সদরঘাট, এম ভি মধুমতি (ঢাকা-মংলা) থেকে: রাজধানী ঢাকা থেকে মংলাগামী এম ভি মধুমতি এবং এম ভি জাহিদ প্রায় একই সময় পন্টুন ছাড়তে শুরু করেছে, ঠিক সে সময় দু’টি লঞ্চের সামনে দিয়ে ভোঁ ভোঁ শব্দ তুলে ছুটে গেলো গ্লোরী অব চাঁদপুর-৩।
বুড়িগঙ্গার বুকে গ্লোরী অব চাঁদপুর-৩ এর ধাক্কায় ঢেউগুলো পন্টুনে এসে বাড়ি খেলো।
আজ বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর), শুক্রবার সরকারি ছুটি। অন্যদিকে আমাদের মহান বিজয় দিবস- তাই যাত্রীদের ভিড়ে গমগম করছে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের লালকুঠি ঘাট। কেউ বাড়ি যাচ্ছেন, কেউবা আসছেন ঢাকায় পেশাগত কারণে- স্মৃতিসৌধের উদ্দেশে।
ঘাট পাড়ে তাই ভীষণ ব্যস্ত ভাসমান দোকানিরা। নৌকার ওপর থরে থরে সাজানো বিস্কুট, চানাচুর, চিপস, মিনারেল ওয়াটার বেচার ধুম চলছে। মোবাইল ফোনের ইয়ারফোন আর সেলফি স্টিকও আছে বিকিকিনির বাজারে।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা হলেও বেশ খানিকটা আগেই নিভে গেছে সূর্য়। কুয়াশা ধীরে ধীরে ঘন হচ্ছে। তাম্রবর্ণের চাঁদটাও আজ আলো দেবে না বলে শরীর এলিয়ে দিয়েছে যেনো। লঞ্চের সার্চ লাইটের আলোয় ডিঙি নৌকায় আটকে পড়া যাত্রীদের মুখে উদ্বেগ। তবে মাঝিরা নিশ্চিন্ত মনে বৈঠা বাইছে।
কিছু পরে ঠিকই পরিস্থিতি সামলে নৌকাগুলো ভিড়ে গেলো তীরে।
এর মধ্যে দেখা গেলো নদীর বুকে জোনাকির ভিড়! ঝাঁকঝাঁক জোনাকি জ্বলছে আর নিভছে। হঠাৎ দেখায় অন্যকিছু মনে হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। দু’একটি নৌকায় এখনও রয়ে গেছে হারিকেন। বাকিগুলোতে হারিকেনের জায়গা দখল করেছে ব্যাটারিচালিত এলইডি টুনি বাল্ব।
বড় লঞ্চ এবং অন্য জলযান যেনো বুঝতে পারে সামনে ডিঙি নৌকা তাই এ ব্যবস্থা।
হঠাৎ পরিচয় পর্বে মাঝির উদ্দেশে ‘খবর কি’ প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলে আবদুল জব্বার একগাল হেসে জবাব দেন, ‘শুধু লাল-নীল বাত্তি জ্বলে, আমগো ভবিষ্যৎ অন্ধকার’।
১৮৬০ দশকে স্যার জেমস রেনেল ঢাকা তথা বঙ্গ অঞ্চলে যে ম্যাপ করেন তাতে বুড়িগঙ্গা নামে কোনো নদীর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। বর্তমানে বুড়িগঙ্গার যে প্রবাহ, তা তিনি ধোলাই নামে চিহ্নিত করেন। তবে কলিকাপুরাণে বুড়াগঙ্গা নামে একটি নদীর অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৬
এটি/জেডএম
