ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

বুলবুলের চোখে ২০১৫ সালের টাইগাররা

সাজ্জাদ খান, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৫
বুলবুলের চোখে ২০১৫ সালের টাইগাররা ফাইল ফটো

ঢাকা: অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি করে ক্রিকেট বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। তার ব্যক্তিগত ১৪৫ রানের ওপর ভর করে প্রথম ইনিংসে ৪০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করে বাংলাদেশ।



টেস্ট মর্যাদার যথার্থতা প্রমাণে আমিনুল ইসলামের ওই ইনিংসটি এখনো স্মরণ করেন টাইগার-সমর্থকরা।

আইসিসির ডেভেলপমেন্ট অফিসার হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমানো জাতীয় দলের সাবেক এই ক্রিকেটার এখন ঢাকায়। বছরের অন্তিমে এসে বছরটির সাফল্য নিয়ে কথা বলেছেন বাংলানিউজের সঙ্গে।

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক এই অধিনায়কের সঙ্গে কথোপথনের চুম্বক অংশগুলো বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:

বাংলানিউজ: ২০১৫ সালে বাংলাদেশ দল ১৮টি ওয়ানডে খেলে ১৩টিতে জয় পেয়েছে। এ সাফল্যকে আপনি কিভাবে দেখছেন?
 
আমিনুল ইসলাম: আসলে বাংলাদেশ ১৯৭১ এর পর থেকে যতদিন ধরে ক্রিকেট খেলে আসছে প্রত্যেকটা জায়গাতে উন্নতি করতে করতে আজকে এমন একটা পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। সাফল্যের স্বর্ণশিখরে আছি আমরা। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম একটা বছর ২০১৫।
 
বাংলানিউজ: আগে মাঝে মাঝে সাফল্য নিয়ে আসতো ক্রিকেটাররা। এখন আছে জয়ের ধারাবাহিকতা। কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
 
আমিনুল ইসলাম: এর আগে হয়তো নিউজিল্যান্ডের সাথে দু-একটা সিরিজ জিততাম। বা হঠাৎ হঠাৎ করে একটা দুইটা ওয়ানডে জিততাম কিন্তু এবার ধারাবাহিকভাবে জিতেছি। বিশ্বকাপের আগে থেকে এবং এই পর্যন্ত আমরা সবাইকে হারিয়েছি। যদিও অন্য দুটি ফরম্যাট টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে অত ভালো করতে ‍পারিন। তারপরও আমাদের ক্রিকেটের ইতিহাসে সেরা একটা বছর পার করলাম।
 
বাংলানিউজ: ঘরের মাঠে এ বছর টানা চারটি সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো ক্রিকেট পরাশক্তিকে হারিয়েছে মাশরাফির দল। এগুলোর মধ্যে কোন সাফল্যটাকে এগিয়ে রাখিবেন?

আমিনুল ইসলাম: আমি আলাদা করে কোনো সাফল্যকে এগিয়ে রাখতে চাই না। প্রতিটা সাফল্যই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রত্যেকটা পদক্ষেপ ছিল খুব কঠিন। এর মধ্যে যেমন বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারানো। স্কটল্যান্ডকে নেলসনে ৩০০ রান তাড়া করে হারানো। নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ম্যাচটি, যদিও আমরা হেরে গিয়েছিলাম। দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলকে দেশের মাটিতে হারানো, পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করা। ভারতের মতো একটা দলকে যারা এ বিশ্বকাপের  সেমিফাইনালিস্ট ও গতবারের চ্যাম্পিয়ন তাদের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছি। সব সাফল্যই আমার কাছে অনেক বড় মনে হয়।   
 
বাংলানিউজ: কোন ম্যাচ জেতার পর সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে?  
 
আমিনুল ইসলাম: এ বছরে যে ধারাবাহিকতা ছিল তা অ্যাক্সিল্যান্ট। আমি বেশি গুরুত্ব দিতে ‍চাই বাংলাদেশ ইংল্যান্ডকে যে ম্যাচটাতে হারিয়েছে ওটাকে। ওটা ছিল নিরপেক্ষ ভেন্যুতে ‍দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার জন্য ওই ম্যাচটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ওই ম্যাচের জয়টাকে আলাদ‍া করে রাখবো আমি।

বাংলানিউজ: বাংলাদেশের ২০১৬ সালটা শুরু হবে টি-টোয়েন্টি দিয়ে। এশিয়া কাপ (টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট) ও আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখা কতটা চ্যালেঞ্জ হবে বাংলাদেশের জন্য?
 
আমিনুল ইসলাম: আমাদের বড় সম্পদ হচ্ছে দুটো জিনিস। আমাদের অনেক খেলোয়াড় আছে যারা ১৫০ এর বেশি ওয়ানডে খেলা তার থেকে বেশি ওয়ানডে খেলা প্লেয়ারও আছে। এতগুলো ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। দ্বিতীয় হলো কনফিডেন্স লেভেল। আগে আমরা জিততে জিততে হেরে যেতাম। উইন-উইন সিচুয়েশনে আমরা পারতাম না। এখন উইন-উইন সিচুয়েশনে আমরা জিতে যাই।
 
বাংলানিউজ: সাফল্য ধরে রাখাটা কতটা কঠিন হবে সামনের বছরগুলোতে?
 
আমিনুল ইসলাম:  আত্মবিশ্বাস ও অভিজ্ঞতা এ দুটোকে পুঁজি করে এগিয়ে গেলে সামনের দিনগুলিও ভালো যাবে। টিম সিলেকশনের ব্যাপার আছে। মানসিক স্বাস্থ্যটা এখানে বড় একটা ব্যাপার। এখানে টিমটাকে চাঙ্গা করে রাখার একটা বড় ব্যাপার আছে। প্লাস হোম অ্যান্ড অ্যাওয়েতে খেলার একটা ব্যাপার আছে। সবমিলিয়ে ‍আমি আশা করি যে, আমাদের এত ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা ও আত্মবিশ্বাস যেটা আছে সেটাকে নিয়ে বাংলাদেশি এগিয়ে যেতে যাবে।

বাংলানিউজ: বাংলাদেশের ক্রিকেটের এ সাফল্য অস্ট্রেলিয়ার মানুষ কিভাবে মূল্যায়ন করে?

আমিনুল ইসলাম: কাজের জন্য আমি মেলবোর্নে থাকি। ওখানে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার যে অফিস আছে সেখানেই আমি কাজ করি। বাংলাদেশ ভালো করার পর আমাকে এবং আমার অবস্থানটাকে ওখানে খুব ভালোভাবেই মূল্যায়ন করা হয়। এটা অনেক সম্মানের, এর রিফ্লেকটেড গ্লোরি আমার গায়েও আসে। এজন্য আমি গর্ববোধ করি বাংলাদেশর সাবেক ক্রিকেটার হিসেবে। ওখানে আমি অনেক  সম্মানিত।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১০১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৫
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।