ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

পদ্ম বেচে সংসারে হাসি ফেরান আহমেদ হোসেন

আবু খালিদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০১৬
পদ্ম বেচে সংসারে হাসি ফেরান আহমেদ হোসেন ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কক্সবাজার থেকে: আহমেদ হোসেনের বয়স ৬৫ পেরিয়েছে। কায়িক পরিশ্রম শরীরে আর কুলায় না।

সংসারের ভার বইতে তাই বেছে নিয়েছেন পদ্ম ফুল বিক্রির কাজ। এ সুযোগ পেয়েছেন তিনি ঐতিহাসিক রাংকুট বনাশ্রম মহাতীর্থ মহাবিহারের কল্যাণে।

শুক্রবার (০৯ এপ্রিলৈ) সকালে কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলায় অবস্থিত ওই বনাশ্রমে প্রবেশ করতেই দেখা মিললো জীবন সংগ্রামী এই বৃদ্ধের সঙ্গে। ঝাকায় পদ্ম ফুল বিক্রি করে এখনও দিব্যি সংসার চালিয়ে যাচ্ছেন আহমেদ হোসেন।  
 
এভাবেই পর্যটন নগরীর বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র এসব অসহায় মানুষ ও বেকারদের সংসারে হাসির খোরাক যোগাচ্ছে।
 
রামু উপজেলার রাজারকূল কাঠারিয়া পাড়াতে আহমেদ হোসেনের বাড়ি। এক সপ্তাহের জন্য ১০ কিলোমিটার দূর সোনাছড়ি এলাকা থেকে পদ্মফুল নিয়ে আসেন তিনি। এরপর বাড়িতে রেখে প্রতিদিন ভোর হতে দুপুর পর্যন্ত দর্শনার্থী ও পূজারীদের ফুলের চাহিদা মিটিয়ে সংসারের হাল ধরেছেন এই বৃদ্ধ।
 
আহমেদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, যখন অন্য কোনো পরিশ্রম করতে পারছিলাম না তখন নিজ উদ্যোগেই পদ্ম ফুল বিক্রি করতে শুরু করি। এতে বেশ ভালো সাড়াও পাই। আমার বয়সী মানুষেরা অনেকেই মারা গেছেন, আবার অনেকেই অসুস্থ হয়ে আছেন। আর আমি কাজ করে যাচ্ছি।
 
৫ বছর ধরে পদ্ম ফুলের সঙ্গে থাকা এই বৃদ্ধ জানান, অনেক আগে থেকেই পদ্ম ফুল ভালো লাগে তার। তাই মন থেকেই এ পেশাকে বেছি নিয়েছেন তিনি।
 
তবে ছেলেদের প্রতি তার বেশ ক্ষোভ রয়েছে। সংসারের টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে সন্তানদের বড় করলেও আজ কোনো সন্তানই তাদের দুজনকে দেখভাল করেন না। চার ছেলে তার। বড় ছেলে রাজ মিস্ত্রীর কাজ করেন। একজন আলাদা হয়ে গেছে। বাকিরা সঙ্গে থাকলেও তার কথা কেউ শোনে না।
 
প্রতিদিন ১০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত ফুল বিক্রি করেন আহমেদ হোসেন। তবে কোনো কোনো সময়ে আরও কম বিক্রি হয়। একটি পদ্ম ফুল ১০ টাকা করে বিক্রি করেন। ভালো ফুল বিক্রি হলে মুখের হাসিটাও চওরা হয় তার। বছরের বার মাসই এভাবে কেটে যায় তার।
 
ঐতিহাসিক রাংকট বৌদ্ধ মন্দিরে সম্রাট অশোক মহারাজার মূর্তির সামনে প্রতিদিন এই পদ্ম ফুল বিক্রি করেন আহমেদ হোসেন। এর আগে জমিতে চাষাবাদসহ নানা পেশায় নিজেকে কাজে লাগিয়েছেন তিনি।
 
জীবনযুদ্ধে সংগ্রাম করে যাওয়া এই মানুষগুলো শেষ বয়সেও পরিশ্রম করতে আপত্তি জানান না। তবে পরিশ্রমের ক্ষেত্র পেতে বেশ হিমশিমই খেতে হয় তাদের। আর তাই তো পর্যটন নগরীর কক্সবাজারের সব পর্যটন কেন্দ্রগুলো এসব অসহায় মানুষদের কর্মসংস্থানের উপায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।



বাংলাদেশ সময়: ১১৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৬
একে/এমজেএফ/

** সেন্টমার্টিন যেভাবে যাবেন
** বছরজুড়ে দেশ ঘুরে: কক্সবাজারে বাংলানিউজ
** কক্সবাজারে বাংলানিউজের দ্বিতীয় টিম
** তৃতীয় ধাপে চট্টগ্রাম টিম এখন কক্সবাজারে
** মারমেইড ও মুগ্ধতার গল্প...
 ** সেন্টমার্টিন দেখতে কেমন (পর্ব-২)
**সেন্টমার্টিন দেখতে কেমন (পর্ব-১)

** কুকুর যখন ‘টুনা’ শিকারি
** ‘পর্যটন মৌসুম শব্দটি বিলীন হয়ে যাচ্ছে’
** তৈরি হচ্ছে ‘বিচ ডাটাবেজ’
** সেন্টমার্টিনে সৈকত জুড়ে কাঁকড়ার আল্পনা
** সেন্টমার্টিনে বাজার সদাইয়ের সংগ্রাম (ভিডিওসহ)
** সৈকতের আল্পনাশিল্পীদের করুণ মৃত্যুগাথা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ