ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ চৈত্র ১৪৩১, ২০ মার্চ ২০২৫, ১৯ রমজান ১৪৪৬

ভারত

কলকাতায় ‘সেন্টমার্টিন পরিবহন’ কাউন্টার এখন কাপড়ের দোকান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৫
কলকাতায় ‘সেন্টমার্টিন পরিবহন’ কাউন্টার এখন কাপড়ের দোকান

কলকাতা: কয়েকদিন আগেও জমজমাট ছিল কলকাতার মারকুইস স্ট্রিট। নিত্যদিন লেগে থাকত বাংলাদেশিদের যাতায়াত।

চালু ছিল দুই দেশের মধ্যে বাস পরিষেবা। কিন্তু বর্তমানে ভারতীয় ভিসানীতির কারণে বেহাল সেই এলাকা। যে কারণে যাত্রী না পেয়ে সেখানের ‘সেন্টমার্টিন পরিবহন’ কাউন্টারে বিক্রি হচ্ছে মেয়েদের পোশাক।  

তথ্য মতে, দিনে সেন্টমার্টিন পরিবহনের ১৫ -২০টি বাস যাতায়াত করত। কিন্তু এখন প্রায় যাত্রীশূন্যতে ঠেকেছে। ফলে ব্যবসায় চরম মন্দা যাচ্ছে তাদের। এ পরিবহন পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ৩৫ জন কর্মচারীর বেতন পরিশোধই মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই উপায় না পেয়ে সেন্টমার্টিন পরিবহনের কাউন্টার এখন লেডিস গার্মেন্টস শপে পরিণত হয়েছে। মেয়েদের কাপড় বিক্রি হচ্ছে সেখানে। পরিবহন পরিষেবা বন্ধ করে কাউন্টারটি সাজানো হয়েছে নানান রঙের থ্রি-পিস, স্কার্টে।

বাংলাদেশিদের অভাবে ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম ছিল, তাই কর্মচারীদের পেটে ভাত জোটাতে ব্যবসায় এমন বদল এনেছেন বলে জানিয়েছেন পরিবহন পরিষেবাটির কর্তৃপক্ষ।  

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) তৎকালীন পরিবহন পরিষেবা তথা বর্তমানে পোশাক ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সরোজ খান জানান, বাংলাদেশিরা আসছে না। ভারতের যাত্রীরাও বাংলাদেশ যাচ্ছে না। তাহলে পেট চলবে কি করে! সামনেই ঈদ। তাই স্থানীয় ত্রেতাদের কথা ভেবে থ্রি-পিসে দোকান সাজিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, বাস যদি না চলে সেখানে পরিবহনের ব্যবসা রেখে লাভ কি? ট্যুরিস্ট ভিসা নেই, মেডিকেল ভিসাতেও বেশি যাত্রী নেই, ফলে ব্যবসায় বদল ছাড়া অন্য কোনো উপায় আছে? পেট তো চালাতে হবে।

তিনি জানান, পরিবহন ব্যবসা যখন রমরমা ছিল তখন দিনে ১৫ থেকে ২০টা গাড়ি যাতায়াত করত। আর এখন ৩ থেকে ৪ টি গাড়ি চলছে। ফলে আমাকে ব্যবসা পরিবর্তন করতে হয়েছে।  

ব্যবসা বদলেও কি সফলতা এসেছে? জবাবে মোহাম্মদ সরোজ খান বলেন, কোনোরকম চলছে। স্থানীয় ক্রেতা রয়েছে। তারাই কিছু আর্থিক অক্সিজেন দিচ্ছেন।

তিনি স্পষ্টভাবে জানান, এ অঞ্চল বাংলাদেশিদের জন্য জমজমাট ছিল। তারা না থাকলে সুপার ফ্লপ। নিউমার্কেট, পার্ক স্ট্রিটসহ প্রায় দুই কিলোমিটার জায়গা মূলত বাংলাদেশিদের ওপরেই নির্ভরশীল। স্থানীয় ক্রেতারা দুই একজন আসছেন, কিনছেন। ব্যাস এটুকুই!

কিন্তু ব্যবসার ধরন পরিবর্তন হলেও দোকানের ওপর এখনও জ্বলজ্বল করছে ‘সেন্টমার্টিন পরিবহন’ নামটি। তবে কি পরিস্থিতি বদলালে পুরোনো ব্যবসায় ফিরে যাবেন? তার অভিমত, অবশ্যই ফিরে যাব, ওটাই তো মূল ব্যবসা।

তিনি জানান, বাংলাদেশিদের অভাবে বর্তমান যে পরিস্থিতি তাতে গোটা এলাকায় প্রায় ৫ হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এমতাবস্থায় দুই দেশের সরকারের কাছেই তার দাবি খুব শিগগিরই সমস্যা মিটিয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে উন্নতি ঘটুক এবং ব্যবসা আগের মত শুরু হোক। এ বিষয়ে মারকুইস স্ট্রিট - ফ্রিস্কুল স্ট্রিট ওয়েলফেয়ার সোসাইটির পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে সার্বিক পরিস্থিতির কথা জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১১৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৫
ভিএস/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।