ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পর্যটন

পর্যটনের অপার সম্ভাবনা হাইমচরের মেঘনার পাড়

মুহাম্মদ মাসুদ আলম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০২১
পর্যটনের অপার সম্ভাবনা হাইমচরের মেঘনার পাড় হাইমচরের মেঘনার পাড়। ছবি: বাংলানিউজ

চাঁদপুর: চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এর মধ্যে ৪ ইউনিয়ন মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড় অর্থাৎ চরাঞ্চল।

মেঘনার পূর্ব পাড়ে রয়েছে ৪ ইউনিয়ন। এর মধ্যে আলগী উত্তর ইউনিয়নের কাটাখালি থেকে দক্ষিণ ইউনিয়নের চরভাঙা গ্রাম পর্যন্ত মেঘনা নদীর পাড়টি পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য অনেক সম্ভাবনাময় স্থান। শুধুমাত্র একটি মেরিন ড্রাইভ, খাবার ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পারলে কর্মসংস্থান হবে বহু লোকের। বিনিয়োগের জন্য এগিয়ে আসবে বহু মানুষ। সরেজমিন ঘুরে ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে মেঘনার পাড়ে চরভাঙা নামক স্থানে ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে স্কাউটের বার্ষিক জাতীয় অনুষ্ঠান ‘কমডেকা’ যোগ দিতে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুর হোসেন পাটওয়ারী মেঘনার পাড়ে দুই কিলোমিটারের চেয়ে একটু বেশি সড়ক মেরিন ড্রাইভ আকারে ইট দিয়ে তৈরি করেন। তবে, গত তিন বছর বর্ষা মৌসুমে পানি বাড়ায় ও ঢেউয়ের কারণে ওই সড়কটি এখন বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। ওই সময় সড়ক তৈরি করে স্টিলের রেলিং তৈরি করে দেওয়ায় কিছু মানুষ ভ্রমণে আসতে শুরু করে। তখনই এই স্থানটি নজরে আসে ভ্রমণপিপাসুদের। চরভাঙা গ্রামের মেঘনার পাড়ে গিয়ে দেখা গেছে শাকিল নামে স্থানীয় এক যুবক নিজ উদ্যোগে বেশ কয়েকটি ছাতা ও চেয়ার দিয়ে বসার ব্যবস্থা করেছেন। সেখানে তিনি একটি চটপটির দোকান দিয়েছেন। বিকেল হলে স্থানীয় বিভিন্ন বয়সীর লোকজন এখানে আসেন ও সময় কাটান।  

স্থানীয় বাসিন্দা ফজলুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেঘনা পাড়ের চরভাঙা এলাকা সফর করার সময় প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হন এবং চরাঞ্চলকে অর্থনৈতিক জোন করার ঘোষণা দেন। অর্থনৈতিক অঞ্চল করার কাজ এগিয়ে চলছে। তবে, পর্যটন এলাকা করার জন্য এখন পর্যন্ত তেমন কোনো উদ্যোগের বিষয়ে আমরা জানতে পারিনি।

কাটাখালি এলাকার বাসিন্দা শোয়েব মিয়া ও আসলাম মিয়াজী বাংলানিউজকে বলেন, মেঘনা পাড়ের এই বৈচিত্রময় দৃশ্য যেকোনো মানুষের মন কাড়ে। দিনের বেলায় একরকম, বিকেলে সূর্যাস্তের সময় আরেক দৃশ্য ধারণ হয় মেঘনার পাড়ে। রাতের বেলা জোৎস্না থাকলে নদীর পাড় থেকে উঠে আসতেও মন চাইবে না পর্যটকদের।  তারা আরও বলেন, কাটাখালি থেকে চরভাঙা পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার। এই স্থানটিতে মেঘনা পাড়ে মেরিন ড্রাইভ করা হলে খুবই চমৎকার হবে। কারণ এসব এলাকায় প্রবেশ করার জন্য বহু সংযুক্ত সড়ক এখন পাকা হয়েছে এবং এখানে অনেক পানবরজ ও সুপারির বাগান রয়েছে। এসব দৃশ্যও খুবই মনোরম। সরকারি কিংবা বেসরকারি সংস্থা যারা এগিয়ে আসবে পর্যটন এলাকা গড়ে তোলার জন্য অবশ্যই লাভজনক হবে। একইসঙ্গে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নতিসহ অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে। উপজেলার মহজমপুর গ্রামের সমাজকর্মী মোহাম্মদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, মেঘনার পাড়ের মৎস্য আড়তগুলোতে বছরে কম-বেশি ইলিশসহ নদীর বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। পর্যটন এলাকা গড়ে তুললে আগত ভ্রমণপিপাসুরা তাজা মাছের স্বাদ নিতে পারবে। এখন শুধুমাত্র পরিকল্পনা করে এগিয় আসা প্রয়োজন।

হাইমচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুর হোসেন পাটওয়ারী বাংলানিউজকে বলেন, পর্যটন এলাকা করার পরিকল্পনা করেই আমরা প্রায় আড়াই কিলোমিটার সড়ক মেঘনার পাড়ে ইট দিয়ে পাকা করেছি। কিন্তু পানির স্রোত ও মেঘনার ঢেউ সড়কটি ভেঙে গেছে। পর্যটনকেন্দ্র করার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে এবং সে আলোকে কাজ করছি। মেঘনার পাড়ে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠলে দেশের যেকোনো স্থানের মানুষ এখানে এসে খুবই চমৎকার সময় কাটাতে পারবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০২১
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।