ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

আম বিকিকিনির বিপুল অংকের টাকা বিকাশে লেনদেন!

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২০ ঘণ্টা, জুন ১, ২০১৮
আম বিকিকিনির বিপুল অংকের টাকা বিকাশে লেনদেন! গাড়িতে আম তুলছেন ব্যবসায়ীরা, ছবি: কাওছার উল্লাহ আরিফ

রাজশাহী থেকে: বানেশ্বরের অবস্থান রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায়। রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমের হাট বসে এ বানেশ্বরে। সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার এখানে হাটবার। আমের পুরো মৌসুম আসতে এখনও বাকি প্রায় দুই সপ্তাহ। ওই সময় এখান থেকে নিয়মিত মাঝারি ও বড় আকারের অর্ধশত ট্রাকে করে আম যাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। বর্তমানে এখান থেকে প্রায় ৩০ ট্রাক গোপালভোগ ও গুটি জাতের আম যাচ্ছে।

এদিকে প্রতি ট্রাক আমের দাম প্রায় ৩ লাখ টাকা। সেই হিসেবে বানেশ্বরে প্রতিদিন ৯০ লাখ টাকার আম বিক্রি হচ্ছে।

আর পুরো মৌসুম শুরু হলে গড়ে এখান থেকে প্রতিদিন দেড় কোটি টাকার মত বিভিন্ন জাতের আম বিক্রি হবে বলে সংশ্লিষ্টদের আশা। মে থেকে শুরু করে জুলাই এ তিন মাস রাজশাহীর মোকাম থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অনেক টাকার আম বিক্রি হবে।

বৃহস্পতিবার (৩১ মে) বিকেলে আমের রাজ্যখ্যাত রাজশাহীর বানেশ্বর হাটে গিয়ে স্থানীয় আড়ৎদার ও পাইকারি-খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, আম বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে বানেশ্বরে বেসরকারি-সরকারি মিলে ১০টি ব্যাংকের শাখা রয়েছে। রয়েছে প্রায় দু’শোর মত আড়ৎদার। প্রায় দেড়শোর মত পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী রয়েছেন। এখানে আম বেচাকেনার বেশি অর্থ আদান-প্রদান হয় বিকাশের মাধ্যমে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্যাংকগুলো। পরের ধাপে রয়েছে বিভিন্ন কুরিয়ার।

বিসমিল্লাহি ফল ভান্ডারের সত্ত্বাধিকারী আব্দুল মতিন বাংলানিউজকে জানান, আম বিক্রির এ বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যাংকে লেনদেন করতে গেলে নানা ধরনের ঝামেলা পোহাতে হয়। লাইনে দাঁড়াতে হয়। জমা রশিদে লিখতে গিয়ে ভুল হলে ব্যাংকের কর্মকর্তারা টাকা নিতে চান না। ব্যাংকের সময় মতো লেনদেন করতে হয়। যা অন্য মাধ্যমে এতো নিয়ম মানতে হয় না। তাই ব্যবসায়ীরা ব্যাংকের তুলনায় বিকাশসহ অন্য মাধ্যমেই টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন।
আম নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন এক ব্যবসায়ী।  ছবি: কাওছার উল্লাহ আরিফবানি ফল ভান্ডারের সত্ত্বাধিকারী বানি ইসরাইল জানান, শনি ও মঙ্গলবার ভোর থেকে রাত প্রায় ৯ টা পর্যন্ত বানেশ্বরে পা ফেলানোর জায়গা থাকে না। ব্যবসায় নিয়েই সবাইকে হিমশিম খেতে হয়। আর ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যেই হিমসাগর, ল্যাংড়া ও গুটি লক্ষনভোগ আম ভাঙা শুরু হবে। তাই মানুষের ব্যাংকে যাওয়ার সময় নেই। এরপরও কমবেশি সব ব্যবসায়ী ব্যাংকে যান। ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করেন না বিষয়টি এমন নয়।

এসব ব্যবসায়ীরা জানান, মৌসুমের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যবসায়ীরা গড়ে ৫০ থেকে দেড় লাখ টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করে থাকেন। তবে এখন অনেকে ঝামেলা এড়াতে বিকাশে লেনদেন করেন।

প্রাইম ব্যাংক রাজশাহী শাখার কর্মাশিয়াল ব্যাংককিং ডিভিশনের এভিপি অ্যান্ড রিলেশন ম্যানেজার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, মূলত হাটবারের আগের দু’দিন ব্যবসায়ীরা ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন করেন। বাকি দিনগুলো সময় স্বল্পতার জন্য ব্যবসায়ী ব্যাংকে তেমন আসতে পারেন না।  তাই তারা নগদ পেমেন্টসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বিপুল অংকের টাকা লেনদেন করে থাকেন।

তিনি আরও জানান, ব্যাংকে টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের কোনো সমস্যা নেই। ব্যাংক সময় মেনেই সবার মত তাদের লেনদেন করতে হয়। কারণ প্রতিষ্ঠা ব্যাংককে স্ব স্ব নিয়মের মাধ্যমে চলতে হয়। এরপরও আমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের আমের মৌসুমে স্থানীয় ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে থাকে।

** আমের রাজধানীর সবচেয়ে বড় হাট বানেশ্বর 

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৬ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০১৮
এমবিএইচ/ওএইচ/

.

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ