ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ মাঘ ১৪৩১, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৭ রজব ১৪৪৬

অন্যান্য

সংকট কাটাতে ব্যবসায়ীদের নিয়ে বসা উচিত

ফজলুল হক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২৫
সংকট কাটাতে ব্যবসায়ীদের নিয়ে বসা উচিত ফজলুল হক

এই সরকার যখন দায়িত্ব নেয় তখন দেশের অর্থনীতি একটা বড় চ্যালেঞ্জের মধ্যে ছিল। আগের সরকার যতই বলুক অর্থনীতি ভালো আছে, আসলে ততটা ছিল না।

এই সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর অনেক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে তারা যাচ্ছে। বর্তমানে সামগ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য বা টোটাল অর্থনীতি এই সরকারের এজেন্ডায় যতটা গুরুত্ব পাওয়া দরকার ছিল, সেভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে না।

সেভাবে সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায়ও নেই। দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ। তা থেকে উত্তরণে জন্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বসা, সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া—এই জায়গায় একটা বড় ধরনের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্য অর্থনৈতিক সংকট দ্রুত সমাধান হবে বলে মনে হলেও, এখন মনে হচ্ছে সেটা দীর্ঘায়িত হবে।

মূল্যস্ফীতি এখন সবার সমস্যা। আমি মনে করি, বাংলাদেশের মতো দেশে শুধু সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেক উন্নত দেশের মতো ওয়েল স্ট্রাকচারড নয়। এখানে অনেক কিছু আন-স্ট্রাকচারড।

নিয়মের বাইরে চলে। এখানে থিওরিক্যাল অ্যাপ্রোচের মতো সুদের হার বাড়িয়ে দিয়ে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে দেবেন, সেই থিওরির সঙ্গে আমি একমত নই। ছয় মাসে সুদের হার অনেক বেড়েছে। ৬-৭ শতাংশের মতো বেড়ে গেছে। এটার কিন্তু কোনো প্রভাব আমরা বাজারে দেখতে পারছি না।

আমরা দেশীয় বিনিয়োগকারীরাই মনে করছি, ব্যবসা-বাণিজ্যে সরকারের তেমন ফোকাস নেই। গত সরকারের আমলে আমাদের ভুয়া প্রতিশ্রুতিতে এক লাফে ১৭২ শতাংশ গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের কথা বলে। সেটারই এখন পর্যন্ত কোনো সলিউশন হয়নি। গ্যাস সরবরাহ এখনো স্বাভাবিক হয়নি। আবার দাম বাড়ানোর ঘোষণা হয়ে গেছে। শীতকাল বলে বোঝা যাচ্ছে না। গ্রীষ্মকাল এলেই আমরা হয়তো বিদ্যুতের খারাপ চেহারা দেখতে পাব। এখনো একবার-দুবার যাচ্ছে।

এ রকম একটা পরিস্থিতিতে আবার ব্যংকিং সেক্টরে একটা টার্মোয়েল চলছে। আবার পলিটিক্যাল লেভেলেও একটা উত্তাপ চলছে। আমরা এটা নিয়ে বেশি চিন্তা না করলেও বৈদেশিক বিনিয়োগকারীরা কিন্তু চিন্তা করেন। বিনিয়োগ এই সময়ে কিছুটা কমবে—সেটা প্রত্যাশিতই ছিল। পলিটিক্যাল স্থিতি হলে এটা আস্তে আস্তে ভালো হবে, সেটা আমরা মনে করি। কিন্তু পরবর্তী কোয়ার্টারেই বিনিয়োগ বেড়ে যাবে সেটা আশা করি না।

দেশের ইকোনমিক সেক্টরে একঝাঁক দক্ষ লোকের সমাবেশ রয়েছে। এখানে একটা বড় ঘাটতি হচ্ছে ইফেকটিভনেসের। ডায়ালগের একটা ঘাটতি। লোকজনকে আস্থায় নেওয়ার একটা ঘাটতি রয়েছে। তারা তো পলিসি মেকার। কিন্তু মাঠে যাঁরা খেলতেছেন তাঁদের নিয়ে আলোচনায় বসা দরকার। তাঁদের গাইড করা,  সমস্যাগুলো আইডেনটিফাই করা দরকার। সেটা কিন্তু হচ্ছে না। এই যে নজিরবিহীনভাবে ভ্যাট বাড়ানো হলো, আজকে একটা বাড়াচ্ছে, আবার একটাতে কমাচ্ছে। এটা করার আগে সবার সঙ্গে পরামর্শ করে সময় নিয়ে করা উচিত ছিল। যাঁরা ভালো ব্যবসায়ী তাঁদের নিয়ে বসতে পারত। সবাই তো আর খারাপ নন। সবাই তো আর আগের সরকারের লোক নন।

লেখক: সাবেক সভাপতি, বিকেএমইএ

সূত্র: কালের কণ্ঠ

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।