ঢাকা, বুধবার, ১ মাঘ ১৪৩১, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪ রজব ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

পাকিস্তানের সঙ্গে পিটিএ-এফটিএ করার তাগিদ ডিসিসিআই’র

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২৫
পাকিস্তানের সঙ্গে পিটিএ-এফটিএ করার তাগিদ ডিসিসিআই’র ‘বাংলাদেশ-পাকিস্তান বিজনেস ফোরাম’ শীর্ষক দ্বিপাক্ষিক মতবিনিময় সভা

ঢাকা: নানা জটিলতায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছায়নি। এজন্য পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে ‘বাংলাদেশ-পাকিস্তান বিজনেস ফোরাম’ শীর্ষক দ্বিপাক্ষিক মতবিনিময় সভায় এ আহবান জানানো হয়।

বাংলাদেশে সফররত পাকিস্তানের বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সৌজন্যে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

সভায় ফেডারেশন অব পাকিস্তান চেম্বারর্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফপিসিসিআই) সভাপতি আতিফ ইকরাম শেখের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করে।

ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দুদেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৬৮৯.৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৬২৭.৭৮ মিলিয়ন ও ৬১.৯৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যার মধ্যে ওষুধ, অর্গানিক কেমিক্যাল, চামড়াজাত পণ্য, প্লাস্টিক এবং কৃষিপণ্য উল্লেখযোগ্য।  

তিনি বলেন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের প্রচুর সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ভিসা প্রাপ্তিতে জটিলতা, শুল্ক বিষয়ক প্রতিবন্ধকতা, পণ্য পরিবহনে সরাসরি যোগাযোগ স্বল্পতা ও বন্দর সুবিধার অপর্যপ্ততার কারণে দুদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এখনও কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছায়নি, যা নিরসন একান্ত অপরিহার্য।

দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তিনি পিটিএ এবং এফটিএ স্বাক্ষরের প্রস্তাব করেন ডিসিসিআই সভাপতি।

ফেডারেশন অব পাকিস্তান চেম্বারর্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফপিসিসিআই) সভাপতি আতিফ ইকরাম শেখ বলেন, প্রচুর সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এখনও কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছায়নি।

তিনি জানান, বাংলাদেশে পাকিস্তানের মোট রপ্তানির প্রায় ৫৫ শতাংশ আসে টেক্সটাইল ও পোশাক খাত থেকে। অপরদিকে বাংলাদেশের রপ্তানির সিংহভাগই নির্ভর করে তৈরি পোশাক খাতের ওপর, তাই আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে আরও নতুন পণ্য সংযোজনের সুযোগ রয়েছে।

পাকিস্তান থেকে কৃষি পণ্য, চাল, সিরামিকসহ অন্যান্য পণ্য আরও বেশি হারে আমদানির জন্য বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান আতিফ ইকরাম শেখ।

তথ্য-প্রযুক্তি ও মোবাইল ফিন্যান্সিং খাতে সম্প্রতি বাংলাদেশ বেশ উন্নতি করেছে উল্লেখ করে আতিফ ইকরাম বলেন, বিশেষ করে তথ্য-প্রযুক্তি খাতে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা যৌথ বিনিয়োগে কাজ করতে পারেন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ বলেন, সম্প্রতি সমুদ্রপথে দুই দেশের পণ্য পরিবহন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বাণিজ্য ও বিনিয়োগে এ ধরনের ইতিবাচক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে সক্ষম হবে।

এফপিসিসিআই’র ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি সাকিব ফায়াজ মাগুন বলেন, দেশ দুটির বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়নে দুই দেশের বাণিজ্য সংগঠনগুলোর কার্যক্রম আরও জোরাদার করতে হবে।

দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের ওপর জোরারোপ তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যকার পণ্য আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ যত বেশি হবে, পণ্যের মূল্য তত হ্রাস পাবে।

ডিসিসিআই’র ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী উভয় দেশের তরুণ জনগোষ্ঠীর উদ্ভাবনী সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বাংলাদেশের হাইটেক পার্কে পাকিস্তানের তথ্য-প্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

মতবিনিময় সভা শেষে অনুষ্ঠিত বিজনেস টু বিজনেস (বিটুবি) সেশনে পাকিস্তানের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ডিসিসিআই’র সদস্যভুক্ত শতাধিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। ডিসিসিআই সহ-সভাপতি মো. সালেম সোলায়মানসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২৫
জিসিজি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।