ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পর্যটন

পাতায়া-বালির আদলে কুয়াকাটায় ইকো-ট্যুরিজম

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৭ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০১৭
পাতায়া-বালির আদলে কুয়াকাটায় ইকো-ট্যুরিজম কুয়াকাটায় সূর্যাস্ত/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: তীরের একই জায়গায় দাঁড়িয়ে স‍ূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার অপূর্ব সুযোগের একমাত্র সৈকত এটি। প্রায় ১৮ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত এ সমুদ্রসৈকত ঘিরে এবার গড়ে উঠছে ইকো-ট্যুরিজম। থাইল্যান্ডের পাতায়‍া, ফুকেট, ইন্দোনেশিয়ার বালি ও মালয়েশিয়ার লাঙ্কাউয়ের আদলে একটি পরিকল্পিত পর্যটন স্পট হতে যাচ্ছে সমুদ্রকন্যা কুয়াকাটা।

বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ সৈকত লাগোয়া দীর্ঘ নারিকেল গাছের সারি, লাল কাঁকড়ার ছোটাছুটি, সমুদ্রের গর্জন পর্যটকদের মন ছুঁয়ে যায়। তবে পর্যটকবান্ধব তেমন কোনো অবকাঠামো গড়ে ওঠেনি এখানে।

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ঘিরে দক্ষিণাঞ্চলের বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া, আমতলী, তালতলী, পাথরঘাটা ও রাঙ্গাবালি উপজেলা জুড়ে ইকো-ট্যুরিজম গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে নগর উন্নয়ন অধিদফতর।

কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত/ছবি: বাংলানিউজপাশাপাশি ভিয়েতনামেরও কিছু স্পট এখানে যুক্ত হতে পারে। সব মিলিয়ে এশিয়ার ট্যুরিজম এলাকাগুলোকে এই মহাপরিকল্পনায় স্থান দেওয়া হবে। কুয়াকাটা অঞ্চলের মাটি, পানি, বায়ু ও পরিপার্শ্বিক অবস্থা ঠিক রেখেই গড়ে উঠবে ইকো-ট্যুরিজম।

নগর উন্নয়ন অধিদফতর সূত্র জানায়, কুয়াকাটা উপকূলীয় অঞ্চলে পর্যটন শিল্পের বিকাশ, ভূমির সর্বোত্তম ব্যবহার ও ভূমি ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের জন্য কাঠামোগত নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। কুয়াকাটা উপকূলীয় অঞ্চলের গ্রোথ সেন্টার উন্নয়নে নীতিমালা ও পরিকল্পনাও নেওয়া হবে বড় পরিসরে।

কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত/ছবি: বাংলানিউজএ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে নগর উন্নয়ন অধিদফতরের পরিচালক ড. খুরশীদ জাবিন হোসেন তৌফিক বাংলানিউজকে বলেন, আমরা একটি পরিকল্পিত পর্যটন এলাকা গড়তে চাই কুয়াকাটা ঘিরে। এখানের মাটি, বায়ু, পানি ও পরিবেশকে প্রাধান্য দিয়ে ইকো-ট্যুরিজম গড়বো। পাতায়া-বালির আদলে গড়ে উঠবে স্পটগুলো। আমরা দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন ট্যুরিস্ট স্পট ঘুরে দেখেছি। কুয়াকাটার সঙ্গে যেটা সামঞ্জস্য মনে হয়েছে সেটিকেই প্রাধান্য দিচ্ছি। তবে প্রাথমিকভাবে পাতায়া-বালিকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। তবে এটি গড়তে সময় লাগবে।

বর্তমানে কাঠামোগত কোনো নীতিমালা না থাকায় অপরিকল্পিতভাবে স্থাপনা গড়ে উঠে কুয়াকাটা সৈকতের পরিবেশ হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার দিক দিয়েও পিছিয়ে কুয়াকাটা। তাই পরিবেশের সঙ্গে ভারসাম্য রেখে ‘প্রিপারেশন অব ইকো-ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান ফর কুয়াকাটা কোস্টাল রিজিয়ন’ প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছে সরকার। প্রাথমিকভাবে প্রায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে এতে।

কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত/ছবি: বাংলানিউজকুয়াকাটা ঘিরে মহাপরিকল্পনার মধ্যে থাকবে বৃহত্তম কুয়াকাটা অঞ্চলের প্রস্তাবিত আঞ্চলিক কাঠামোর আওতায় পরিবেশ নির্ভর পর্যটন পরিকল্পনা। এর অধীনে থাকবে স্ট্রাকচার, আরবান এরিয়া, রুরাল এরিয়া, অ্যাকশন প্ল্যানসহ এনভায়রনমেন্টাল কনজারভেশন প্ল্যান।

পাশাপাশি  এনভায়রনমেন্টাল ম্যানেজমেন্ট, ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট, সোশ্যাল স্পেস, ফুড গ্রেইন ম্যানেজমেন্ট,  এনার্জি ম্যানেজমেন্ট, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট, ইনিস্টিটিউশনাল ডেভলপমেন্ট এবং ফিন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান করা হবে। বালি-পাতায়ার আদলে কুয়াকাটা গড়তে সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে নগর উন্নয়ন অধিদফতর।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০১৭
এমআইএস/এএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।