ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

শবনম ফারিয়ার অভিযোগে যা বললেন সাবেক স্বামী

বিনোদন ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২১
শবনম ফারিয়ার অভিযোগে যা বললেন সাবেক স্বামী শবনম ফারিয়া-হারুন অর রশীদ অপু

অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া ভালোবেসে বেসরকারি চাকরিজীবী হারুন অর রশীদ অপুকে বিয়ে করেন। ২০১৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জাঁকালো আয়োজন করে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।

আর ২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর তাদের ডিভোর্স হয়। ওই সময় এই অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন, দু’জনের সম্মতিতেই বিচ্ছেদ হয়েছে।  

তবে বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) এক চাঞ্চল্যকর তথ্য শবনম ফারিয়া সামনে আনেন। সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টের মাধ্যমে তিনি উল্লেখ করেন, স্বামীর নির্যাতনের কারণেই সংসার ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন এ অভিনেত্রী। শুধু নির্যাতনই নয়, হাতও ভেঙে দিয়েছিলেন তার স্বামী।

শবনম ফারিয়ার এমন অভিযোগের পর এবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন অভিযুক্ত তার সাবেক স্বামী হারুন অর রশীদ অপু।  

বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) ফেসবুকে অপু লেখেন, ‘পারিবারিক নির্যাতনের বিষয়টি সত্য নয়। স্পষ্ট প্রমাণ ছাড়া এটা নিছক ঘটনা ভিন্নদিকে প্রবাহিত করার পরিকল্পনা। আমি জানি না, কেন এতদিন পর কেউ এখন অতিরঞ্জিত গল্প ছড়াচ্ছে। ’

শবনম ফারিয়ার অভিযোগের বিষয়ে অপু আরও লেখেন, ‘অভিযোগ দুইদিকেই থাকে, কেউই সন্ন্যাসী লেভেলে থাকি না আমরা। দিনের পর দিন কারো আসমান সমান অভিযোগ থাকলে, আরেকদিকে পাহাড় সমান থাকারই কথা। অভিযোগের পুঁজি করে নিজেকে সাধু সাজিয়ে ভিকটিম হিসেবে প্রকাশ করা অনেকের অভ্যাস হতে পারে। তবে এই পথে এখনও যেতে পারিনি। ’

শবনম ফারিয়ার স্ট্যাটাসের সমালোচনায় অপু লেখেন, ‘পাশে থেকেও শ্রদ্ধা রাখা যায়, দূরে থেকেও। নিজেকে ভিকটিমের মতো উপস্থাপন করে বিভ্রান্তিমূলক মতবাদ আসলেই দুঃখজনক। যখন একটা মানুষকে জনসাধারণ অনুসরণ করে, তার দিক থেকে একটাই কথা মাথায় রাখা উচিত, বড় ক্ষমতার সঙ্গে বড় দায়িত্ব চলে আসে। কেউ যদি সহজেই হাজার হাজার মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে, তারও উচিত সাবলীল ও সৃষ্টিশীল গঠনমূলক কথায় নিজের ইমেজকে বিকাশ করা। ’

অপু লেখেন, ‘যা ইচ্ছে তাই কমেন্ট/স্ট্যাটাস দিয়ে নিজেও রসিকতার পাত্র হয়ে লাভ নেই, আর অন্যকেও হাসির মাঝে ফেলে লাভ নাই। তবুও নিজেকে প্রায়ই এটা বলেই স্বান্তনা দিই যে- হয়তো বিপরীতের মানুষটি অশান্তিতে আছে দেখেই এমন মনোভাব পোষণ করছে। নিজে কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে পরে নিজেই অশান্তিতে থাকলে তখন অনেকেই চেষ্টা করেন বাকি মানুষটাকেও ছোট প্রমাণ করতে। প্রায় সময়ই আমরা অশান্তিতে থাকলে নিজেদের বেসামাল করে কথা বলেই ফেলি। অন্য কেউ ভালো থাকলে আবার টেনে নামানোর চেষ্টাও হয়তো করেন কেউ। আলহামদুলিল্লাহ অনেক শান্তিতে আছি, আল্লাহ এখন পরিবার নিয়ে সুস্থ ও ভালো রেখেছেন। এখন শান্তির ঘুমও হয় রাতে! আল্লাহ সবাইকে বিভিন্ন রকম বিপদ, কষ্ট, অশান্তি ও অসংলগ্ন কথা থেকে মুক্ত থাকার তৌফিক দান করুন, আমীন। ’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ইলমারের নির্যাতনের বিষয়টি টেনে নিজের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা উল্লেখ করেন শবনম ফারিয়া। বৃহস্পতিবার এক স্ট্যাটাসে এই অভিনেত্রী লেখেন, ‘মৃত মেয়েটার ছবি দেখার পর বারবার আমি দেড়/দুই বছর পেছনে ফিরে যাচ্ছিলাম। মনে পড়ছে কীভাবে আমি দেবী সিনেমার পুরো প্রোমোশন ভাঙা হাত নিয়ে করেছি, যখন কেউ জানতে চেয়েছে কী হয়েছে, বলেছিলাম সিঁড়ি থেকে পড়ে ব্যথা পেয়েছি! আমার সাহস ছিল না সবাইকে বলার যে কীভাবে ব্যথা পেয়েছি!’

ফারিয়া লেখেন, ‘কারণ আমি জানতাম এই মানুষটার সঙ্গেই থাকতে হবে, নইলে মানুষ কী বলবে! আমার মা সমাজে মুখ দেখাবে কীভাবে! আমার দুই বোন যে স্বপ্ন নিয়ে এত আয়োজনের প্ল্যান করছে তাদের কি জবাব দেব! কাবিনের তিন মাস না যেতেই এত কিছু! নিশ্চয়ই সমস্যা আমারই! আমি এটা ভেবে দিনের পর দিন জানালা দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে, রাতের পর রাত নির্ঘুম কাটিয়েছি!’ 

তিনি আরও লেখেন, বার বার ভেবেছি কিছু হলে সবাই আমাকেই খারাপ বলবে! কিন্তু আমি খুব সৌভাগ্যবান যে আমার মা আমার সবচেয়ে বড় সাপোর্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে! সাহস দিয়েছে! বুঝিয়েছে মানুষ কি বলে তার চেয়ে নিজের ভালো থাকা আরও অনেক জরুরি! জোর করে বিয়ে টিকিয়ে রাখার চেয়ে বেঁচে থাকা আরও জরুরি!’

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২১
এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।