রাজশাহী: ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক যোগাযোগ স্থাপন এবং অভ্যন্তরীন যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে। এ জন্য পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে দুইটি প্রকল্পের আওতায় ১৪১ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণ করবে।
একই সঙ্গে আরও ৮৫ কিলোমিটার রেলপথ সংস্কার প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রকল্প দু’টির ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। এছাড়া সংস্কারের পর এসব রেলপথের আমূল পরিবর্তন ঘটবে। গতি ফিরে আসবে ট্রেন চলাচলে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের চিফ ইঞ্জিনিয়ার (সিআই) রফিকুল আলম বাংলানিউজকে জানান, রাজশাহী-আমনুরা-রহনপুর রুটে এরইধ্যে ব্যাপক সংস্কার শুরু হয়েছে। এছাড়া পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে দুইটি প্রকল্পের আওতায় ১৪১ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে। হাতে নেওয়া হয়েছে আরও ৮৫ কিলোমিটার রেলপথ সংস্কার প্রকল্প।
তিনি আরও জানান, প্রকল্প দুইটির জন্য ব্যয় হবে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। সংস্কার কাজ শেষ হলে এসব রেলপথের আমূল পরিবর্তন ঘটবে। ট্রেন চলাচলে গতি ফিরে আসবে। ফলে রাজশাহী অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ দিনের যাতায়াত কষ্টের অবসান হবে।
একই সঙ্গে ভারত হয়ে নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক যোগাযোগ স্থাপিত হবে বলে জানান তিনি।
এরইমধ্যে ১ হাজার ১০১ কোটি ৩২ লাখ ৮০ হাজার টাকার প্রকল্পে রয়েছে ‘কালুখালী-ভাটিয়াপাড়া রেলপথ পুনর্বাসন এবং কাশিয়ানী-গোপালগঞ্জ-টুঙ্গিপাড়া রেলপথ নির্মাণ’। এছাড়া ঈশ্বরদী থেকে ঢালারচর পর্যন্ত ৭৮ দশমিক ৪ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৮২ কোটি ৮৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের চিফ ইঞ্জিনিয়ার জানান, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে নতুন রেলপথ নির্মাণের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠানও নিয়োগ করেছে। কালুখালী থেকে ভাটিয়াপাড়া পর্যন্ত ৮০.২৫ কিলোমিটার মেইন লাইন এবং ৫ কিলোমিটার লুপ লাইন পুনর্বাসন করা হবে।
কাশিয়ানী থেকে গোপালগঞ্জ হয়ে টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটার মেইন লাইন এবং ৮ কিলোমিটার লুপ লাইন নতুন নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটির মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০১০-২০১৪ পর্যন্ত। কাশিয়ানী থেকে টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণ করতে ৮৫০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। এই প্রকল্পের মধ্যে ১২টি প্যাকেজে রেলপথ, লেভেল ক্রসিং, স্টেশন বিল্ডিং, সিগন্যালিংসহ আনুষঙ্গিক কাজের নির্মাণ, পুন:নির্মাণের প্রস্তাবনা রয়েছে।
পশ্চিমাঞ্চাল রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) আমজাদ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এর মধ্যে কাশিয়ানী-টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত ৪টি মেজর এবং ৫০টি মাইনর ব্রিজ নির্মাণের সংস্থান অনুমোদিত ডিপিপিতে রয়েছে। প্রকল্পটি ৩টি জেলা যথাক্রমে রাজবাড়ী, ফরিদপুর এবং গোপালগঞ্জের মধ্যে অবস্থিত। প্রকল্পে বাহারপুর, নলিয়াগ্রাম, মধুখালী, সাতউর, বোয়ালমারী বাজার, সহস্রাল এবং কাশিয়ানীতে স্টেশন বিল্ডিং নির্মাণ করা হবে।
তিনি আরও জানান, এছাড়া কালুখালী জংশন স্টেশনসহ মোট ৮টি স্টেশনের জংশন নির্মাণ করা হবে। সংস্কার হবে পাঁচটি স্টেশন। স্টেশন অ্যাপ্রোচ রোড করা হবে ১২টি স্টেশনে। লোকো এবং ট্রাফিক রানিং রুম নির্মাণ করা হবে কাশিয়ানী স্টেশনে। প্রকল্প শেষে অপারেশনের জন্য ১ হাজার ২৩১ জন লোকবল নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাবনাও রয়েছে।
এতে নতুন কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রও তৈরি হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১১