ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

যে কোরআন অনুসরণ করবে তার কোনো ভয় নেই: মাওলানা নূর আহমাদ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৯ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৬
যে কোরআন অনুসরণ করবে তার কোনো ভয় নেই: মাওলানা নূর আহমাদ ছবি: অনিক খান - বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ময়মনসিংহ: পবিত্র রমজান মাসের আমল ও তাৎপর্য নিয়ে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন ময়মনসিংহ নগরীর সানকিপাড়া নতুন জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা নূর আহমাদকাতলাসেন কাদেরিয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে হাদিস বিভাগে কামিল (এমএ) পাস করেন তিনি।

তার সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলানিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট এম আব্দুল্লাহ আল মামুন খান। সেই আলাপচারিতা পাঠকের জন্য-

মাওলানা নূর আহমাদ বলেন, ‘রোজার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে তাকওয়া অর্জন করা। বান্দা যদি তাকওয়া অর্জন করতে পারে এবং এ তাকওয়ার ওপর যদি সে প্রতিষ্ঠিত থাকে তার প্রতিটি নেক কাজ আল্লাহপাকের কাজের ধর্তব্য হবে। ’

আল্লাহর ওপর বিশ্বাস-ভয়ই হচ্ছে তাকওয়া জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথম তাকওয়া জিহ্বার সঙ্গে সম্পৃক্ত। জিহ্বা দিয়ে গীবত করলে রোজা হবে না। তাই জিহ্বাকে সংযত রাখতে হবে। এ জিহ্বা দিয়ে আল্লাহপাকের জিকির বেশি বেশি করতে হবে।

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সবচেয়ে উৎকৃষ্ট জিকির হচ্ছে ‘লা ইলাহা ইল্লাহা’। আর সবচেয়ে উত্তম দোয়া হচ্ছে ‘আলহামদুলিল্লাহ। ’

নফল রোজার ফজিলত সম্পর্কে বলেন, রাসূলে কারিম (সা.) বলেছেন, ‘একটি ছোট্ট একটি কাকের বাচ্চা উড়তে উড়তে বৃদ্ধে পরিণত হয়ে যাবে। এ অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করবে। যত দূর গিয়ে সে মৃত্যুবরণ করবে এ রোজাদার ব্যক্তি ও দোজখ এতটুকু ফারাক থাকবে। ’ এটা একটি নফল রোজার ফজিলত। ’

রোজাদারদের জন্য পুরস্কার হচ্ছে জান্নাত, জানিয়ে এ আলেম বলেন, ‘হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ বলেছেন, ‘রোজাদারের পুরস্কার আমি আল্লাহ নিজ হাতে দেবো। ’

আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘এ রোজার মাসকে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ভাগ রহমতের। এ সময় ‘আল্লাহুম্মা মাগফির ওয়ারহাম ওয়া আন্তা খায়রুর রাহিমিন’- বেশি বেশি পড়তে হবে বলে জানান মাওলানা নূর আহমাদ।

তিনি বলেন, মাগফেরাতের ১০ দিন ‘আস্তাগফিরুল্লাহা রাব্বি মিনকুল্লি জামবিউ ওয়া আতুবু ইলাইহি, ওয়ালা হাউলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম’ পড়তে হবে।

নাজাতের শেষের ১০ দিন পড়তে হবে- ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুব্বুন, তুহিব্বুল আফওয়া; ফা’আফু আন্না ইয়া কারিম। ’

এ দোয়া আল্লাহর রাসূল (সা.) তার সহধর্মিণী হজরত আয়েশাকে (রা.) শিক্ষা দিয়েছিলেন। এ দোয়ার অর্থ হচ্ছে, ‘হে আল্লাহ! তুমি ক্ষমাশীল। তুমি ক্ষমাকে পছন্দ করো। সুতরাং তুমি আমাদের মাফ করে দাও। ’

মাওলানা নূর আহমাদ বলেন, ‘রোজার এতো ফজিলতের কারণ এ মাসে কোরআন নাজিল হয়েছে। এ কোরআন হচ্ছে মানুষের সংবিধান।

এ কোরআন যে অনুসরণ করবে তার কোনো ভয় নেই, চিন্তাও নেই। কোরআন নাজিলের কারণে এ মাসের মর্যাদা অনেক বেড়ে গেছে। ’

রমজানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কীভাবে বাস্তবায়িত হবে এ সম্পর্কে তিনি বলেন, যখন সবাই আল কোরআনকে আঁকড়ে ধরবো।

আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘আমি এ কিতাবকে নাজিল করেছি মানুষদের অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে আসার জন্য। ’

রোজা ও আল কোরআন ওপপ্রোতভাবে জড়িত জানিয়ে এ পেশ ইমাম বলেন, রোজাদারের জন্য আল কোরআন সুপারিশ করবে। এভাবে আল্লাহ এ মাসের প্রতিটি ওয়াক্ত, ইফতার, সেহরির সময় দোয়া কবুল করে থাকেন।

প্রতি রাতে আল্লাহ তার অগনিত গোনাহগার বান্দাকে ক্ষমা করে থাকেন। আল্লাহর রাসূল বলেছেন, একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করতে থাকে ‘হে নেকী অন্বেষণকারী! তুমি আরো অগ্রসর হও। আর হে দুষ্কৃতিকারী তুমি নিবৃত্ত হও। তুমি থাম। এ মাসে পূণ্যের কাজের দিকে মনোনিবেশ করো। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৭ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৬
এমএএএম/এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।