ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

গুলশানের অভিজাত ইফতার বাজার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২৩
গুলশানের অভিজাত ইফতার বাজার

ঢাকা: রমজান মানেই হরেক রকমের ইফতার সাজিয়ে বিকেল থেকে অপেক্ষায় থাকা হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো। সে দৃশ্যের আরও সুন্দর দেখা মেলে রাজধানীর গুলশানে।

এ এলাকার অভিজাত ইফতার বাজার সবারই আগ্রহের শীর্ষে থাকে।

শুক্রবার (৩১ মার্চ) গুলশানের বেশ কিছু রেস্তোরাঁ ঘুরে দেখা গেছে একই চিত্র। গুলশান এলাকায় ইফতারের ঐতিহ্যের কারণে প্রতিদিন ইফতার কিনতে বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁয় কাস্টমারদের ভিড় থাকে। নানা আয়োজনের এমন সব আইটেম পেয়ে আকৃষ্ট হয় ক্রেতারাও। আর বিভিন্ন পাঁচতারকা হোটেলগুলোও তাদের ইফতার আইটেমে আনে বাহারি সাজ।

গুলশানে ইফতারি নানা আইটেমে কিনতে ভিড় থাকে ফখরুদ্দিনে। পুরান ঢাকার নানা ঐতিহ্যের ইফতারি আইটেম রাখা আছে সেখানে। মূলত ক্রেতাদের আকর্ষণের জায়গা সেখানেই। দুপুরের পর থেকেই এ দোকানটিতে আসেন অনেকেই। কথা হয় রেস্টুরেন্টটির ম্যানেজার রেজাউল করিম সঙ্গে। তিনি বলেন, বিক্রি কিছুটা কম এ বছর। তবে আশা করা যাচ্ছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিক্রি আরও বাড়বে।

রেজাউল করিম জানান, ফখরুদ্দিনের গরুর চাপ ও রেজালা গত বছর প্রতি কেজি ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ বছর সেটা ১ হাজার ৪০০ টাকা। খাসির আইটেমের দাম প্রতি কেজিতে ১০০ টাকা বেড়েছে। বাজারে মাংসের দাম বাড়ায় খরচ এর চেয়েও বেশি হারে বেড়েছে। কিন্তু মানুষের ক্রয় ক্ষমতার কথা চিন্তা করে সে তুলনায় দাম কমই বাড়ানো হয়েছে।

ফখরুদ্দিনে ইফতারে পাওয়া যাচ্ছে গরু-খাসির হালিম, গরু-খাসির চাপ, রেজালা, খাসির লেগ রোস্ট, কাবাব, চিকেন ফ্রাইসহ নানা আইটেম। রয়েছে কয়েকটি প্যাকেজও। এর মধ্যে দশজন খাওয়া যায় এমন একটি বিরিয়ানির প্যাকেজ ‘বিরিয়ানির ডালা’। এর দাম চার হাজার টাকা। আবার নানা ধরনের কাবাব ও ইফতার নিয়ে রয়েছে পাঁচ হাজার টাকার ইফতারের ডালা। আবার খুব সাধারণ মানের ১২০ টাকার মধ্যে ইফতারের প্যাকেজও রয়েছে। মাঝারি হালিম ৬০০ টাকা ও বড় হালিম ৮০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে এবার। গরুর চাপ ও রেজালা প্রতি কেজি ১ হাজার ৪০০ টাকা এবং গরুর কালাভুনা ১ হাজার ৫০০ টাকা। খাসির চাপ, রেজালা ও কোরমা ১ হাজার ৬০০ টাকা, খাসির লেগ রোস্ট প্রতি পিস ১ হাজার ৬০০ টাকা। এছাড়া জালি কাবাব, মুঠিয়া কাবাব, টিকিয়া কাবাব, চিকেন রোল, চিকেন ললি, চিকেন ফ্রই, ফিস ফিঙ্গার বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৬০ টাকা দরে। পেঁয়াজু, বেগুনি ও চপের দাম প্রতি পিস ১০ টাকা।

শুলশানের এক নম্বর চত্বরের গুলশান কুইজ এবার দুটি ইফতারের সেট মেনু সাজিয়েছে। গুলশানের অভিজাত রেস্তোরাঁ গ্লোরিয়া জিন্সে ১৪৫ জন বসে ইফতারের ব্যবস্থা রয়েছে। তাদের সেট মেনু ‘ইফতার প্লাটার’ এ ১৫টি খাবারের আইটেম রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁ তাদের নিজেদের মতো করে সাজিয়েছে ইফতারসামগ্রী। আর ৯০০০ টাকায় পাঁচ তারকা হোটেলে ২৫০ আইটেমের ইফতার দিচ্ছে গুলশানের রেনেসাঁ হোটেল।

প্রচলিত ইফতারসামগ্রীর সঙ্গে বিশেষ কয়েকটি পদ, বিভিন্ন অফারসহ ইফতার বক্স মিলবে এ এলাকার ইফতার বাজারে। কোথাও কোথাও কিছুটা বেশি দামে মিলছে পুরান ঢাকার শাহী জিলাপি, হালিম, কাচ্চি বিরিয়ানি ইত্যাদি। এছাড়া এ এলাকায় ইফতারে মিলছে নানা রকমের ফাস্টফুড আইটেম। ইফতার মেনুতে রয়েছে চাইনিজের কিছু আইটেমও।

এবারের রমজান মাসে জাফরানি জিলাপি ও মিহিদানা রাবড়িসহ ইফতারসামগ্রীর বিশাল আয়োজন করেছে মিষ্টির বাজারের বিখ্যাত নাম খাজানা মিঠাই। রমজান মাসের প্রথম দিন থেকেই হরেক রকমের আয়োজন তাদের।

খাজানা মিঠাইয়ের হেড অব ব্র্যান্ড অ্যান্ড মার্কেটিং মো. ইমরানুল হাসান বলেন, রমজান মাসকে কেন্দ্র করে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে নানা ধরনের মুখরোচক ইফতার আয়োজন জমে ওঠে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রতি বছর খাজানা মিঠাই ও খাজানা রেস্টুরেন্ট আয়োজন করে থাকে তাদের ইফতার আয়োজন। বিশেষ করে জিলাপি, মতিচুর লাড্ডু, মিহিদানা রাবড়ি, কাজু বরফি, গুলাব জামুন, গাজরের পায়েস, লাচ্ছা সেমাই, শন পাপড়ি ও রসমালাইয়ের জন্য খাজানা মিঠাই খুবই জনপ্রিয়।

এ এলাকায় ইফতারি কিনতে আসা ক্রেতা মুহাইমিন হক বলেন, পুরান ঢাকার চকবাজারে যেতে পারি না। এখানে আসি ইফতারি কিনতে। সেই স্বাদ ও মজা পাই। সঙ্গে এখানে গুণগতমান ঠিক পাই। আর গুলশানের ইফতারের নিজস্ব ঐতিহ্যও তো অনেক। বিশেষ করে এ এলাকায় হোটেল-রেস্তোরাঁ অনেক বেশি থাকায় এখানকার সব ইফতারই নিত্যনতুন রঙের এবং মজাদার।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২৩
এইচএমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।