমিক ৭ এবং কোচবিহারে ৫৩ দশমিক ৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

পাহাড় ও সমতলে বৃষ্টির জেরে তিস্তা, মহানন্দা, বালাসন, চামটা, পঞ্চনই প্রভৃতি নদী ফুঁসছে। অসংরক্ষিত এলাকায় তিস্তার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। ইতিমধ্যে তিস্তার পানিতে কালিম্পংয়ের তিস্তাবাজার, জলপাইগুড়ির লালটং, চমকডাঙি, বোয়ালমারি, চ্যাংমারি, টাকিমারি, ধর্মপুর, মণ্ডলঘাট প্রভৃতি এলাকা প্লাবিত। এই অবস্থায় পাহাড়ে এনএইচপিসির বিভিন্ন ড্যাম থেকে অবাধে পানি ছাড়া হচ্ছে। শনিবারের তথ্য মতে তিস্তা ব্যারেজ থেকে প্রায় ১ লাখ ৭৫ হাজার কিউসেক পানি ছাড়তে হয়েছে।

গোটা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) শিলিগুড়ি যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সমতল ও পাহাড়ের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে প্রশাসনিক বৈঠক করার কথা রয়েছে তার। যেতে পারেন সমতলের ধসবিধ্বস্ত এলাকাতেও। তবে এ যাত্রায় মুখ্যমন্ত্রীর পাহাড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম বলেই মনে করছেন প্রশাসনিক কর্তারা। কারণ, সোমবারই কলকাতায় ফেরার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। সোমবার বিকেলে মন্ত্রিসভার বৈঠক রয়েছে। পুজার আগে এটাই মন্ত্রিসভার শেষ বৈঠক। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর সফরসূচি বদলের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

অপরদিকে, উত্তরবঙ্গ ঘেষা মালদহ জেলার বন্যা পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে এলাকায় গিয়েছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তার ফোনের মাধ্যমেই দুর্গতদের পাশে থাকার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ভিএস/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।