ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

সোনামনিদের রোজা পালন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৬ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০১৬
সোনামনিদের রোজা পালন

বড়দের মতো ছোটদেরও থাকে স্বপ্ন-আশা। থাকে মন ভরা ভালোবাসা আর বুক ভরা আনন্দ-উচ্ছ্বাস।

কিন্তু তারা এগুলো সুন্দরভাবে প্রকাশ করতে পারে না। আর তাই তাদের এ প্রকাশভঙ্গির রূপ হয় অবুঝ মনের অবুঝ হাসি আর আনন্দটাই। যখন সন্তান আরেকটু বড় হয় তখন সে বুঝে কে মা আর কে বাবা। সাত বছর বা তার চেয়ে একটু বাড়লে বা বুঝতে সক্ষম হলে সে তখন ভালো-খারাপ জিনিসও মোটামুটি অনুমান করতে পারে। এ জন্য বড়দের দেখে দেখে ছোটরা অনেক সময় বড়দেরকৃত কাজ নিজেরা করতে চেষ্টা করে।

বড়রা যা করে তাকেই তারা ভালো হিসেবে ধরে নেয়। বড়রা নামাজ পড়লে সেটাকে আদায় করতে তারাও (ওঠা-বসার মাধ্যমে) চেষ্টা করে। এমনকি মসজিদেও নিয়ে যেতে বায়না ধরে। তদ্রুপ রমজান এলে রোজা রাখার ক্ষেত্রেও তারা উৎসাহী হয়ে ওঠে। শত বারণেও তাদের সে আবেগ রোখা যায় না। বাবা-মায়ের আদরের এসব ধন-রত্ন এমনটি করলে এক দিকে যেমন অভিভাবকদের মনে আনন্দ শিহরণ খেলে যায়। আল্লাহর বিধান বাস্তবায়নে একটি কোমল হৃদয় উৎসাহী হলে সেটি বাবা-মায়ের গর্বের বিষয় ছোটকাল থেকে রোজা থাকায় চেষ্টা করা। তাহলে যখন তারা প্রাপ্তবয়স্ক হবে তখন রোজার প্রতি কোনো অবহেলা সৃষ্টি হবে না। এ জন্য প্রত্যেক সন্তানের জীবনের শুরুর দিককে ধর্মীয় কৃষ্টি-কালচার এবং উৎসাহ-উদ্দীপনা দিয়ে বেষ্টন করে রাখা বাঞ্ছনীয়। কারণ আজকের শিশু আগামী দিনের কর্ণধার।

দুঃখের বিষয় আজ আমাদের সমাজের দিকে তাকালে দেখা যায়, অনেক প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে সন্তানই মাহে রমজান এলে রোজার প্রতি চরমভাবে গাফেল হয়ে যায়। বলতে দ্বিধা নেই যে, এরাই এক সময় জ্ঞানবুদ্ধিসম্পন্ন হয়ে রোজার দিনে বাজার বা রাস্তায় অবস্থিত রেস্টুরেন্টগুলোতে লাল পর্দার অভ্যন্তরকে ভরপুর রাখে। বাবা-মা যদি রোজা রাখে তারা কেন রাখতে পারল না! সেহরির সময় যে সন্তান ঘরে থাকে, বাবা-মায়ের উচিত তাকে ঘুম থেকে আদর এবং যতেœর সাথে সেহরির জন্য জাগানো। আর ছেলেসন্তান আগে জাগলে বাবা-মাকে ঘুম থেকে জাগানোর ক্ষেত্রে তাদেরও ভূমিকা থাকতে হবে। এতে বাবা-মা ও ছেলেসন্তানের মধ্যে এক অদৃশ্য মহব্বত ও ভালোবাসা সৃষ্টি হয়। সন্তান কষ্ট পাবে এমন ভেবে যদি কোনো বাবা-মা নিজ সন্তানকে রোজা রাখাতে অভ্যস্ত না করে তবে এতে কোনো সন্দেহ নেই যে তাদের ওপর এই সুযোগ প্রদানটাই একসময় চরম অবিচার হিসেবে সাব্যস্ত হবে। কারণ এই ঘুম এবং এই অলসতার জন্য আল্লাহর বিধান থেকে বিমুখ থাকার কারণে বাবা মা-ই মূলত দায়ী থাকবেন।

এ জন্য আমাদের মতো আমাদের ছেলেসন্তানও যেন মাহে রমজানের বরকত থেকে মাহরুম না হয়। সমাজের ঘরে ঘরে অবস্থিত অনাগত দিনের প্রতিটি শিশুরা হয়ে উঠুক আগামী দিনের মুক্তি ও কল্যাণের দিশারি। মা-বাবার আল্লাহভীতি ছড়িয়ে যাক গৃহের প্রতিটি হৃদয়ে। আসুন আমরাসহ বাড়ির ছোটদের, আমাদের সন্তানদেরকে সিয়াম পালনে উদ্বুদ্ধ করি।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১৬
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।