গাবতলীর (বগুড়া) পোড়াদহ মেলা থেকে ফিরে: ঐতিহাসিক পোড়াদহ মেলা মাছের মেলা নামেই সর্বাধিক পরিচিত। সেই খ্যাতি সামনে রেখে বানানো হয়েছে রুই, কাতল ও রূপচাঁদা মাছের আকৃতির বাহারি মিষ্টি।
মাছ আকৃতির এসব মিষ্টি মেলায় তুলেছেন আদুরী মিষ্টি ভাণ্ডারের মালিক আব্দুর রাজ্জাক। সোনাতলা উপজেলার সৈয়দ আহম্মেদ কলেজ স্টেশন এলাকা থেকে এই ব্যবসায়ী মেলায় এসেছেন। এছাড়াও মেলায় সব ধরনের মিষ্টান্ন সামগ্রীর আমদানি করেছেন ব্যবসায়ীরা।
মেলায় আসা জামাইসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এসব মিষ্টান্ন সামগ্রী কিনছেন।

বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বগুড়ার গাবতলী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলায় গেলে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা হলে এমনই তথ্য উঠে আসে।
আদুরী মিষ্টি ভাণ্ডারের মালিক আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে জানান, মিষ্টির ব্যবসা শুরু করার পর থেকে প্রতি বছর তিনি এ মেলায় আসেন। মাছের মেলা হিসেবে প্রাধান্য দিয়ে মাছ আকৃতির মিষ্টি তৈরি করেন তিনি। এছাড়াও তিনি কালোজাম, রাজভোগ, কাটারিভোগ, রসমঞ্জুরি, রসগোল্লা, রসকদম, চমচম, প্যারা সন্দেশ এবং পটল মিষ্টি তৈরি করেন।
তিনি আরো জানান, ১ থেকে ১০ কেজি ওজনের মিষ্টি ২০০ টাকা কেজি ও সাধারণ মিষ্টি ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি করেন। কিন্তু বড় মাপের মিষ্টিগুলো তুলনামূলক বিক্রি কম হয়। তাই চাহিদা বুঝে এ ধরনের মিষ্টি বানানো হয়। তবে এবার এসব মিষ্টি বেশ ভালোই বিক্রি হয়েছে বলে তিনি জানান।

আব্দুল লতিফ, শাহজাহান আলী, মোজাফফর হোসেনসহ কয়েকজন মিষ্টি ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে জানান, তারা মেলায় বিভিন্ন ধরনের মিষ্টিসহ লাড্ডু, জিলাপি, নিমকি, মুড়ি-মুড়কি, বাতাসা, সাজ, খাজা, খাগড়াই নিয়ে এসেছেন। প্রতিবারই তারা এ মেলায় আসেন। এবারো এসেছেন। বেচা-বিক্রিও বেশ ভালোই বলেও জানান তারা।
হাসান ও শামীম। তারা সম্পর্কে পরস্পরের ভায়রা ভাই। হাসান গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ ও শামীম বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বাসিন্দা। তার মেলার নিমন্ত্রণে শ্বশুরবাড়িতে এসেছেন।
তারা বাংলানিউজকে জানান, এ মেলায় এটা তাদের দ্বিতীয়বারের মতো আসা। প্রথমবার এসে তারা মাছের পাশাপাশি বড় আকারের মিষ্টি কিনেছিলেন। এবারো তারা ১০ কেজি ওজনের ১টি করে কাতল মাছের আকৃতির মিষ্টি কিনেছেন। কারণ, মেলায় এসে এসব মিষ্টির লোভ সামলানো যায় না।

শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, তিনি সাধারণ মিষ্টির সঙ্গে ৫ কেজি ওজনের একটি মিষ্টি কিনেছেন। এরপর শ্বশুরালয়ে ফিরেছেন।
এসব ব্যক্তিরা বাংলানিউজকে জানান, বড় বড় মিষ্টি কেনা বা খাওয়াটাই মুখ্য ব্যাপার না। মেলা উপলক্ষে সবাই একত্রিত হওয়াটাই বড় উদ্দেশ্য। একসঙ্গে আনন্দ ও উল্লাস করা যায়। কয়েকটি দিন উৎসবে মেতে থাকা যায়।
মেলা উপলক্ষে নানা বাড়িতে বেড়াতে আসা কলেজছাত্র সৌরভ, হাবিব, স্বপ্না বাংলানিউজকে জানান, প্রতি বছরই তারা মেলায় আসেন। পরিবারের সবার সঙ্গে আনন্দ উসব করেন। বড় বড় মাছ ও মিষ্টির স্বাদ উপভোগ করেন। মেলায় এসে তাদের ভীষণ মজা হয় বলেও জানান তারা।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৬
এমবিএইচ/এএসআর
** ৬০ কেজির বাঘাইড়, দাম ৯০ হাজার!