জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মনোয়ার হোসেন জঙ্গলগ্লোরী থাউমেনটিস ডিওরিস (Thaumantis diores) নামক একটি সৌর প্রজাপতি পুনঃআবিষ্কার করেছেন। প্রায় ১৩২ বছর পর এই প্রজাপতিটি পূনরায় আবিষ্কার করলেন তিনি।
এর আগে ১৮৪৫ সালে সিলেটে প্রথম এই প্রজাপতিটি আবিস্কার করেছিলেন বিজ্ঞানী ডাবলডে(Doubleday) এবং ১৮৮২ সালে ব্রিগেডিয়ার মার্শাল ও নেসেভিলে পুনরায় সিলেটের বনাঞ্চল থেকে এটি আবিষ্কার করেন।
অধ্যাপক মনোয়ার জানান, গত ৩০ মার্চ তিনি বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত একটি প্রজেক্ট ‘আইইউসিএন আপডেটিং স্পেসিস রেডলিস্ট অব বাংলাদেশ’সাথে একটি প্রজাপতি বিষয়ক গবেষণা দল নিয়ে বান্দারবানের থানচির গহিন বনাঞ্চল থেকে

জঙ্গলগ্লোরী থাউমেনটিস ডিওরিস নামক এই বিরল সৌরশক্তি সমৃদ্ধ প্রজাপতিটি পুনঃআবিষ্কার করা হয়। এ সময় বিশিষ্ট বন্যপ্রাণি বিশারদ ড. রেজা খান এ গবেষণা দলে উপস্থিত ছিলেন।
পুনঃআবিস্কৃত প্রজাপতিটির ডানার দৈর্ঘ্য ৯৫-১১৫ মিলি মিটার এবং দেখতে গাঢ় বাদামী রঙের। উপরের পাখায় খুব উজ্জল গাঢ় নীলাভ রঙের রশ্মির দুটি ছটার বিচ্ছুরণ চোখে পড়ে। প্রজাপতিটি জোরে জোরে ঝাঁকি দিয়ে জঙ্গলের পাতা ও ছোট ছোট কান্ডের মাঝখান দিয়ে উড়ে চলে। বাংলাদেশে এর জীবনচক্র ও অন্যান্য জৈবনীক কার্যক্রম এখনও অজানা বলে জানান তিনি।
জাপান ও চায়নার একদল বিজ্ঞানী ২০০৯ সালে এই একই প্রজাতির প্রজাপতি নিয়ে সৌর শক্তি বিষয়ক (সৌর কোষীয়) গবেষণা করেছেন। এই প্রজাপতির পাখনা স্কেলের গঠন। যাতে সৌরশক্তি ধারণ ও তা থেকে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে। যা তাদের অতি দ্রুত উড়তে ও মাংসপেশী সঞ্চালনের জন্য সহায়ক বলে জানা যায়।
বিজ্ঞানীরা এ প্রজাপতির পাখার স্কেলের গঠন ও রংয়ের বিন্যাসকে বানিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করে বিভিন্ন বৈদ্যুতিক যন্ত্র ও অন্যান্য সৌর শক্তি প্লাণ্টে ব্যবহারের জন্য কাজ করছেন এবং সফলতা অর্জন করেছেন। এই রংয়ের যে উজ্জলতা তা কমিয়ে-বাড়িয়ে সামরিক যুদ্ধবিমানে ব্যবহারেও বিজ্ঞানীরা আশাবাদী এবং এনিয়েও কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান ড. মনোয়ার।

ড. মনোয়ার জানান, ইতোমধ্যে বাংলাদেশে ৩শ টিরও বেশি প্রজাপতি আবিষ্কার হয়েছে। আমাদের দেশে এখনো অনেক প্রজাপতি আছে এবং এধরণের প্রজাপতি আবিষ্কার ও গবেষণার মাধ্যমে আমরা দেশের বৈদ্যুতিক যন্ত্র ও অপরাপর সৌরশক্তির প্লাণ্টগুলোতে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে দেশকে সমৃদ্ধ করতে পারি। এ বিষয়ে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ও অর্থায়ন এ গবেষণাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য খুবই জরুরি।
বাংলাদেম সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৪