ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

রাজশাহীর ছয় আসনে জামানত হারালেন যারা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০২৪
রাজশাহীর ছয় আসনে জামানত হারালেন যারা

রাজশাহী: রাজশাহীতে জামানত হারিয়েছেন ৩১ জন। এরমধ্যে আলোচিত চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিও রয়েছেন।

রোববার (৭ জানুয়ারি) রাজশাহীর ছয়টি সংসদীয় আসনে ৭৭০টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। মোট ৪২ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে পাঁচটিতেই জয় পেয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থীরা। কেবল একটিতে নির্বাচিত হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী। যদিও তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রথম সারির নেতা। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে নেমে জয় লাভ করেছেন তিনি। তাই নির্বাচিত এবং নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীসহ ছয়টি আসনে ১১ জন প্রার্থী ছাড়া কেউই জামানতের টাকা ফেরত পাবেন না।

জানতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানান, নিয়ম অনুযায়ী সংসদ সদস্য নির্বাচনের জন্য প্রত্যেক প্রার্থীর কাছ থেকেই আগাম ২০ হাজার টাকা করে জামানত নিয়ে রাখে নির্বাচন কমিশন। জামানতের এই টাকা ফিরে পেতে হলে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় যে পরিমাণ ভোট পড়ে তার সাড়ে ১২ শতাংশ ভোট প্রার্থীকে পেতে হয়। তবে রাজশাহীর মোট ৪২ প্রার্থীর মধ্যে ৩১ জনই সাড়ে ১২ শতাংশ করে ভোট পাননি। তাই নির্বাচনী জামানত হারান এসব প্রার্থীরা।

এদিকে প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে মোট ভোট পড়ে ২ লাখ ১৯ হাজার ৭৯৩টি। জামানত ফিরে পেতে হলে প্রার্থীকে ২৭ হাজার ৪৭৫টি ভোট পেতে হতো। তবে এই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি পেয়েছেন ৯ হাজার ৯ ভোট। ফলে তিনি জামানত হারান। এই আসনের বিজয়ী নৌকার প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী ও নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রাব্বানী জামানত ফেরত পাবেন। এ আসনে জামানত হারিয়েছেন এনপিপি প্রার্থী নুরুন্নেসা, বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের বশির আহমেদ, বিএনএফের আল সাআদ, তৃণমূল বিএনপির জামাল খান দুদু, বিএনএমের মো. শামসুজ্জোহা, জাতীয় পার্টির মো. শামসুদ্দীন, আয়েশা আখতার জাহান ডালিয়া ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আখতারুজ্জামান।

রাজশাহী-২ (সদর) আসনে ভোট পড়েছে ৯৩ হাজার ৪৪৩। জামানত রক্ষা করতে হলে প্রয়োজন ছিল ১১ হাজার ৬৮১ ভোট। তাই এই আসনের পাঁচজন জামানত হারিয়েছেন। তারা হলেন- জাসদের প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মাসুদ শিবলী, বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের ইয়াসির আলিফ বিন হাবিব, বিএনএমের কামরুল হাসান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মারুফ শাহরিয়ার ও জাতীয় পার্টির সাইফুল ইসলাম স্বপন। ৫৫ হাজার ১৫৬ ভোট পেয়ে এখানে নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশা ৩১ হাজার ৪৬০ ভোট পাওয়ায় জামানত পাবেন। ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই আসনে তিনি টানা তিনবার সংসদ সদস্য ছিলেন।

রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে বিপুল ভোটে জয় পেয়েছেন নৌকার প্রার্থী আসাদুজ্জামান আসাদ। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী না থাকায় তিনি ছাড়া এ আসনের অন্য ৫ প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন। আসনটিতে মোট ভোট পড়েছে ১ লাখ ৭৩ হাজার ৫৩৪। আসাদ একাই পেয়েছেন ১ লাখ ৫৪ হাজার ৯০৯ ভোট। ফলে জামানত হারান বিএনএমের ভাইস চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি, জাতীয় পার্টির আব্দুস সালাম খান, বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের এনামুল হক, বিএনএফের বজলুর রহমান ও এনপিপির সইবুর রহমান। জামানত ফিরে পেতে হলে তাদের প্রত্যেকের ২১ হাজার ৬৯১ ভোট প্রয়োজন ছিল।

রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদও বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছেন। এই আসনের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য এনামুল হককে হারিয়েছে তিনি। তাই এই দুজন ছাড়া অন্য চার প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন। তারা হলেন-এনপিপির জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, জাতীয় পার্টির আবু তালেব প্রামাণিক, বিএনএমের সাইফুল ইসলাম রায়হান ও স্বতন্ত্র বাবুল হোসেন। মোট ভোট পড়েছে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৪৭৯টি। এখানে নির্বাচনী জামানত রক্ষার জন্য পাওয়ার প্রয়োজন ছিল ২১ হাজার ৬০ ভোট।

রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে ৩ হাজার ৫১ ভোটে স্বতন্ত্র ওবায়দুর রহমানকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন নৌকার প্রার্থী আবদুল ওয়াদুদ দারা। এখানে মোট ভোট পড়েছে ১ লাখ ৭৩ হাজার ৭৪৯।

জামানত ফিরে পেতে এই প্রার্থীদের প্রয়োজন ছিল ২২ হাজার ২১৯ ভোট। তবে জাতীয় পার্টির আবুল হোসেন, সুপ্রিম পার্টির আলতাফ হোসেন মোল্লা, বিএনএমের প্রার্থী শরিফুল ইসলাম ও গণফ্রন্টের মখলেসুর রহমান তা পাননি। ফলে জামানত হারিয়েছেন তারা।

রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে ভোট পড়েছে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৭৪৯। জামানত রক্ষার জন্য প্রয়োজন ২২ হাজার ২১৯ ভোট। এ আসনে জামানত হারিয়েছেন জাসদের জুলফিকার মান্নান জামি, বিএনএমের আবদুস সামাদ, এনপিপির মহসিন আলী ও জাতীয় পার্টির শামসুদ্দীন রিন্টু। তারা ২০০ থেকে ৮০০ ভোট পেয়েছেন। নৌকা নিয়ে এই আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ১ হাজার ৫৯৯ ভোট। স্বতন্ত্র রাহেনুল হক পেয়েছেন ৭৪ হাজার ২৭৮ ভোট।

এছাড়া নির্বাচনী জামানত হারানো ৩১ প্রার্থীর মধ্যে রাজশাহী-৬ আসনের শামসুদ্দীন রিন্টু ও রাজশাহী-১ আসনের আখতারুজ্জামান প্রতীক বরাদ্দের পর নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০২৪
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।