ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

ভোটার হালনাগাদে তিন বছরের তথ্য একসঙ্গে নেওয়ার পরিকল্পনা ইসির

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২৪
ভোটার হালনাগাদে তিন বছরের তথ্য একসঙ্গে নেওয়ার পরিকল্পনা ইসির

ঢাকা: ভোটার তালিকা হালনাগাদে তিন বছরের তথ্য একসঙ্গে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ২০২৭ সালের ১ জানুয়ারি যাদের বয়স ১৮ হবে তাদের তথ্যও নেওয়া হতে পারে।

ইসি সূত্রগুলো জানিয়েছে, কমিশন না থাকায় ইসি সচিবালয় বাড়িবাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। তবে কমিশন নিয়োগ হলেই যেন কাজ শুরু করতে কোনো অসুবিধা না হয়, সেজন্য আগাম প্রস্তুতি শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

জানাগেছে, ২০২২ সালের ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচিতে তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই কার্যক্রমে সময় দেয়া হয়েছিল তিন সপ্তাহ। তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল বিদ্যমান ভোটারের ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। কার্যক্রম শেষে তথ্য সংগ্রহ দাঁড়ায় ৯ দশমিক ০৮ শতাংশ এবং রেজিস্ট্রেশন হয় ৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে বিভিন্ন ফরম মুদ্রণ, যন্ত্রপাতি ক্রয়, রেজিস্ট্রেশন, ডাটা আপলোড, আঙুলের ছাপ যাচাই, খসড়া ভোটার তালিকা প্রস্তুত, খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ, খসড়া ভোটার তালিকা উপর দাবি/আপত্তি দাখিল ও নিষ্পত্তি, এবং চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের জন্য প্রায় এক বৎসর সময় লেগেছিল। ২০২২ সালেও ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে তিন বছরের ডাটা সংগ্রহ করা হয়।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ নিয়ে বিভিন্ন মতামত ওঠে আসে।  

আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তারা ভোটার তালিকা নির্ভুল করণের জন্য নতুন ভোটার নিবন্ধনের পাশাপাশি মৃত ভোটার কর্তন করা প্রয়োজন মনে করেন। এছাড়া মৃত ভোটার কর্তনের জন্য অনলাইন কিউআর কোড সম্বলিত মৃত্যু নিবন্ধন সনদ সরবরাহের ব্যবস্থা রাখার জন্য প্রস্তাব করেন।

অন্যদিকে দুই বা অধিক বৎসরের জন্য তথ্য নিলে ব্যক্তি জাতীয় পরিচয়পত্র পায় কিন্তু ভোটার তালিকা নাম না থাকার কারণে ভোট দিতে পারে না। ভোট দিতে না পারার কারণে ভোটকেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে। সে জন্য শুধুমাত্র ভোটার যোগ্য ব্যক্তিদের এক বছরের তথ্য নেয়ার উপরও গুরুত্বারোপ করেন অনেক কর্মকর্তা।

আলোচনার পর ইসি সচিব শফিউল আজিম লিখিত নির্দেশনায় তিন বছরের তথ্য নেওয়ার প্রস্তুতি রাখতে বলেন। নির্দেশনায় তিনি বলেন, অনলাইন কিউআর কোড সম্বলিত নাগরিকত্ব সনদ, জন্ম নিবন্ধন সনদ ও মৃত্যু নিবন্ধন সনদের জন্য স্থানীয় সরকারকে চিঠি দিতে হবে। যে কোনো সময় ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার জন্য সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এখন থেকেই সকল বিষয়ে প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম শুরু করতে হবে। এক্ষেত্রে ১ বা ২ বা ৩ বছরের তথ্য সংগ্রহ করলে তার জন্য পৃথক পৃথক সময়সূচি ও কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।

অন্যদিকে ভোটার নিবন্ধন কাজে মাঠ পর্যায়ের কার্যালয়ে রক্ষিত যন্ত্রপাতির হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ, ভোটার নিবন্ধন কাজে মাঠ পর্যায়ের কার্যালয়ে রক্ষিত অকেজো যন্ত্রপাতি মেরামতের ব্যবস্থা নিতেও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন তিনি।

বর্তমানে দেশে ভোটার রয়েছে ১২ কোটি ১১ লাখ। অন্তর্বর্তী সরকার সংসদ নির্বাচন দিলে হালনাগাদ তালিকা দিয়ে ভোট করবে ইসি। এজন্য বাড়ি বাড়ি হালনাগাদের মতো বড় কর্মসূচি নিতে হবে।

এ নিয়ে ইসি সচিব শফিউল আজিম বলেন, এখন তো কমিশন নেই। বাড়িবাড়ি হালনাগাদের জন্য কমিশনের প্রয়োজন হবে। তবে আমরা আমাদের প্রস্তুতি গুছিয়ে রাখছি।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ৫ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করেন কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন। এরপর থেকেই থেকেই নির্বাচন আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষটি চলছে সচিবের নেতৃত্বে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৪ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২৪
ইইউডি/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।