ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

১৫ বছরের সাফল্য গাথা প্রচার করতে চায় ইসি

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৩
১৫ বছরের সাফল্য গাথা প্রচার করতে চায় ইসি

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতিবেদন এখনো প্রকাশ করতে না পারলেও গত ১৫ বছরের সাফল্য গাথা প্রচার করতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এজন্য সব শাখা/অধিশাখাকে ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সাফল্যজনক কার্যক্রমের প্রতিবেদন তৈরি করতে বলেছে সংস্থাটি।

 

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ছয়টি অনুবিভাগ, একটি ইনস্টিটিউট ও ৬৩টি শাখা/অধিশাখার প্রধানদের দু’বার প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। প্রথমবার নির্দেশনা দেওয়া হয় গত ৯ আগস্ট। কিন্তু শাখা প্রধানদের তেমন সাড়া পড়েনি। মাত্র তিনটি শাখা প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ফলে ১৭ সেপ্টেম্বর ফের তাগাদা দেয় ইসি।

এ সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ও সচিবালয়ের ২০০৯-২০২৩ সময়ের সাফল্যজনক প্রতিবেদন প্রকাশের লক্ষ্যে সব শাখা/অধিশাখা থেকে প্রতিবেদন আকারে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি চাওয়া হলেও শুধু তিনটি শাখা ব্যতীত অদ্যাবধি কোনো শাখা/অধিশাখা থেকে প্রতিবেদন/তথ্যাদি পাওয়া যায়নি। প্রয়োজনীয় প্রতিবেদন/তথ্যাদি না পাওয়ায় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ও সচিবালয়ের ২০০৯-২০২৩ সময়ের সাফল্যজনক প্রতিবেদন প্রকাশের কাজ ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

এই অবস্থায় আগামী ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সাফল্যজনক প্রতিবেদন প্রকাশের লক্ষ্যে চাহিত প্রতিবেদন (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ছবিসহ) জমা দেওয়ার জন্য সময় বেঁধে দিয়েছে ইসি।
এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানিয়েছেন, মন্ত্রিপরিষদ থেকে সাফল্যজনক কাজের প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছিল। সে অনুযায়ী, প্রতিবেদন তৈরির জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১৫ বছরের সাফল্য গাথা প্রতিবেদন আকারে প্রচার করা হবে। এক্ষেত্রে মিডিয়াকেও জানানোর পরিকল্পনা রয়েছে। কেননা, এই সময়ে আইন সংশোধনসহ বেশ কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। আবার অনেক কর্মকাণ্ডের জন্য আলোচিত-সমালোচিতও হয়েছে।

গত ১৫ বছরের মোটাদাগে বেশ কিছু সংস্কার আনা হয়েছে ইসির। এগুলো মধ্যে কমিশন নিয়োগের জন্য আইন প্রণয়ন, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা, জনবল বৃদ্ধি, স্থানীয় সরকারের পাশাপাশি জাতীয় সংসদের নির্বাচনেও সীমিত পরিসনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব প্রদান, স্থানীয় নির্বাচন দলীয়ভাবে আয়োজন, নিজস্ব অবকাঠামো সৃষ্টি, ভোটার তালিকা ও রোহিঙ্গাদের সার্ভার এবং এনআইডি তথ্যভাণ্ডার, রাজনৈতিক ও পর্যবেক্ষণ নিবন্ধন আইন প্রভৃতি।

ইতিবাচক এসব পরিবর্তনের পাশাপাশি নানা উদ্যোগের কারণে সমালোচিত-আলোচিতও হয়েছে কমিশন। মূলত ২০১২ সালে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচন; যেখানে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৩ জন নির্বাচিত হয়ে অতীতের সব রেকর্ড ভাঙ্গেন, সেই সময়ে উপজেলা নির্বাচনের সহিংসতা নিয়ন্ত্রণের ব্যর্থতা কমিশনকে বেকায়দায় ফেলে। পরবর্তীতে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবস্থাপনা সরকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন নেওয়ার কার্যক্রম হাতে নিলেও কমিশনের নীরব ভূমিকা, সংসদ নির্বাচনের প্রশিক্ষণের নামে হরিলুট, স্থানীয় নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতদের অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ, নির্বাচনী প্রতিবেদন প্রকাশ না করে নিজেদের সাফল্য গাথা প্রচার ইত্যাদির কারণেও সমালোচনার মুখে পড়ে কেএম নূরুল হুদার কমিশন।  

এদিকে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন আইন সংস্কারে নিজেদের ক্ষমতা খর্ব করার তর্কে জড়িয়ে পড়েন। অন্যদিকে তাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে দৃঢ়তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। বিশেষ করে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় একজন সংসদ সদস্যকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে পরবর্তীতে পিছু হটে কমিশন। গাইবান্ধা-৫ উপ-নির্বাচনে অনিয়মে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারা, সংলাপের আয়োজন করলেও অংশীজনের মতামতকে প্রাধান্য না দেওয়া প্রভৃতি।

এছাড়া গত ১৫ বছরে সকল কমিশনের বিরুদ্ধেই স্মার্টকার্ড জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানে সফল না হওয়া, এনআইডি নিয়ে ভোগান্তির হ্রাসে সফল না হওয়ায় অভিযোগও রয়েছে। আবার ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের মতো ব্যয়বহুল প্রকল্প নিয়েও রয়েছে সমালোচনা।  

বাংলাদেশ সময়: ২০১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৩
ইইউডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।