ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে ভারতে ভোটের তফসিল, চলছে প্রস্তুতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৪
মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে ভারতে ভোটের তফসিল, চলছে প্রস্তুতি

কলকাতা: আগামী মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে ভারতে সংসদ নির্বাচনের (লোকসভা ভোট) তফসিল ঘোষণা হতে চলেছে। একইসঙ্গে দেশটির কয়েকটি রাজ্যে হবে বিধানসভা নির্বাচন।

 

এদিকে যেমন প্রধানমন্ত্রীর পদে নির্বাচন, অন্যদিকে সংসদ ভোটের সঙ্গে অন্ধ্রপ্রদেশ, অরুণাচল প্রদেশ, উড়িষ্যা ও সিকিমে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে।

জানা গেছে, মার্চের ৯ তারিখের পর যেকোনো দিন সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে পারে নির্বাচন কমিশন। একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী পদে ভোট হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে।  

দেশটির নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, গত সংসদ নির্বাচনের মতোই ২০২৪ এর নির্বাচনের ক্যালেন্ডার তৈরি হতে পারে। গত নির্বাচনে (২০১৯) তফসিল ঘোষণা হয়েছিল ১০ মার্চ। ভোট হয়েছিল সাত ধাপে। শুরু হয়েছিল ১১ এপ্রিল। ভোট পর্ব চলেছিল ১৯ মে পর্যন্ত।  

এবারো সেই পথেই হাটতে চলেছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। আর সেই নির্বাচনের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে প্রতিটি রাজ্যে ব্যস্ত সফর শুরু করেছে নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিদল।  

প্রস্তুতি শেষ হবে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরের সফরের মধ্য দিয়ে। সেখানকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং বাহিনীর উপস্থিতি পরীক্ষা করার জন্য ৮-৯ মার্চ কমিশন বৈঠক করবে জম্মু কাশ্মীরের সরকারি কর্তাদের সঙ্গে।  

জানা যাচ্ছে, পরে আগামী ১২ ও ১৩ মার্চ আবার জম্মু-কাশ্মীর সফর করবেন নির্বাচন কমিশনের কর্তারা। সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটিতে বিধানসভা নির্বাচন করা যায় কি না, মূলত সে ইস্যুতে সেখানকার মাঠ পর্যায়ের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন তারা।

পাশাপাশি ভোটের সব প্রস্ততি শুরু করে দিয়েছে কমিশন। ভোটারদের আঙুলে যে কালি ব্যবহার করা হয়, তাও একপ্রকার প্রস্তুত।

বিশেষ কালি প্রস্তুতকারক সংস্থা মাইসোর পেইন্টস অ্যান্ড বার্নিশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইরফান জানান, মোট সাড়ে ২৬ লাখ ভায়াল অর্ডার দেওয়া হয়েছে। যারমধ্যে ৬৫ শতাংশ ভায়াল বিভিন্ন রাজ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ২০ মার্চের মধ্যে পুরো অর্ডার সরবরাহ করা সম্পন্ন হবে। একটি ভায়াল (১০মিলি) দিয়ে ৭০০ জন ভোটারের আঙুলে কালি দেওয়া যায়।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এবার মোট ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৯৭ কোটি। ভোটগ্রহণের জন্য ভারতে ১২ লাখের বেশি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র খোলা হবে। প্রসঙ্গত, প্রতি কেন্দ্রে আনুমানিক এক হাজার ২০০ ভোটার ভোট দিয়ে থাকেন। এ ছাড়া ভোটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে কেন্দ্রীয় বাহিনী (সশস্ত্র সেনা) হিসেবও ঠিক করে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এবারের সংসদ ভোটে পশ্চিমবঙ্গের জন্য সবচেয়ে বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হচ্ছে, যা জম্বু ও কাশ্মীরের চেয়েও বেশি। ১৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এবারের সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পশ্চিমবঙ্গে তারা ৯২০ কোম্পানি (এক কোম্পানি সমান ১০০ জন) কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে চায়। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

গত সংসদ ভোটে (২০১৯) পশ্চিমবঙ্গে মোতায়েন করা হয়েছিল ৭৪০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। এবার রাজ্যটির ৪২ আসনের জন্য তা বেড়ে হয়েছে ৯২০ কোম্পানি। বাংলার পরই রয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর। কাশ্মীরের জন্য ৬৩৫ কোম্পানি বাহিনী চাওয়া হয়েছে। তবে বাংলার থেকে অনেক বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশের জন্য চাওয়া হয়েছে মাত্র ২৫২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। এ ছাড়া বিহার ও ছত্তিশগড় রাজ্য দুটিতে যথাক্রমে ২৯৫ ও ৩৬০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া সংসদ ভোটের সঙ্গেই ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ, অরুণাচল প্রদেশ, উড়িষ্যা ও সিকিমে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। কমিশন কেন্দ্রকে জানিয়েছে, অন্ধ্রপ্রদেশ ও উড়িষ্যার জন্য ২৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চায় তারা। অরুণাচল প্রদেশ ও সিকিমের জন্য যথাক্রমে ৭৫ ও ১৭ কোম্পানি বাহিনী প্রয়োজন। এ ছাড়া ঝাড়খণ্ড ও পাঞ্জাব রাজ্যের জন্য ২৫০ কোম্পানি বাহিনী চেয়েছে কমিশন। পাশাপাশি গোষ্ঠী-হিংসায় বিধ্বস্ত মণিপুরের জন্য কমিশন চেয়েছে ২০০ কোম্পানি। গুজরাটের জন্য চাওয়া হয়েছে ২০০ কোম্পানি বাহিনী।

ফলে সব মিলিয়ে ভোটের চরম প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। আর কিছুদিনের মধ্যেই রাজ্যগুলোয় আসতে শুরু করবে ইলেকট্রনিক ভোটার মেশিন -ইভিএম। এর হিসাবও কয়েকদিনের মধ্যে প্রকাশ করবে কমিশন।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৪
ভিএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।