ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

তীব্র গরমে ক্লান্ত কলকাতাবাসী, সঙ্গে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও পানীয় জলের সমস্যা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২৩
তীব্র গরমে ক্লান্ত কলকাতাবাসী, সঙ্গে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও পানীয় জলের সমস্যা কলকাতা শহরেও দাবদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। ছবি: বাংলানিউজ

কলকাতা: অত্যধিক তাপে পুড়ছে কলকাতা। তীব্র গরম শুরু হয়েছে বুধবার (১২ এপ্রিল) থেকে।

তারপর থেকে টানা ৬ দিন ধারাবাহিক তাপপ্রবাহ চলছে কলকাতায়। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির আশপাশে।  

মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) কলকাতা আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে এমনই পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলেন শহরবাসী। সেবার টানা ৮ দিন ৪০ ডিগ্রির আশপাশে ছিল কলকাতার তাপমাত্রা। অর্থাৎ, আগামী শুক্রবার (২০ এপ্রিল) পর্যন্ত এমন পরিস্থিতি চললেই ভেঙে যাবে ৭ বছর আগেকার সেই নজির।

হাওয়া অফিসের রিপোর্ট বলছে, আগামীকাল এবং পরশু এমনই তাপপ্রবাহ চলতে পারে কলকাতায়। ফলে টানা গরমের নতুন নজির সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বস্তুত, মঙ্গলবারও (১৮ এপ্রিল) শহরের তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে রোদের তেজ। রাজ্যের দক্ষিণের জেলাগুলোর পরিস্থিতি আরও খারাপ। আপাতত হাওয়া অফিসের তরফে কোনও স্বস্তির খবর নেই।  ইতোমধ্যে, কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় শুক্রবার (২১ এপ্রিল) পর্যন্ত তাপপ্রবাহের কারণে ‘কমলা সতর্কবার্তা’ জারি রয়েছে।

বাঁকুড়া, শ্রীনিকেতনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গিয়েছে। দুই মেদিনীপুর, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, হুগলি, হাওড়া, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ জেলাও প্রবল দাবদাহের কবলে পড়েছে। দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের তিন জেলা- মালদা ও দুই দিনাজপুর গত কয়েকদিন ধরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির আশপাশে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষিত রাখতে সোমবার (১৭ এপ্রিল) থেকে একসপ্তাহ রাজ্যের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার।

এরইমধ্যে তীব্র গরমে গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও পানীয় জলের সমস্যা। শহর ও শহরতলির বিভিন্ন এলাকায় ধাপে ধাপে চলছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। যার জেরে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ মানুষের। অপরদিকে গরমের মধ্যে পাড়ায় পাড়ায় পানীয় জলের হাহাকার। সেই সঙ্গে লোডশেডিং। এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা শিশু ও প্রবীণদের। বিনিদ্র রাত কাটাচ্ছেন অনেকেই। এমনকি, বাসায় টিকতে না পেরে অনেকে ফুটপাতে গিয়েও শুচ্ছেন অনেকে। রোগীদের অবস্থা আরও কাহিল। বেলঘরিয়া, নিমতা, দক্ষিণেশ্বর, সিঁথি, হরিদেবপুর, বাঘাযতীন ও বেহালার বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের নাজেহাল অবস্থা।

কেন হচ্ছে এমন বিদ্যুৎ-বিভ্রাট? ক্যালকাটা ইলেট্রিক সাপ্লাই (সিইএসসি)-এর এক শীর্ষস্থানীয় কর্তা বলেছেন, বিদ্যুৎ আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। এটা বিদ্যুৎ ঘাটতির বিষয় নয়। আসলে গত কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা প্রচণ্ড বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদাও বেড়ে গিয়েছে। তাই সাধারণ মানুষের এমনিতে যতটা পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন, তারথেকে কয়েক গুণ বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে। যারা একটি এসি চালান, তারা বাসায় একাধিক এসি চালাচ্ছেন। সেই সঙ্গে বৈদ্যুতিক সামগ্রী বেশি করে ব্যবহার করায় যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। অনেকেই যতটা বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য আবেদন করেছেন, তার থেকে কয়েকগুণ বেশি ব্যবহার করছেন। সেই কারণেই কিছু এলাকায় এই বিভ্রাট দেখা দিয়েছে।

তবে শীঘ্রই স্বস্তি মিলতে পারে রাজ্যের উত্তরবঙ্গের কিছু জেলায়। শুক্রবার (২১ এপ্রিল) কয়েক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়া অফিস কর্মকর্তা গণেশ দাস জানিয়েছেন, হিমালয় সংলগ্ন উত্তরবঙ্গে আগে বৃষ্টি শুরু হবে। ২২-২৪ এপ্রিলের মধ্যে কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির দেখা মিলতে পারে। তবে এই ঝড়বৃষ্টির তীব্রতা কতটা হবে বা কতদিন ধরে চলবে, তা নিয়ে এখনই নির্দিষ্ট পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানান, গণেশ দাস।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, এপিল ১৮, ২০২৩
ভিএস/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।