ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

আজ তারাবিতে পরনিন্দাকারীদের প্রতি নিন্দা জানানো হবে

মুফতি মাহফূযুল হক, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০১৬
আজ তারাবিতে পরনিন্দাকারীদের প্রতি নিন্দা জানানো হবে

পরনিন্দা করা, মানুষের দোষ চর্চা করা একটি জঘন্য নিন্দনীয় স্বভাব। আজকের ২৬তম খতমে তারাবিতে এ মন্দ স্বভাবের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করা হবে।

এ বিষয়ে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘এবং অনুরণ করো না তার ... যে মানুষের পেছনে তার দোষ বলে। ’ -সূরা কলম: ১১

কোরআনে কারিমে আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘একে অপরের পেছনে তার নিন্দা করো না। তোমাদের মধ্যে কেউ কি তার মরা ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করে? বস্তুত তোমরা একে ঘৃণা কর। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। আল্লাহ তওবা গ্রহণকারী, পরম দয়ালু। -সূরা হুজরাত: ১২

‘দুর্ভোগ এমন প্রত্যেকের, যে পেছনে বা সামনে লোকের নিন্দা করে। -সূরা হুমাজা: ১

কারো নিন্দা করাকে, দোষ চর্চা করাকে আরবিতে বলা হয় গিবত। সূরা হুজরাতে এ শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। একদা জনৈক সাহাবা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট জিজ্ঞাসা করলেন, গিবত কাকে বলে? উত্তরে মহানবী (সা.) বললেন, কারো সম্পর্কে এমন কোনো কথা বলাকে গিবত বলে; যা সে অপছন্দ করে। প্রশ্নকারী আবার জিজ্ঞাসা করল, যদি সত্যিই তার ভেতরে ওই দোষ থাকে তাহলেও কি তা বললে গিবত হবে? উত্তরে মহানবী (সা.) বললেন, মানুষের ভেতরে যে দোষ আছে, তা বলার নামই তো গিবত। আর যে দোষ নেই তা যদি বল তবে তো তুমি তার ওপর অপবাদ দিলে। -সুনানে আবু দাউদ: ৪৮৭৬

মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা কোনো মুসলমানের গিবত করো না। কোনো মুসলমানের গোপনীয় দোষ অনুসন্ধান করো না। যে ব্যক্তি অন্যের গোপন দোষ বের করবে আল্লাহও তার গোপন দোষ বের করবেন। আর আল্লাহ যার দোষ বের করবেন তাকে নিজের ঘরে রেখেই বেইজ্জত করবেন। ’ –সুনানে আবু দাউদ: ৪৮৮২

‘যে ব্যক্তি অন্যের খাওয়ার ধরণ নিয়ে টিটকারি করবে আল্লাহ তাকে জাহান্নামে সেভাবে খাওয়াবেন। যে ব্যক্তি অন্যের পোশাক পরিধানের ধরণ নিয়ে টিটকারি করবে আল্লাহ তাকে জাহান্নামে সেভাবে পোশাক পরাবেন। ’ –সুনানে আবু দাউদ: ৪৮৮৩

কারো দোষ বলা শুধু গিবত নয়। বরং মানুষকে হাঁসানোর জন্য অন্যের চলাফেরা, উঠাবসা, নড়চড়ার অভিনয় করাও গিবতের অন্তর্ভূক্ত। এমনি কারো নিন্দা করার জন্য তার দৈহিক গড়নের ত্রুটি বর্ণনা করা বা ত্রুটির দিকে ইঙ্গিত করাও গিবত।

গিবতের সবচেয়ে বড় ক্ষতি হলো- যার গিবত করা হবে হাশরে মাঠে তাকে নিজের নেক আমলের সওয়াবগুলো দিয়ে দিতে হবে। যদিও এতেও তার ক্ষতি পোষে না যায়, তবে তার গুনাহগুলো নিজের আমলনামায় নিয়ে নিতে হবে। স্থান, কাল, পাত্র, পরিবেশের মর্যাদা অনেক গুনাহ থেকে মানুষকে বিরত রাখতে পারে। অনেক গুনাহ আছে যা কোনো মুসলমানের পক্ষে মসজিদে করা সম্ভব নয়। মানুষ হজের সফরে অনেক ধরণের গুনাহ থেকে বিরত থাকে। জিকিরের মজলিসে, ওয়াজের মজলিসে মানুষ অনেক গুনাহ থেকে সহজেই বিরত থাকে। কিন্তু গিবত এমন এক গুনাহ স্থান, কাল, পাত্র, পরিবেশর মর্যাদা মানুষকে এ গুনাহ থেকে নিবৃত্ত করতে পারে না। তাই গিবত অতি ভয়ংকর একটি কবিরা গুনাহ। এর থেকে বেঁচে থাকা দরকার।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০১৬
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।