ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

রেকর্ড মোসাম্বি উৎপাদন করে তাক লাগালো আদিবাসী পরিবার

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২০
রেকর্ড মোসাম্বি উৎপাদন করে তাক লাগালো আদিবাসী পরিবার মোসাম্বি। ছবি: বাংলানিউজ

আগরতলা (ত্রিপুরা): ২০ বিঘা জায়গাজুড়ে মোসাম্বির বাগান করেছে এক আদিবাসী পরিবার। এ বাগানে বছরে ৮ লাখের বেশি মোসাম্বি উৎপাদন করে পরিবারটি তাক লাগিয়ে দিয়েছে ত্রিপুরাবাসীকে।

বাগানটি ত্রিপুরার সিপাহীজলা জেলার অন্তর্গত জম্পুইজলা এলাকায়। ১০ বছর আগে আদিবাসী পরিবারটির বাড়ির পাশে করা হয়েছে মোসাম্বি বাগান। এর আয়তন ২০ বিঘা। গত ৬ বছর ধরে মোসাম্বি সংগ্রহ করা হচ্ছে এ বাগান থেকে।  

দুই হাতে গাছ থেকে মোসাম্বি সংগ্রহ করতে করতে আদিবাসী পরিবারটির গৃহবধু সীমা দেববর্মা বাংলানিউজকে জানান, বাগানে প্রায় ১ হাজার ৬০০টি গাছ রয়েছে। এক একটি গাছে প্রতি মৌসুমে প্রায় ৫শ আবার কোনো গাছে এর চেয়ে বেশি মোসাম্বি ধরে। সব মিলিয়ে বাগানে বছরে প্রায় ৮ লাখের বেশি মোসাম্বির ফলন হয়।  

এসময় সীমা কথা বললেন পরিবার এবং বাগান নিয়ে। তিনি জানান, তিনি, তার স্বামী, দেবর এবং দেবরের স্ত্রী ও তাদের বাচ্চারা মিলে এক পরিবার। পরিবারের বড়রা সবাই মিলে বাগানে কাজ করেন তাই বাইরে থেকে শ্রমিক আনতে হয় না। মোসাম্বি বিক্রির উপযুক্ত হলে তারা শুধু গাছ থেকে সংগ্রহ করেন। এরপর পাইকাররা বাড়ি থেকেই কিনে নিয়ে যায়। চাহিদার উপর দাম নির্ভর করে। গড়ে এক একটি মোসাম্বি ৩ থেকে ৪ রুপি দরে বিক্রি হয়। মূলত আগরতলার মহারাজগঞ্জ বাজারের পাইকাররা এগুলো কিনে নেন।
 
...তিনি আরও জানান, মোসাম্বি গাছের খুব বেশি পরিচর্যা করতে হয় না। শুকনো মৌসুমে গাছে পানি সেচ দিতে হয় এবং বাগানের আগাছা পরিষ্কার করতে হয়। বছরে এক বার ফল ধরে। আগস্ট থেকে ফল তোলা শুরু হয় এবং অক্টোবর মাস পর্যন্ত গাছে ফল থাকে।

সীমার সঙ্গে বাগানে কথা বলার সময় সেখানে আসলেন তার দেবর সুষেন দেববর্মা। তিনি জানালেন আরও কিছু তথ্য।  

সুষেন বলেন, ফল বিক্রির পাশাপাশি তারা গাছের ডালও কেটে বিক্রি করেন। একটি নির্দিষ্ট আকারের ডাল নার্সারি মালিকরা কিনে নিয়ে যান এবং এগুলো থেকে তারা চারা গাছ তৈরি করেন। এই ডালগুলোর প্রতিটি ২ রুপি করে বিক্রি করা হয়।  

অনেকে বলেন, ত্রিপুরায় উৎপাদিত মোসাম্বি মিষ্টি কম ও টক হয়। এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এই ধারণা ভুল। গাছের প্রজাতির উপর নির্ভর করে এর স্বাদ। আমাদের বাগানের মোসাম্বি মিষ্টি তাই প্রতি বছর সব ফলই বিক্রি হয়ে যায়।  

বাগান তৈরি করার জন্য সরকার থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা না পাওয়ার কথা জানালেন সুষেন।

সুষেনের দাবি, রাজ্যে সবচেয়ে বড় মোসাম্বি বাগান তাদেরটাই। তাই বহু দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এই বাগান দেখতে আসেন। অনেকে আবার তাদের কাছ থেকে জেনে নেন বাগান করার বিষয়ে নানা তথ্য। তবে ফলের গাছগুলোতে বার্ধক্য চলে আসছে তাই ধীরে ধীরে ফলন কমে যাবে। এই কারণে মোসাম্বি গাছের মাঝে মাঝে বাগানের প্রায় অর্ধেক অংশে সুপারি এবং বাকি অংশে আম গাছ লাগানো হয়েছে। মোসাম্বি গাছ নষ্ট হতে হতেই অন্য গাছ বড় হয়ে যাবে।  

ত্রিপুরা রাজ্যে অন্যান্য ফলের বাগান থাকলেও মোসাম্বি বাগান খুব বেশি নেই। এই বিষয়ে নেই চাষিদের খুব বেশি ধারণাও। তবে ধীরে ধীরে চাষিদের মধ্যে বিশেষ করে পাহাড়ি এলাকায় মোসাম্বি চাষের আগ্রহ বাড়ছে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২০
এসসিএন/এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।