ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

আমি-ই প্রথম ফিক্সিং করিনি, দ্বিতীয়বার সুযোগ চাই: আসিফ

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৯ ঘণ্টা, মে ৪, ২০২০
আমি-ই প্রথম ফিক্সিং করিনি, দ্বিতীয়বার সুযোগ চাই: আসিফ মোহাম্মদ আসিফ

পাকিস্তানি ফাস্ট বোলার মোহাম্মদ আসিফ মনে করেন তিনি আসার পর ক্রিকেটে ফিক্সিং শুরু হয়নি। বরং তার আগে থেকেই ফিক্সিং ছিল। আর তিনি-ই সর্বশেষ ক্রিকেটার নন যে ফিক্সিংয়ে জড়িয়েছেন। তাই ক্রিকেট বোর্ডের উচিৎ তার সঙ্গে ভালো আচরণ করে তাকে দ্বিতীয়বার সুযোগ দেওয়া।

জনপ্রিয় ক্রিকেট পোর্টাল ক্রিকইনফোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আসিফ একথা বলেছেন। ২০১০ সালে স্পট ফিক্সিংয়ের কারণে সবধরনের ক্রিকেট থেকে সাত বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন এই ডানহাতি বোলার।

শুধু তাই নয় একই ঘটনায় জড়িত থাকায় মোহাম্মদ আমির ও সালমান বাটের সঙ্গে ইংল্যান্ডে কারাভোগ করেছিলেন তিনি। আসিফ মনে করেন অন্যান্যদের মতো তারও দ্বিতীয় বার সুযোগ পাওয়া উচিৎ।

আসিফ বলেন, ‘সবাই ভুল করে এবং আমিও করেছি। ক্রিকেটাররা আমার আগে এবং আমার পরেও ফিক্সিংয়ে জড়িত ছিল। তবে আমার আগে যারা ছিল তারা এখন পিসিবিতে কাজ করছেন এবং আমার পরে যারা আসছে তাদের কেউ এখনো খেলা চালিয়ে যাচ্ছে। সবাইকেই দ্বিতীয়বার সুযোগ দেওয়া হয়েছে, আমার মতো কারও সঙ্গে আচরণ করা হয়নি। পিসিবি কখনোই আমাকে রক্ষা করতে চায়নি। সর্বোপরি আমি এমন একধরনের বোলার যাকে সারা বিশ্বই বিবেচনা করতে পারে। যাই হোক আমি এতো বোকা না যে আমি আমার অতীত নিয়ে পড়ে থাকবো। ’

আসিফ আরও জানান যে, তিনি তার পাফরম্যান্স নিয়ে খুশি তবে সীমিত ওভারের ক্যারিয়ার নিয়ে তিনি বেশ হতাশ।

তিনি বলেন, ‘আমি ক্যারিয়ারে যত ম্যাচ খেলেছি সবই মনে রাখার মতো, পুরো বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলাম। আমার সম্পর্কে চিন্তা করার জন্য এটা যথেষ্ট। এত বছর পরে আজও বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানরা এখনও আমাকে স্মরণ করে এবং তারা আমার সম্পর্কে কথা বলে। চিন্তা করুন ক্রিকেট বিশ্বে আমার প্রভাবটা কতটুকু ছিলো যে কেভিন পিটারসেন, এবি ডি ভিলিয়ার্স, হাশিম আমলার মতো ব্যাটসম্যান আমাকে নিয়ে প্রশংসা করে। এতেই আমি খুশি। ’

২০০৬ সালে ডোপ টেস্টে পজিটিভ হওয়ায় এক বছরের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছিলেন আসিফ এবং সেটাও স্বীকার করে নেন যে মাঠের বাইরেও তার আচরণ ভালো হওয়া উচিৎ।

পাকিস্তানের এই পেসার বলেন, ‘এখানেও আমার সমস্যা ছিল। আমি তরুণদের এই বাণী দিতে চাই যে তোমরা যখন সীমানা পেরিয়ে মাঠ নামবে তখন তোমার আচরণ ভালো হয় উচিৎ, এটা তোমার নিজের জন্য, তোমার দলের জন্য। ’

আসিফ সেইসব দিনের কথা মনে করেন যখন ওয়াসিম আকরাম, মুদাসসর নজররা তার বল নিয়ে কথা বলতো।

তিনি বলেন, ‘আমি বোলার হিসাবে স্বার্থপর ছিলাম, কারণ আমি উইকেট নিতে চাইতাম এবং সেটা ছিল দলকে জিততে সহায়তা করার জন্য। আপনি যখন নিজের দেশের হয়ে খেলবেন তখন স্বার্থপর হওয়া খারাপ নয়। আমি নিজেকে একবার না বার বার প্রমাণ করেছিলাম। আমি একই ব্যাটসম্যানের উইকেট একাধিকবার পেয়েছি। এমনটিও নয় যে আমি দুর্দান্ত ডেলিভারিগুলো একবার করেছি পরে আর কখনও করিনি। ’

তিনি আরও বলেন, ‘বল হাতে আমি বেশ নিয়ন্ত্রিত ছিলাম। বলের গতি, ভেতরে ঢোকানো, বাহিরে বের করা এটা একবারের বিষয় না। এটা আয়ত্ব করতে অনেক বছর সময় লেগেছে এবং এটা নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করেছি। ’

২৭ বছর বয়সী মোহাম্মদ আমিরের হঠাৎ টেস্ট থেকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্তটা আসিফের পছন্দ হয়নি। তার খারাপ সময়ে পিসিবি তাকে সাহায্য করেছে, কিন্তু আমির পিসিবিকে হতাশ করেছে।

আমিরকে নিয়ে আসিফ বলেন, ‘তার পাকিস্তান ক্রিকেটের প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে। কারণ ক্যারিয়ারে কঠিন সময়ে পিসিবি তাকে ক্রিকেট মাঠে ফিরতে সাহায্য করেছে। যদি পিসিবি আমাকে সুযোগটা দেয় আমি চেষ্টা করবো পাকিস্তানের টেস্ট ক্রিকেটটাকে আগামী দুই বছরের মধ্যে ভালো জায়গায় নিয়ে যেতে। আমি জানি পিসিবির ফিটনেস লেভেলের মান কেমন। তাদের যেটাই প্রয়োজন হোক না আমি কাজটা করতে পারবো। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০২০
আরএআর/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।