ঢাকা, বুধবার, ৫ চৈত্র ১৪৩১, ১৯ মার্চ ২০২৫, ১৮ রমজান ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

ভোটার তালিকা: রোহিঙ্গা ধরতে ফেলা হচ্ছে জাতিসংঘের জাল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৫
ভোটার তালিকা: রোহিঙ্গা ধরতে ফেলা হচ্ছে জাতিসংঘের জাল

ঢাকা: ভোটার তালিকায় ঢুকে থাকা রোহিঙ্গা ধরতে এবার জাতিসংঘের জাল ফেলবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনের (ইউএনএইচসিআর) গড়ে তোলা রোহিঙ্গাদের সার্ভারের সহায়তা নেওয়া হবে।

বুধবার (১৯ মার্চ) নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) অনুবিভাগের মহাপরিচালক এএসএম হুমায়ুন কবীর সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানান।  

এর আগে ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি।

এই ডাটাবেজ পেলে কি যারা সার্ভারে ঢুকে গেছে বলে অভিযোগ আছে, তাদের শনাক্ত করা যাবে, এমন প্রশ্নের জবাবে এনআই মহাপরিচালক বলেন, অবশ্যই। প্রথম হচ্ছে শনাক্ত করা, শনাক্ত করার সঙ্গে সঙ্গেই তো আমরা এগুলো (এনআইডি) লক করে দেব। আমরা জানার পরপর লক হয়ে যাবে। তারা তো আমাদের নাগরিক নয়। যেহেতু বারবার আলোচনা হচ্ছে এই সিস্টেমে রোহিঙ্গারা রয়েছে। একজন থাকুক, একশজন থাকুক বা এক হাজার জন থাকুক আমরা তো জানি না। একজন থাকলেও তো বাদ দিতে হবে।

অনেক বাংলাদেশি ত্রাণের আশায় রোহিঙ্গা হয়ে যাচ্ছে বলে সম্প্রতি জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার, তাহলে তাদের বিষয়ে কী হবে- এ বিষয়ে তিনি বলেন, তো আমি কিছু বলতে পারবো না।

হুমায়ুন কবীর বলেন, ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আছে বলে ওনারা জানিয়েছেন। সার্ভার কার কাছে থাকবে এখনো ঠিক হয়নি। ওনাদের টেকন্যালিকাল লোক অনেক অভিজ্ঞ। আমরাও আমাদের ডাটা অনেক নিরাপদে সংরক্ষণ করতে পেরেছি। কাজেই এগুলো পরে ঠিক হবে। তবে আমরা অনুরোধ করেছি দ্রুত তথ্যগুলো সরবরাহ করতে। ওনারা সম্মত হয়েছেন, তবে অনেকগুলো বৈঠক করতে হবে। পরস্পরকে বুঝতে আমাদের একটু সময় লাগবে।

তিনি আরও বলেন, ডাটাটা এমনভাবে দেবে যেন রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করতে পারি। কাজেই ওনাদের পুরো ডাটা যদি না পাই, সেটা তো পারবো না। দেশের বিভিন্ন জায়গায় এরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এরা আর চট্টগ্রাম অঞ্চলে সীমাবদ্ধ নেই।

এনআইডি ডিজি বলেন, ইউএনএইচসিআরের কাছে যে তথ্য আছে সেটা আমরা এবং সরকারও চাচ্ছে। সরকারের সঙ্গে একটা চুক্তি তাদের হয়েছে। সে অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের তথ্য শেয়ার করতে সম্মত হয়েছে। এই ডাটা আমরা কীভাবে পেতে পারি তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে। এই তথ্য আমাদের কাছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, না অন্য কোথাও থাকবে, এটা নিয়ে সরকারের একটা সিদ্ধান্তের ব্যাপার ছিল। এটা চূড়ান্ত হয়েছে, যে এটা নির্বাচন কমিশনে থাকবে। কীভাবে কোথায় কখন ব্যবহার করতে হবে এটা নিয়ে আরও বসতে হবে। একটা টেকনিক্যাল টিম আজকে করা হয়েছে। সিস্টেম ম্যানেজার মোহম্মদ আশরাফ হোসেন এটি সমন্বয় করবেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এবং ওনাদের প্রতিনিধি থাকবে সেই টিমে। তারা বৈঠক করবেন। এই ডাটা যখন পাবো তখন ব্যবহার করতে পারবো।

তিনি বলেন, নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। রোহিঙ্গারা আমাদের সিস্টেমে প্রবেশ করার চেষ্টা করছে। যত দ্রুত এই ডাটা পাবো তত সুবিধা হবে। আমাদের সুবিধা বহুমাত্রিক। রোহিঙ্গাদের ঠেকাতে আর এতো কষ্ট করতে হবে না। কেন না, আমরা ডাটা দেব ওই ডাটার সঙ্গে মিলে গেলেই তো আমরা বুঝবো রোহিঙ্গা। সুতরাং এটা আমাদের প্রথমেই কাজে লাগবে। তাদের সঙ্গে বৈঠকে পাসপোর্টের বিষয়টাও আলোচনা এসেছে। পাসপোর্ট আমাদের এনআইডিটা ইউজ করে।  

রোহিঙ্গারা সমতলে ছড়িয়ে পড়ছে। এতে চট্টগ্রাম অঞ্চলের মতো সমতলের বাসিন্দাদেরও কি সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখা হবে-এমন প্রশ্নের জবাবে এনআইডি মহাপরিচালক বলেন, আমার মা-বাবার তথ্য তো ইসির সার্ভারে আছে। কাজেই আমি ভোটার হতে এলে আর চেক করার দরকার নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৫
ইইউডি/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।