ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

পশ্চিমবঙ্গে জামাই ষষ্ঠী

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৫ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৭
পশ্চিমবঙ্গে জামাই ষষ্ঠী জামাই ষষ্ঠী

কলকাতাঃ বুধবার (৩১ মে) পশ্চিমবঙ্গের ঘরে ঘরে পালিত হচ্ছে জামাই ষষ্ঠী। এ উপলক্ষে জামাইরা তাদের শ্বশুর বাড়িতে উপস্থিত হয়েছেন। এ প্রথার মাঙ্গলিক দিকটি বাদ দিলে বড় হয়ে সামনে আসে খাওয়া-দাওয়ার উৎসবটি।

ভোজন রসিক বাঙালির কাছে তাই এই উৎসব অতি প্রিয়। হিন্দুরা ষষ্ঠী পূজা করেন মূলত সন্তান-সন্ততিদের মঙ্গল কামনায়।



ষষ্ঠী হিন্দুধর্মের এক লৌকিক দেবী। যাকে প্রাচীন কাল থেকেই আরাধনা করে আসছেন হিন্দু নারীরা।

প্রথা অনুযায়ী, জামাই ষষ্ঠীর দিন শাশুড়ি উপবাস করে আমের পল্লব, পাঁচটি ফল, করমচা, হাত পাখা সহযোগে জামাই এবং কন্যার মঙ্গল কামনায় ব্রত রাখেন। এরপর চলে মিষ্টি, পাঁচটি ফল সহযোগে জামাইকে আপ্যায়ন।

তবে মিষ্টি ও পাঁচটি ফলের বিষয়টি শাস্ত্রে উল্লেখ থাকলেও আপ্যায়নের সীমা বিস্তৃত হয় বিভিন্ন খাবার এবং উপহারে।

পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নভাবে জামাই ষষ্ঠীর  মাঙ্গলিক বিধি পালন করা হয়।

কোথায় শাশুড়ি পুকুর জলে নেমে আবার কোথাও ব্রতীরা কন্যা ও জামাইদের হাতে সুতো বেঁধে মঙ্গল কামনা করেন।

প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রেই বিবাহিত কন্যা এবং জামাইয়ের সঙ্গে বাড়ির অন্যান্য সন্তানদের একই উপাচারে মঙ্গল কামনা করা হয়।

ষষ্ঠী লৌকিক দেবী হওয়ায় স্থান ভেদে বিভিন্ন মাঙ্গলিক আচারের বিভিন্ন পরিবর্তন দেখা যায়। তবে সব কিছু ছাড়িয়ে সামনে চলে আসে উৎসবের খাওয়া-দাওয়ার অংশটি।

শ্বশুর মহাশয়রা আগে থেকেই বাজার থেকে জামাইয়ের পছন্দ মতো খাবার কিনে আনেন।

এতে থাকে ইলিশ, চিংড়ি, রুই, কাতলা, মাংস এবং নানা ধরনের সুস্বাদু তরকারি। এছাড়াও থাকে পাঁচ রকমের ভাজা, দই, মিষ্টি, ফল ইত্যাদি।
পশ্চিমবঙ্গের জামাই ষষ্ঠী হিসেবে নতুন নতুন মিষ্টি তৈরি করেন বিক্রেতারা।

এ সবের সঙ্গে থাকে  উপহার লেনদেনের বিষয়টি। একদিকে যেমন জামাইদের উপহার দেন শ্বশুর এবং শাশুড়িরা। ঠিক তেমনভাবেই জামাইরাও নানা উপহার নিয়ে আসেন শ্বশুর বাড়ির সদস্যদের জন্য।

তবে ইদানিং কালে ধুতি পাঞ্জাবি পরে হাতে আম, বড় মাছ ও মিষ্টির হাঁড়ি নিয়ে জামাইদের আর দেখা যায় না। অনেক ক্ষেত্রেই জামাইরা পেশাগত কারণে দূরে থাকেন এবং তাদের পক্ষে আসা সম্ভব হয়ে ওঠে না।

বর্তমান সময়ে  অফিস থেকে জামাই ষষ্ঠীর ছুটি পাওয়ার সুযোগ থাকে না। তাই অনেকেই কাজ সেরে তবেই শ্বশুর বাড়ির দিকে রওনা দেন। আবার অনেকে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে খাওয়া-দাওয়ার বন্দোবস্ত করেন।

কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলের বেশ কিছু রেস্তোরাঁতেও শাশুড়িদের চাপ কমিয়ে জামাই ষষ্ঠীর বিশেষ আয়োজন করা হয়। বাঙালি রান্নার স্বাদে তারা আপ্যায়ন করতে চান জামাইদের। জানা যাচ্ছে, অনেকেই এই রেস্তোরাঁগুলোতে আগাম বুকিং করে রেখেছেন।
 
সময় সুযোগের কিছুটা ঘাটতি থাকলেও জামাই ষষ্ঠী ঘিরে উৎসাহের অভাব নেই। ধুতি-পাঞ্জাবি পরা জামাইদের পথে দেখা না গেলেও উপহারের থলি নিয়ে জিনস এবং টি শার্ট পরা জামাইদের দেখা যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি অঞ্চলে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৭
এসএস/জেডএম
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।