ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

পাবনায় মঞ্চস্থ হলো ‘মাধব মালঞ্চী’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০২২
পাবনায় মঞ্চস্থ হলো ‘মাধব মালঞ্চী’

পাবনা: নাট্য সাংগঠন থিয়েটার আর্ট ইউনিটের নাটক ‘মাধব মালঞ্চী’ প্রর্দশিত হলো পাবনায়। শুক্রবার (০২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী নাট্যমঞ্চ বনমালী শিল্পকলাকেন্দ্রের মঞ্চে নাটকটির ১২তম প্রর্দশন হয়।

 

বিভাষ চক্রবর্তীর লেখা নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন দেশ বরেণ্য নাট্যকার নির্দেশক নারী সংগঠক মঞ্চ অভিনেত্রী রোকেয়া রফিক বেবী। ঐতিহাসিক কাহিনীর ছায়া থেকে এই নাটকের মূল গল্পটি দাঁড়িয়েছে।  

কাহিনী সংক্ষেপ থেকে জানা যায়, দুর্লভ রাজার ছোট পুত্র মাধব। রানীর মত্যুর পরে রাজা এই মাধবকে লালন-পালনের দায়িত্ব দেন তার বড় পুত্রবধু চন্দ্রবনকে। দুর্লব রাজার মৃত্যুর পরে রাজা হবার বাসনায় রাজপুত্রদের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ। গণকের গণনায় মাধবের নাম বারে বারে ওঠায় ক্ষুব্ধ হয়ে বড় ভাই মাধককে হত্যার পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনার কথা জেনে যায় চন্দ্রবন। তাই আদরের দেবরকে রক্ষার জন্য মাধবকে দূরদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সময়ের অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে বলরাজার আশ্রয়ে বড় হতে থাকে মাধব। এদিকে রাজার অপরুপ সুন্দরী কন্যা মালঞ্চীর প্রেমে পরেন সুদর্শন মাধব। এদিকে প্রিয়সির দেওয়া কঠিন শর্তের রাজি হয় মাধব। রাজ্য ছেড়ে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন তারা। কিন্তু ঘটনা তখন অন্যদিকে ধাবিত হয়। বিচ্ছেদের সূরে মাধককে হারিয়ে ফেলে মালঞ্চী। নতুন সংকটের মুখে পরে যায় মালঞ্চী। কোনদিন সে কি আর মাধবের দেখা পাবে না?  খুঁজে পাবে কি সে মাধবকে? এমনি কাহিনীর সূত্র ধরে চলে নাটকের গল্প।

নাটকের নির্দেশক রোকেয়া রফিক বেবী বলেন, আজ থেকে প্রায় ৩৬ বছর আগে নাট্যকার বিভাস চক্রবর্তীর মাধব মালঞ্চী কন্যা দেখেছিলাম। নাটকের সংলাপ, সঙ্গীত, আলো সেই সময়ে মনে দাগ কেটেছিল। সেখান থেকেই এই নাটকটিকে নিয়ে নতুন ভাবনায় নিজেকে তৈরি করেছি। নাটকের পান্ডুলিপি সংগ্রহের পরে নাটকটি পড়তে গিয়ে রাজকন্যার রাজপুত্র উদ্ধার এবং চন্দ্রবনের আশ্চর্য হারছরা আমাকে বেশ প্রভাবিত করে। নাটকে মালঞ্চীকে দেখাতে চেয়েছি নারী শক্তির প্রতিক হিসাবে। নাটকের সূর সংলাপ যুক্ত করা কাজে সহযোগিতা করেছেন সেলিম মাহাবুব আর অনিক মাহিন। এই নাটকটি আমাদের দলের সবার একটি নতুন প্রয়াস। সংলাপের গাঁথুনি, সুর, পোশাক, কোরিওগ্রাফ সবকিছুর একটি শৈল্পিক ছোঁয়া রয়েছে। আশা করছি দেশের সমসাময়িক নাটকের মধ্যে আমাদের এই নাটকটি সকল দর্শকদের মনে জায়গা করে নেবে। দেশ ও দেশের বাইরে নাটকটি প্রর্দশনীর পরিকল্পনা রয়েছে।

থিয়েটার আর্ট ইউনিটের ৩৬তম প্রযোজনার এই নাটকটিতে ৭ জন নারী ও ১৯জন পুরুষ ভিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন। আর নাটকটিতে আবহ সংগীত ও বাদ্যযন্ত্রে সহযোগিতা করছেন আরও ৭ জন। দেশের সমসাময়িক নাটকের ধারাকে আরও সমৃদ্ধ করা ও এতো বড় পরিসরে নাট্যকর্মীদের নিয়ে এটি একটি অন্যতম নাটক ও নাট্যদল বলে ধরা যায়।  

নাটকটিতে আলোক প্রক্ষেপণে কাজ করছেন দলের আরও ৭ নাট্যকর্মী। এছাড়া মঞ্চ ব্যবস্থাপনা দ্রব্যাদি সংগ্রহ ও সেট ডিজাইনে ছিলেন আরও ৭জন। সর্বমোট এই নাটকের অভিনেতা সহ প্রায় ৪০ জন নাট্য কর্মী কাজ করেছেন।  

নাটকটির মূল চরিত্র মাধবে কাজ করেছেন মেহেমুদ সিদ্দিক সেলিম। মালঞ্চী চরিত্রে ইন্দ্রানী ঘটক।  

নাটক নিয়ে কথা হয় দলের অন্যতম সংগঠক অভিনেতা চন্দন রেজার সঙ্গে। তিনি বলেন, নাটকটি আমাদের পাবনা বনমালী শিল্পকলাকেন্দ্রের মঞ্চে ১২তম প্রর্দশন। শিল্প-সাংস্কৃতিতে পাবনা একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা শহর। বাংলাদেশ গ্রুফ থিয়েটার ফেডারেশন অন্তঃর্ভুক্ত বেশ কয়েকটি দল এখানে নিয়মিত নাট্যচর্চা করছে। এর মধ্যে পাবনা ড্রামা সার্কেল, থিয়েটার-৭৭, দর্পণ নাট্য গোষ্ঠি অন্যতম। দেশের বিভিন্ন স্থানে নাটক প্রর্দশনীর মধ্য দিয়ে আমরা সারা দেশের নাটকের চর্চা ও নাট্য সংগঠনকে জাগ্রত করতে চাই।  

বনমালীর পক্ষে নাটকটির সার্বিক ব্যাবস্থাপনায় ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুল হান্নান শেলী ও আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছেন রত্নদ্বীপ রিসোর্ট।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০২২
এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।