ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

৪০ বছর পরও বন্ধুদের আড্ডা আগের মতোই

মোহাম্মদ আজহার, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৩
৪০ বছর পরও বন্ধুদের আড্ডা আগের মতোই ...

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: বয়সের কোঠা সত্তর ছুঁই ছুঁই। চাকরি থেকেও অবসর নিয়েছেন সবাই।

বুদ্ধিজীবী চত্ত্বরের একটি গাছের নিচে বসে পাঁচ বন্ধুর আড্ডায় যোগ দিলাম নিজেও। পরিচয় জানার পর হিসাব করে দেখলাম- তাঁদের ৪২ ব্যাচ জুনিয়র আমি।
কিন্তু আনন্দ, আহ্লাদ কিংবা উচ্ছ্বাস এখনও আগের মতোই।  

জীবনের সত্তর বসন্ত পার করে আসা পাঁচ বন্ধু হলেন- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী কাজী আশেক আহমদ, সালেহ জহুর মোহাম্মদ বাহাদুর, সামিরান দেওয়ান, এসএইচ মুক্তার আহমেদ এবং মো. জামাল উদ্দিন।  

‘সাফল্যের উচ্ছ্বাসে, ম্যানেজমেন্ট পঞ্চাশে’ স্লোগানে শনিবার (০৪ জানুয়ারি) দিনব্যাপী আয়োজিত ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবে এসেছেন তাঁদের মতো অনেকেই। হাজারও মানুষের ভিড়ে এত বছর পরও বন্ধুদের খুঁজে বের করতে ভুল করেননি তাঁরা।  

এখনও বন্ধুদের মাঝে আছে সেই প্রাণ, সেই উচ্ছ্বাস। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়ার পর কেটে গেছে ৪০ বছর। এর মাঝে নিজেদের ক্যারিয়ার গঠন, সংসার এবং সন্তানদের পড়াশোনা সবকিছুই শেষ। চাকরি থেকেও নিয়েছেন অবসর। তাই সুযোগ পেলেই জীবনের শেষ বসন্তগুলো কাটাতে ছুটে আসেন পুরোনো বন্ধুদের কাছে। দুষ্টুমির মাত্রাটা এখনও আগের মতোই আছে। বন্ধুকে পেলে আগের মতোই চঞ্চল হয়ে ওঠেন সত্তর বছর বয়সী আশেক, বাহাদুর, সামিরানরা। এ যেন পড়ন্ত বেলায় শৈশবের আমেজ।  

সবচেয়ে চঞ্চল বন্ধু কাজী আশেক আহমদের উচ্ছ্বাসটা একটু বেশিই চোখে পড়লো। অনুভূতি জানতে চাইলে সবার আগে বলে উঠলেন- খুব ভালো লাগছে। এখন আর চাওয়া পাওয়ার কিছু বাকি নেই। তাই কোনও আয়োজনের খবর পেলেই ছুটে আসি। বন্ধুদের কাছে পেলে ভালো লাগে। আজও ১৫ জন বন্ধু এসেছে।  

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে পছন্দের কোনও মানুষ ছিলো কি-না, জানতে চাইলে কাজী আশেক আহমদ কয়েকজনের নামই বলে বসলেন। এর মধ্যে ফ্লোরা, নাসরিনদের কথা মনে করতে পারলেও বাকিদের নাম ভুলেই গেছেন। ‘পাঁচ-ছয়জন ছাত্রী ছিলো আমাদের ব্যাচে। পড়াশোনা নিয়েই বেশিরভাগ সময় ব্যস্ত থাকতাম আমরা। মাঝেমধ্যে কথাবার্তা হলেও এর বেশি কিছু আমরা ভাবতে পারতাম না। তখনকার পরিবেশটাই ছিলো পড়াশোনার’।  

আশেক আহমদের কথা শুনে পাশে থাকা বন্ধু মুক্তার আক্ষেপের সুরে বললেন, এখন আর আগের মতো পড়াশোনার পরিবেশ নেই। এখন শুধু মারামারি-হানাহানি। এ আক্ষেপটা বোধহয় সব বাবা-মায়ের, যারা একসময় এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ে গেছেন- তাদেরও।  

কথা শেষে আশপাশ ঘুরে আবারও সেই গাছতলায় ফিরে আসলাম। এবার আর খুঁজে পেলাম না তাঁদের। হয়তো পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে অন্য কোথাও আড্ডা জমিয়েছেন। বন্ধু, পরিবার কিংবা ছেলেমেয়ের সঙ্গে সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের দিনটা স্মরণীয় করে রাখতে ক্যামেরার ফ্রেমবন্দি হয়েছেন কমবেশি সবাই। শনিবার এমন দৃশ্য নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা দেখেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আনাচে-কানাচে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২৩
এমএ/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।