ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পর্যটন

বাস থেকে নেমেই দেখুন সুন্দরবন

শেখ তানজির আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০১৭
বাস থেকে নেমেই দেখুন সুন্দরবন নয়নাভিরাম সুরন্দরবন, ছবি: বাংলানিউজ

সাতক্ষীরা: প্রথমবারের মতো সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জে এসেছেন এনজিও কর্মী আতিকুর রহমান। সকালে বাস থেকে মুন্সীগঞ্জে নেমেই স্থানীয় এক দোকানদারের কাছে জানতে চান সুন্দরবন কতো দূর? দোকানদার মুচকি হেসে বলেন, ওই তো সুন্দরবন। শুনে বিস্মিত হন আতিকুর।

দু’পা হেটে সামনে গিয়ে চুনা নদীর ওপারে সুন্দরবন দেখে উচ্ছ্বসিত হন তিনি। বলেন, এখানে যে বাস থেকে নেমেই সুন্দরবন দেখা যায়! বিষয়টি তো আগে জানতাম না।

চোখ জুড়ানো সুন্দরবন, ছবি: বাংলানিউজ

তার মতো অনেকেই জানেন না মুন্সীগঞ্জে বাস থেকে নেমেই দেখা যায় সুন্দরবন। মুন্সীগঞ্জেই সুন্দরবনের গায়ে রয়েছে আকাশলীনা ইকো ট্যুরিজম সেন্টার, ক্যারাম মুরা ম্যানগ্রোভ ভিলেজ, কলাগাছিয়া ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার, বার ভূঁইয়াদের অন্যতম রাজা প্রতাপাদিত্যের রাজধানী শ্যামনগর, বংশীপুরের ঐতিহাসিক টেরাকাটা শাহী মসজিদ, ঈশ্বরীপুরের যশোরেশ্বরী কালীমন্দির, ঐতিহাসিক জে সুইট গির্জা, জমিদার হরিচরণের বাড়ি, হাম্মাম খানা, জাহাজঘাটা ও গোপালপুর মন্দির।

বাস থেকে নেমেই চোখে পড়বে সুন্দরবন, ছবি: বাংলানিউজ

শ্যামনগর আতরজান মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী বাংলানিউজকে বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শেষ জনপদ ‘শ্যামনগর’ ঐতিহ্যবাহী ও অত্যন্ত সমৃদ্ধ এলাকা। কিন্তু প্রচার-প্রচারণার অভাব ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় এ এলাকার পর্যটন শিল্প বিকাশ লাভ করেনি। অথচ, কক্সবাজার ও সিলেটের মতোই দক্ষিণ জনপদের শ্যামনগরেও পর্যটন কেন্দ্রীক অর্থনীতি বিকাশের সম্ভাবনা রয়েছে। পর্যটন শিল্প বিকাশের মাধ্যমে এ এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান করা সম্ভব।  

স্থানীয় বরসা রিসোর্ট অ্যান্ড ট্যুরিজমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম আনিছুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা গেলে সাতক্ষীরার শ্যামনগরই হতে পারে সুন্দরবনের প্রধান প্রবেশদ্বার। কেননা একমাত্র এ পথেই বাস থেকে নেমেই সুন্দরবন দেখা যায়।

সুন্দরবনের দৃশ্য, ছবি: বাংলানিউজ

যেভাবে আসবেন:


রাজধানীর শ্যামলী, কল্যাণপুর, গাবতলী ও মালিবাগ থেকে প্রতিদিন সকাল, দুপুর ও রাতে সাতক্ষীরার উদ্দেশে ছেড়ে আসে একাধিক চেয়ারকোচ ও এসি ও ননএসি বাস। প্রয়োজন ও পরিকল্পনা অনুযায়ী নামতে পারেন সাতক্ষীরা শহরে অথবা সরাসরি শ্যামনগরে। চেয়ারকোচে শ্যামনগর পর্যন্ত নন এসি বাসে ভাড়া পড়বে ৫৫০ টাকা। আর এসি কোচে সিট ভাড়া পড়বে এক হাজার থেকে তেরশ’ টাকা পর্যন্ত।

এছাড়া সকাল-বিকেল সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন কোম্পানির উড়োজাহাজে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত আসতে পারেন অল্প সময়েই। সেখান থেকে বাস অথবা মাইক্রোবাস বা প্রাইভেটকার ভাড়া করে সরাসরি শ্যামনগরের মুন্সীগঞ্জ আসতে পারবেন।

যেখানে থাকবেন:
একেবারে সুন্দরবনের কাছে থাকতে চাইলে অথবা ঘরে বসেই সুন্দরবন দেখতে চাইলে উঠতে পারেন মুন্সীগঞ্জের কলবাড়িতে অবস্থিত বর্ষা রিসোর্টে। সেখানেই থাকা-খাওয়ার সুবন্দোবস্ত আছে। এছাড়া সুন্দরবনের ভেতরে যেতে চাইলে বর্ষা ট্যুরিজমের ব্যবস্থাপনায় তাদের নিজস্ব লঞ্চ কিংবা ট্রলারে করতে পারবেন আনন্দ ভ্রমণ। প্রতিটি রুম ভাড়া ১৫০০ টাকা থে‌কে শুরু (ভ্যাট আলাদা)। যোগাযোগ: ০১৭৭১৪৫৪৫৯৬।

একই ভাবে আকাশলীনা ইকো-ট্যুরিজম থেকেও দেখতে পারবেন সুন্দরবন। আকাশলীনায় থাকার জায়গা নির্মাণ কাজ শেষের পথে। কয়েকদিনের মধ্যেই এখানে রুম ভাড়া দেওয়া শুরু হবে। যোগাযোগ: ০১৯১৬০৫৬১৭৬।

থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থা রয়েছে সুশীলনের টাইগার পয়েন্টেও। এখানে রুম ভাড়া পাওয়া যাবে ১৫০০ থে‌কে ৩২০০ টাকার মধ্যে। যোগাযোগ: ০১৭২৫৯২০৩০২।
 
শ্যামনগর সদরে থাকতে চাইলে উঠতে পারেন হোটেল ম্যানগ্রোভ প্যারাডাইসেও। এখানে রুম ভাড়া ৫০০ থে‌কে ২২০০ টাকার মধ্যে।   যোগাযোগ: ০১৭৭২২৮১৩১৮।

বাংলাদেশ সময়: ০৫০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৭
এসআই

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।